মোস্তফা কামাল বুলবুল :
আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩মার্চ) ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরাম হত্যা মামলার রায় দেবে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ফেনীর রাজনৈতিক ইতিহাসে আলোচিত অন্যতম এ হত্যা মামলার রায়কে ঘিরে বিরাজ করছে চাপা উদ্বেগ। এ মামলার ৫৬জন আসামীর মধ্যে রয়েছেন বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ওরফে মিনার চৌধুরী সহ আর ও ৫৫ জন। একমাত্র বিএনপি নেতা মিনার চৌধুরী ছাড়া অন্য আসামীরা সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।
একরাম হত্যা মামলার রায়কে নিয়ে ফেনী অঞ্চলে ব্যাপক গুঞ্জরণের সৃষ্টি হয়েছে। কারা খালাস পাবে, কারা সাজা পাবে এসব নিয়েই হাটে মাঠে সর্বত্র আলোচনা চলছে। আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিস্টারের বিষয়টি।
সমস্ত বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে গত ১৩ ফেব্রুয়ারী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হক এ মামলার রায়ের তারিখ ধার্য করেন। এ মামলার রায়কে ঘিরে ফেনীর রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপা উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে। মামলার ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করছেন নিহত উপজেলা চেয়ারম্যান একরামের স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা।
ফেনী জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহাম্মদ জানান, মামলার অভিযোগ পত্রভুক্ত ৫৬ জন আসামির মধ্যে ১৬ জন বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরাও চেয়ারম্যান একরামুল হকের গাড়ির গতিরোধ, গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে মামলার ৫২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, সাফাই সাক্ষ্য, আসামি পরীক্ষা, উভয় পক্ষে যুক্তিতর্কসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু রায় ঘোষণার অপেক্ষা। মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানান তিনি।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ৫৬ জন আসামির মধ্যে ১৪ জন কারাগারে ও ২৪ জন জামিনে ছিলেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হক এ মামলার জামিনে থাকা সব আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার শুরু থেকে ১০ জন পলাতক রয়েছেন এবং জামিনে গিয়ে আরও ৭ জন পলাতক হয়েছেন। এ ছাড়া জামিনে থাকা মো. সোহেল ওরফে রুটি সোহেল নামের একজন আসামি ইতিমধ্যে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।
এ মামলার আসামীর মধ্যে রয়েছেন গত ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমি এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হককে গাড়ির গতিরোধ করে কুপিয়ে, গুলি করে ও গাড়িসহ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন চেয়ারম্যান একরামুল হকের ভাই রেজাউল হক জসিম বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।