সুবর্ণচরে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে নির্যাতন করে তালাক দেওয়ার অভিযোগ

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী :

নোয়াখালী সুবর্ণচরে এক আত্নঃসত্বা গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে, বর্তমানে শ্বশুর বাড়ীতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ঐ গৃহবধূ, এলাকার ইউপি সদস্য এবং লোকাল থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ গৃহবধূর জীবন এখন হুমকির মুখে।

ঘটনাটি ঘটে সুবর্ণচর উপজেলার ৫ নং চরজুবিলী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের চরজব্বর গ্রামে।

নির্যাতিত গৃহবধূর অভিযোগ এবং এলাবাসীর কাছ থেকে জানাযায় গত ১৯ আগষ্ঠ ২০১৭ সালে চরজব্বার গ্রামের আলা উদ্দিনের পুত্র গিয়াস উদ্দিনের সাথে লক্ষীপুর জেলার চর রমিজ গ্রামের হারুনের কণ্যা লিপি আক্তারের বিয়ে হয়।

বিয়ের কিছুদিন পরেই যৌতুকের দাবীতে শুরু হয় গৃহবধূর ওপর অমানুষিক নির্যাতন নিপিড়ন। দেড় বছর পর তাদের ঘরে একটি সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে লিপি আক্তার ৭ মাসের আত্বঃস্বত্বা।
গত ৩মাস আগে লিপি জানতে পারেন গিয়াস উদ্দিন অন্যত্র বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবিষয়ে লিপি প্রতিবাদ করলে আবারো লিপিকে স্বামী গিয়াস উদ্দিন এবং শ্বশুর আলা উদ্দিন একাধিকবার নির্যাতন করে। সম্প্রতি গিয়াস উদ্দিন লিপিকে না জানিয়ে তাকে তালাক দিয়ে দেয়।

এবিষয়ে লিপি আক্তার বাদী হয়ে চরজব্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন বলে দাবী করেন।
এলাকাবাসী বলেন গিয়াস উদ্দিন এর আগে আরো ৩ টি বিয়ে করেছে বর্তমানে আরেকটি বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা আরো বলেন প্রায় সময় আমরা দেখি শ্বশুর আলা উদ্দিন গৃহবধূ লিপিকে যৌতুকের জন্য মারধর করেন।

গৃহবধূ লিপি বেগম বলেন, বিয়ের পর গিয়াস উদ্দিন ব্যাবসা করবে বলে আমার বাবার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নেয়, কিন্তু কোন ব্যবসার কাজে লাগাইনি। তারা শুরু থেকেই তারা আমাদের সাথে প্রতারনা করে আসছে, গিয়াস উদ্দিন এর আগেও আরো ৩ টি বিয়ে করেছে সেটা আমাদের জানানো হয়। আমি বিয়ের পর জানতে পেরেও সব মেনে নিয়েছি। গিয়াস উদ্দিন বাড়ীতে না থাকলে আমার শ্বশুর আমাকে নানা রকম কুপ্রস্তাব দেয় তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়া সে গিয়াস উদ্দিনকে অন্যত্র বিয়ে করার পায়তারা করছে এবং যৌতুকের দাবীতে প্রায় মারধর করে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে আমার শ্বশুর আলা উদ্দিন এবং স্থানীয় মেম্বার খলিল মাঝির ইন্ধনে আমাকে তালাক দেন, আমি এর প্রতিবাদ করলে স্থানীয় মেম্বার এবং আমার শ্বশুর মিলে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। আমার স্বামীকে তারা লুকিয়ে রেখে আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে।

আমি এখন ৭মাসের গর্ভবতী এ অবস্থায় আমি কোথায় যাবো? আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলা উদ্দিন তার ছেলে গিয়াস উদ্দিনকে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে, কিছুদিন পর পর ছেলেকে বিয়ে করিয়ে মেয়েদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়, সে টাকা শেষ হলে গেলে আবারো টাকার চাপ দিতেতে থাকে, না দিতে পারলে মেয়ের নামে বদনাম ছড়িয়ে তাকে বিদায় করে কিছুদিন পর আবার বিয়ে করে। এ নিয়ে সে ৪ টা বিয়ে করেছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার খলিল মাঝি বলেন, ছেলের বাবা অত্যান্ত খারাপ সে আমাদের কথা শুনেনা, মেয়েটাকে নির্যাতন এবং মারধরের কথাটা সত্য, আমি আলা উদ্দিকে বলেছি তার ছেলে গিয়াস উদ্দিনকে হাজির করার জন্য। আমার বিরুদ্ধে গৃহবধূর অভিযোগ সত্য নয়।

চরজব্বার থানার ওসি সাহেদ উদ্দিন বলেন, এসআই সাদেককে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।সে অসুস্থ হওয়ায় তদন্ত শেষ করতে পারে নি। পরে এসআই মোশাররফের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলি সে তদন্ত করে দুই পক্ষ কে থানায় হাজির হতে বললেও বাদী পক্ষ আসলেও বিবাদী পক্ষ না আসায় কোটের মাধ্যমে সুরাহা করতে বলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *