নিম্নমানের কাঁচা মালের ব্যাবহার।। সোনাগাজীর মিয়াজীঘাট ব্রীজের নির্মান কাজ স্থগিত

 সোনাগাজী প্রতিনিধি: প্রকাশ,১৬ নভেম্বর ১৬।
fb_img_1479286680332
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ১ নং চরমজলিশপুর ইউনিয়নে ছোট ফেনী নদীর উপর মিয়াজী ঘাট নামক স্থানে ১৪ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মানাধীন ব্রীজের নির্মাণ কাজ নিম্মমানের হওয়ার অভিযোগে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ রহিম উল্যাহ । ১২ নভেম্বর স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংসদ রহিম উল্যাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। প্রতিবেদন লিখার সময় পর্যন্ত ব্রীজটির নির্মান কাজ বব্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, ব্রীজ নির্মানকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স ছালেহ আহমেদ। কিন্তু মেসার্স ছালেহ আহমেদ নামের প্রতিষ্ঠানটি কাজটি না করে মোহাম্মদ সেন্টু নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা ও অন্য আরও তিন জনকে কাজটি সাব-কন্ট্রাক দিয়ে দেয় বলে জানা যায়। যাদের এই কাজের বিষয়ে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা নেই এমনকি তাদের লাইসেন্স পর্যন্ত নেই। ব্রীজটি নির্মানের শুরু হতে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রীজটিতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রভাবশালী মহলের পৃষ্টপোষকতার কারনে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস করছেনা। দীর্ঘ প্রত্যাশার ব্রীজটির নিম্ন মানের কাজ এলাকাবাসী মেনে নিতে পারছেনা।
সরজমিনে দেখা যায়,ব্রীজের নির্মান কাজে পাহাড়ের ঢালের নিম্নমানের পাথর, কাদাযুক্ত বালি, মরিচা ধরা গ্রেডবিহীন রড ও প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প পরিমান সিমেন্ট ব্যবহার করে মাত্র ৭/৮ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ব্রীজের স্থলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন লোক ও সরকারী কোন কর্মকর্তার দেখা মিলেনি। এই ব্যাপারে সাংসদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানে কাজের মান খুবই খারাপ তাছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহমেদ গত বৎসর ফেনী নদীর বামতীরে ভাঙ্গন রোধে ১৩ কোটি টাকার একটি পাইলট চ্যানেল নির্মানের কাজ করে।
নির্মানের শুরুতে গুনগত মান নিয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় পানি-সম্পদ মন্ত্রী মহোদয়কে চিঠি দিয়ে অবহিত করি। এছাড়া আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীকে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলি, যা এখনও প্রক্রিয়াধীন।
বর্তমানে ১৩ কোটি টাকার কাজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই কাজটি অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাবে। এসব দূনীতি করেও ফেনীর কোন এক অদৃশ্য শক্তির জন্য আইনের ফাঁক দিয়ে ঠিকাদার পার পেয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন মিয়াজী ঘাট ব্রীজের নির্মান কাজ স্থগিতের পর নির্বাহী প্রকৌশলী, সওজ, ফেনী আমাকে ফোন করে পুনরায় কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এই কাজটি তদারকির দায়িত্বে আছেন নোয়াখালী জেলার সওজ প্রকৌশলী মোঃ শোয়েব। অথচ তার জানা উচিৎ ছিল কোন সমস্যার জন্য কাজ স্থগিত করা হয়েছে এবং ব্রীজ পরিদর্শন করা। কিন্তু তা না করে তিনি সরাসরি কাজ চালু করার জন্য অনুমতি চায়। অতএব, বুঝতে আর বাকী নেই, ঠিকাদার ও সওজ প্রধান প্রকৌশলী প্রায় ২ কোটি টাকার উৎকোচ গ্রহন করে হরদম কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রানালয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ করব।
সাংসদের অভিযোগের বিষয়ে সওজ, ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *