নান্দাইলে ১০ টাকা কেজি চাল বিতরনে হতদরিদ্ররা বঞ্চিত : সচ্ছলদের হাতে একাধিক কার্ড

 

 

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় এখনো রয়ে গেছে সচ্ছলদের নাম। তালিকা সংশোধন করে ১৩ই মার্চ সোমবার থেকে নান্দাইলের তিনটি ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নের শাইলধরা বাজারের ডিলার মো. আবদুল হাকিমের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য ক্রেতা বসে রয়েছে, কিন্তু ডিলার চাল বিক্রি করছেন না।জানতে চাইলে ডিলার আবদুল হাকিম বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) সঙ্গে নিয়ে কার্ডধারীদের চাল কিনতে বলা হয়েছে। কিন্তু পরিচয়পত্র ছাড়াই চাল বিক্রি করার জন্য এলাকার ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান চাপ সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করার পর কার্ডধারীদের পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত বলবৎ রাখা হয়েছে। এ কারণে সকাল প্রায় ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ থাকে। ৭০ বছরের বৃদ্ধা তারা বিবির একমাত্র ছেলে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে এক মাস আগে মারা গেছেন। উপার্জনম সন্তান হারিয়ে এই বৃদ্ধা এখন অসহায়। একটা কুঁড়েঘর ছাড়া তাঁর এমন কোনো সম্পদ নেই যে পেটের ভাত জুটবে। সরকার হতদরিদ্রের জন্য ১০ টাকা কেজি চালের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করেছে, কিন্তু এই বৃদ্ধার সেই কার্ড জোটেনি। অনিয়ম হওয়ায় দরিদ্ররা নয় বরং একাধিক কার্ড পেয়েছে অপোকৃত সচ্ছলরাই। এলাকার একটি সূত্র অভিযোগ করে জানায়, শাইলধরা বাজারের একাধিক দোকানঘরের মালিক মো. আল আমীনকে হতদরিদ্রদের চাল কেনার কার্ড (ক্রমিক নম্বর ১৬৪৯) দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে বাড়িতে গিয়ে আল আমীনকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর চাচা জসীম উদ্দিন বলেন, আল আমীন ঢাকায় চাকরি করে। কিসের চাকরি তা বলতে পারেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আধাপাকা বাড়ি ও ৬০ শতক জমির মালিক মো. জসীম উদ্দিনের নামে ১০ টাকা কেজি দরের চাল কেনার কার্ড (ক্রমিক নম্বর ১২৪৩) রয়েছে। জানতে চাইলে জসীম কার্ড থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাঁর ছেলে ওবায়দুল হকের নামেও কার্ড (ক্রমিক নম্বর ১২৪৫) রয়েছে। ওই গ্রামে আরো অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, ১৩৫৭ ক্রমকি নম্বর কার্ডধারী উত্তর বানাইল গ্রামের সচ্ছল ব্যক্তি মো. শাহাব উদ্দিনের নামে হতদরিদ্রের কার্ড রয়েছে। এ ছাড়া ১২৫৯ ক্রমিক নম্বর কার্ডধারী গিয়াস উদ্দিন ও ১২৬১ ক্রমিক নম্বর কার্ডধারী আমেনা বেগম সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। ১২১১ ক্রমিক নম্বরের লুৎফর রহমান ও ১২১৫ ক্রমিক নম্বরের ফিরোজা আক্তার স্বামী-স্ত্রী। অথচ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পরিপত্রে প্রতি হতদরিদ্র পরিবারের জন্য একটি করে কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ধরনের আরো অসংগতি রয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *