গিয়াস উদ্দিন রনি, কোম্পানীগঞ্জ: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্থানীয় প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রমজানের মাসে চলছে বেপোরোয়া কোচিং বাণিজ্য চলছে।
সরেজমিনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সংবিধানের ১৫ (ক) ও ২১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোচিংয়ে পাঠদান করিয়ে আসছেন।
উপজেলার চরকাঁকড়া ইউপির পেশকারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ৭৮ জন শিক্ষার্থীকে সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জনপ্রতি ৫০০টাকা করে প্রাইভেট পড়ানো হচ্ছে। আবার ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত জনপ্রতি ৫০০টাকা করে কোচিং করানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে এ ক্লাস করানো হচ্ছে। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকল ছাত্রছাত্রী সমান ভাবে টাকা দিচ্ছে না। তবে ছাত্রছাত্রী তার দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ৫০০ টাকায় প্রাইভেট ও ৫০০ টাকা কোচিংয়ের জন্য আদায় করা হয়েছে।
অপরদিকে, উপজেলার রামপুর ইউপির বামনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ৭৮ জন শিক্ষার্থীকে ৫০০ টাকা করে ও চতুর্থ শ্রেণির ৯৭জনকে শিক্ষার্থীকে ৩০০টাকা করে কোচিং করানো হয়। এ ঘটনা একটু জানাজানি হলে, বামনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে নগদ টাকার অফার দেওয়া হয়েছে।
বামনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, অভিভাবকরা খুশি করে টাকা দিয়েছে, আমরা নিয়েছি। তবে প্রধান শিক্ষক পুর্নবার দাবি করেন তিনি কোচিংয়ের সময় অসুস্থ হয়ে ছুটি কাটিয়েছেন।
এ বিষয়ে বামনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো.আবু তাহের জানান, সচেতন অভিভাবক মহলের আগ্রহের ভিত্তিতে এ কোচিং করানো হয়েছে।
অন্যদিকে, উপজেলার মুছাপুর ইউপির পূর্ব মুছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩৫০জন ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে আদায় করে কোচিং করানো হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, তার ভাই সচিব,বন্ধুরা সাংবাদিক তিনি জনপ্রতি ২০০ টাকা করে কোচিং করাচ্ছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছ বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে কোচিং করানোর কোন বিধি নেই। আমাদের পক্ষ থেকে পুরোপুরি বিধি নিষেধ আরোপ করা আছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ফয়সাল আহমেদ’র ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লিখিত ছাড়া কেউ আমাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।