ফেনীতে কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় পুলিশ সদস্য কারাগারে

ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনীর ফুলগাজীতে বিয়ের কথা বলে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম তৌহিদুল ইসলাম ওরফে শাওন। তিনি একজন পুলিশ কনস্টেবল। তিনি রাঙামাটির শালবাগান পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। তাঁকে আজ শুক্রবার রাঙামাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ফেনীর আদালতে হাজির করা হয়।

ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার ফেনীর ফুলগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। চার আসামি হলেন ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার তৌহিদুল ইসলাম ওরফে শাওন, তাঁর বাবা আমিনুল ইসলাম, মা শানু ও মামা ফিরোজ আহম্মদ বাবু।

গত বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে ২২ ধারায় বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ, ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে কন্যাসন্তানের জন্ম, নবজাতককে গোপনে অন্যত্র দত্তক এবং বর্তমানে পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানোর নানা ঘটনার বর্ণনা দেয়। ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বর্তমানে তার বয়স ১৫ বছর ৪ মাস বলে উল্লেখ করা হয়।

আদালত, পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, তৌহিদুলের মামার বাড়ি এবং ওই কিশোরীর বাবার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় তাঁদের মধ্যে পরিচয় ছিল। তৌহিদুল বেড়ানোর কথা বলে কিশোরীকে ফেনী শহরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পরে আরও কয়েকবার কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। ১১ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরী ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তৌহিদুলের মামা ফিরোজ আহম্মদ চাপে ফেলে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নবজাতক মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিয়েছেন। প্রথমে কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে এর সমাধান করার কথা বললেও পরে তা অস্বীকার করে কিশোরীর পরিবারকে গ্রামে ‘একঘরে’ করে রাখার পরিকল্পনা করেন।

ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের বিরুদ্ধে মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় সব ঘটনার বর্ণনা করেছে। আজ প্রধান আসামি তৌহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাংলারদর্পণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *