মানিকগঞ্জে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে

বাংলার দর্পন :

সারাদেশে যখন পেঁয়াজ নিয়ে অস্থিরতা চলছে, তখন মানিকগঞ্জের সিংগাইরের পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে বাজারে। পুরাতন পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্ডপ বাজারে পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

 

সিংগাইরে আগাম জাতের পেঁয়াজ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। এই অঞ্চলের কৃষকদের আবাদ করা পেয়াঁজ স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন বাজারে। ভাল দাম পাওয়ায় অপরিপক্ক পেঁয়াজ উঠিয়েই বাজারে বিক্রি করছেন চাষীরা।

 

সিংগাইর উপজেলার জয়মন্ডপ ইউয়িনের কয়েকটি গ্রামে আগাম জাতের পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। এই অঞ্চলে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫০ হেক্টর। ইতিমধ্যে প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে স্থানীয় চাষীরা প্রায় ৪০/৪৫ হাজার টাকা লাভ করছেন।

 

উপজেলার জয়মন্ডপ ইউনিয়নের কানসা গ্রামের কৃষক কাদের মিয়া জানান, দাম ভালো হওয়ায় আমরা আগেই পেঁয়াজ তুলেছি। এ বছর এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছি। অর্ধেক জমির পেঁয়াজ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। অনেকে এই পেঁয়াজটা দুই সপ্তাহ পর তুলবেন। আবার ক্ষেত থেকে পাকিয়েও তুলবেন।

 

জয়মন্ডপ ইউনিয়নের খরারচর গ্রামের কৃষক জসিম আলী। বাজারে ভালো দাম থাকায় এবার আগে ভাগেই ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলছেন তিনি। গত বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম ছিল মাত্র ১৫ টাকা কেজি। বর্তমানে কাঁচা পেঁয়াজই ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এর চাহিদাও বেশ। নিয়ে যাওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়। পেঁয়াজের ভালো দামে তিনি বেশ খুশি।

 

আজিমপুর গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, আশ্বিন মাস থেকে তারা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করেছেন। আগাম এই পেঁয়াজ মুড়ি জাতের। দেখতে মুড়ির মতো। ছোট ছোট দানা হয়। তবে ঝাঁঝ অনেক। শুকনো পেঁয়াজের চেয়ে স্বাদেও ভালো। এ কারণেই অনেক চাহিদা বাজারে।

 

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান জানান, ভৌগোলিক কারণে জয়মন্ডপ ইউনিয়ন কিছুটা উঁচুতে অবস্থিত। তাই রবিশস্য বা শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। রাজধানী থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরের এই বাজারের সবজি রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে যায়।

 

এবার মুড়ি জাতের পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছেন। স্থানীয় বাজারগুলোতেও অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। যেখানে শুকনো পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কোজিতে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে প্রতি কেজি পাতা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *