মুসলিম মেয়ের প্রেমে পড়ে হিন্দু যুবক জেলহাজতে | বাংলারদর্পণ

শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট :
বাগেরহাটের শরণখোলার মুসলিম মেয়ে (১৬) মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এক হিন্দু ছেলের সঙ্গে। গত ৮ জুলাই প্রেমের টানে মেয়েটি ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায় মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ধনখালী গ্রামের সেই হিন্দু প্রেমিক অনজিৎ রায়ের (১৯) বাড়িতে। সেখানে হিন্দু রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়েও হয়। ঘটনা টের পেয়ে মেয়ের পরিবার ছেলে-মেয়েকে গত বৃহস্পতিবার রাতে কৌশলে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে ছেলের নামে দায়ের করা হয় অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা। সেই হিন্দু যুবক এখন জেলহাজতে।

পুলিশ জানিয়েছে, শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের পূর্ব রাজাপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তি তার মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মোংলা উপজেলার ধনখালী গ্রামের মনোজিৎ রায়ের ছেলে অনজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ছেলেকে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ছেলের পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়ে নিজেই জেনেশুনে অনজিতের সঙ্গে প্রেম করেছে। একবছর আগে আরো একবার সে পালিয়ে ছেলের বাড়িতে উঠেছিলো। তখন তারা স্থানীয়দের মাধ্যমে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় মেয়েকে। দ্বিতীয়বার আবার চলে এলে মেয়ের ইচ্ছাতেই হিন্দু রীতি অনুযায়ী শাখা-সিঁদুর পরিয়ে তাদের বিয়ে হয়। এঘটনা মেয়ের পরিবার জানতে পেরে সম্পর্ক মেনে নেওয়ার কথা বলে কৌশলে ছেলে-মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অনজিৎকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

মেয়ের বাবা জানান, তার মেয়ে উপজেলার নলবুনিয়া আপগ্রেট স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে নিয়ে যায় ওই হিন্দু ছেলেটি। তাদের মধ্যে বিয়ের বিষয়টি সঠিক না। ছেলেকে কোনো মারধরও করা হয়নি।

পূর্ব রাজাপুর ৮নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. ইসমাইল খলিফা বলেন, পরিবারের আশ্বাসে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই মেয়ে হিন্দু ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে এসে ওঠে। পরেরদিন শুক্রবার সকালে মেয়ের বাবা আমাকে খবর দিয়ে তাদের বাড়িতে নেয়। এসময় মেয়ে জানায়, ওই হিন্দু ছেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক। ছেলে মুসলমান হয়ে তাকে বিয়ে করতে রাজি। ওকে যেনো কেউ মারধর না করে। এসময় মেয়ের এক চাচাতো ভাই ছেলেটিকে চড়থাপ্পড় মারলে আমি নিষেধ করি। পরে ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার বাড়ির লোকজনকে মোবাইল ফোনে বলার পরও তারা না আসায় থানায় হস্তান্তর করা হয়।]

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ডালিম হোসেন মাঝি বলেন, একবছর আগেও ওই মেয়ে ছেলের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিলো। তখন উভয় এলাকার গণ্যমান্যদের মাধ্যমে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এবারও সেই একই কান্ড ঘটিয়েছে। শুনেছি সেখানে হিন্দুমতে শাখা-সিঁদুর পরে তাদের বিয়েও হয়েছে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, সম্পর্ক মেনে নেওয়ার কথা বলে কৌশলে ছেলে-মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসে মেয়ের পরিবার। পরে ছেলেকে থানায় হাজির করে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। শনিবার সকালে ছেলেকে জেলহাজতে এবং মেয়েকে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী শেষে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *