মির্জানগরে শোক দিবসের কর্মসূচীতে জামাতের আমিরকে অতিথি করায় নিন্দার ঝড়

পরশুরাম প্রতিনিধি :

ফেনীর পরশুরামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতিয় শোকদিবসের কর্মসূচীতে পরশুরাম উপজেলা  জামাতের আামির মাওলানা নুর মুহাম্মদকে  বিশেষ অতিথি করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

এমন ন্যাক্কার জনক কাজের শাস্তি দাবি করেছেন উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

 

মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান ভুট্টেুার উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতিয় শোকদিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে দুই জামাত নেতাকে।

 

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পরশুরাম উপজেলা জামায়তের বর্তমান আমির মাওলানা নুর মুহাম্মদ এবং ইউনিয়ন জামাতের আমির আনোয়ার শাহ।

আওয়ামীলীগ অফিসে হামলা, ভাংচুর সহ বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে দুজনের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ ও সরকার বাদী একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় জামিন ও বিচারাধীন রয়েছে। উপজেলা আওয়ালীগ অফিস ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন মজুমদারের বাসায় হামলা ও ভাংচুর মামলা নুর মুহাম্মদ  তিনমাস কারাভোগ করেন। ২০১৪ সালের মসজিদে নাসাকতরার প্রস্তুতি নেয়ার অভিযোগে ৪০জন শিবির কর্মী সহ পরশুরাম থানার পুলিশ আটক করেছিল নুর শাহকে।

 

মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও জেলা যুবলীগের কার্যকরী কমিটির বর্তমান সদস্য ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেন  জেলা যুবলীগের সদস্য হয়েও সন্মান সূচক একটি আসন পাননি অথচ বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে ২০০৪  সালে ”স্বাধীনতার স্বরন” নামে একটি ম্যাগাজিন  প্রকাশ করার অপরাধে তাকে (ফারুখ) কে ধরে নিয়ে হাত কেটে দেয়ার নির্দেশ দেয়া জামাত নেতাকে অতিথি করায় তার হৃদয় রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

 

উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মির হোসেন মিরু তার ফেসবুকে লিখেন যে জামাত নেতা এক সময়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নিলে শরীর নাপাক হয়ে যায়, অজু করতে হয় সেই জামাত নেতাকে অতিথি করা হয়েছে । অথচ অনেক আওয়ামীলীগ নেতাকে শোকদিবসের অনুষ্ঠানে দাওয়াতও দেয়া হয়নি।

 

মির্জানগর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য ফজলুল  বারী মনছুর জানান জামাতের আমির মাওলানা নুর মুহাম্মদকে শোকদিবসের কর্মসূচীতে বিশেষ অতিথি করায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের হৃদয়ের রক্ষক্ষরন হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের শোক দিবসের কর্মসুচীতে মির্জানগর ইউনিয়ন ত্যাগী সাবেক নেতাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ জামাত নেতাকে বিশেষ অতিথি করে সন্মানিত করেছেন। তিনি আরো জানান এই জামাত নেতা একসময়ে প্রকাশ্যেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতেন। মনছুর জানান শুধু জামাতের আমির নয় আরেক জামাত নেতা আনোয়ার শাহকেও অতিথি করেছেন যা খুবই ন্যাক্কার জনক ঘটনা।

 

মির্জানগর ইউনিয়ন আওয়ামীলী সাবেক ওয়ার্ড সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হাবিবুল্লা হাবিব জানান আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেয়নি অথচ যার কারনে বিএনপি জোট সরকারের আমলে বাড়ীতে থাকতে পারিনি তাকে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে এমন রাজনীতি দেখতে হবে কখনো ভাবিনি।

 

তিনি আরো জানান মির্জানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনীতি চলছে জামাত বিএনপি নেতাদের পরামর্শে, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মামলা হামলা দিয়ে হররানি করলেও ৩০টি বাইসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া বিএনপি নেতা সেলিম সরকার,মাওলানা হেলাল , জামাতের আমির দেরই  ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে কদর বেশী।

 

মির্জানগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান মোঃ নুরুজ্জামান ভুট্টেুা জানান জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের কর্মসুচীতে মাওলানা নুর মুহাম্মদ ও আনোয়ার শাহকে মাদ্রাসা শিক্ষক হিসাবে অতিথি করা হয়েছে।  সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে এসব অপ্রচার করছে কিছু পদ পদবী বঞ্চিতরা।

উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন শীর্ষ নেতা জানান বিসয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *