শিবগঞ্জে রবিশস্য চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা | বাংলারদর্পণ

মিজানুর রহমান, শিবগঞ্জ (বগুড়া) :
বগুড়া জেলার খাদ্যশস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত শিবগঞ্জ উপজেলার মাঠগুলো এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে রেকর্ড পরিমান জমিতে রবিশস্য চাষ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠগুলোতে রবিশস্য চাষে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। এলাকার আবাদী জমি থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকরা পুরোদমে রবিশস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছে। এবার আমনের বাম্পার ফলন এবং ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক বেশ খুশি। বেশি লাভের আশায় ব্যাপক হারে রবিশষ্য চাষে জমিতে বাড়তি সময় পার করছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার পাঁচ’শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। হিসাব মতে, শিবগঞ্জ পৌরসভায় ৫’শ হেক্টর, বিহার ইউনিয়নে ৯২০ হেক্টর, রায়নগর ১১’শ সত্তর হেক্টর, পীরব ১৪২০ হেক্টর, দেউলী ১ হাজার ৫২০ হেক্টর, মাঝিহট্ট ১ হাজার ৬২০ হেক্টর, শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ১ হাজার ৮৩০ হেক্টর, কিচক ১ হাজার ৮০৫ হেক্টর, সৈয়দপুর ১ হাজার ৬০৫ হেক্টর, বুড়িগঞ্জ ১ হাজার ৩৪০ হেক্টর,

মোকামতলা ১ হাজার ২০ হেক্টর, আটমুল ১ হাজার ৮৭০ হেক্টর, ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে ১ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে আলু। পাশাপাশি অন্যান্য রবিশস্য মধ্যে উপজেলায় ফুলকপি ৩’শ হেক্টর, বাধাকপি ২’শ ৫০ হেক্টর, মুলা ৫’শ হেক্টর সরিষা ৬’শ ৫০ হেক্টর, গম ৮০ হেক্টর, ভূট্টা ২০০ হেক্টর, পেঁয়াজ ৩০০ হেক্টর, টমেটো ১০ হেক্টর, বেগুন ২০০ হেক্টর, সিম ১০ হেক্টর এবং বরবটি ৫ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলার কৃষকরা কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছে আবার কেউ বীজ রোপন করছে। একদল আবার বেড়ে ওঠা বিভিন্ন সবজী গাছের পরিচর্যাসহ পোকা- মাকড়ের আক্রমণ হয়েছে কি না পরীক্ষা করছেন, কেহ আক্রান্ত গাছে প্রতিষেধক প্রয়োগ করছেন।

আমন ধান উঠার সাথে সাথে এভাবেই আবাদি মাঠে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন চাষিরা। তারা আলু, বেগুন, মুলা,ফুলকপি বাধাকপিসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষ করতে জমিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও পোকা-মাকরের আক্রমণ কম হলে এবারও রবিশস্য চাষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলনের আশা করছেন উপজেলার কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

উপজেলার গুজিয়া গ্রামের কৃষক মোত্তালীব আকন্দ বলেন, আমাদের এলাকায় প্রচুর পরিমান জমিতে আলুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। সে অনুযায়ী এবারেও আমরা ব্যাপকহারে আলুচাষ করেছি। আলু উঠিয়ে আবার ওই জমিতেই ভূট্টাচাষ করবো। এতে করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। আমি ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি।

কৃষি অফিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পরিচর্যাও করছি। যদি বীজ ব্যবসায়ীরা প্রতারণা না করে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে আমি বাম্পার ফলনের আশা করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আল মোজাহিদ সরকার বলেন, আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ প্রতিনিয়িত কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন। এছাড়াও অল্প খরচে বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছেন। তাই আশা করা যায় এবার এলাকায় রবিশস্যের বাম্পার ফলন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *