মো. নাইম তালুকদার ,সুনামগঞ্জ
হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওরের খুসকদের একমাত্র অবলম্বন বোরো ফসল রক্ষায় এখনো ৮৫ ভাগ কাজ শুরুই করেনি পিআইসি কমিটির সদস্য হয়নি ফলে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা । এই উপজেলায় ছোট বড় মোট ছয়টি হওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মানে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কর্তৃক কাবিটা ৫২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্প গুলো ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে শুরু ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৮৫ ভাগ প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওরের ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামত নদী খাল পুন খননের জন্য কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও তদারকি করছে। গত ২ দিনে জামালগঞ্জ উপজেলার ৬ টি হাওরে সরজমিনে পরিদর্শন করে অধিকাংশ প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড, শ্রমিক বা নিজস্ব কোন প্রতিনিধি দেখা পাওয়া যায়নি।
উপজেলার সর্ববৃহৎ বোরো ধানের ভান্ডার খ্যাত পাকনার হাওরে ১২ টির মধ্যে ৩ টি, মিনি পাকনার হাওরে ১টি, হালির হাওরে ২৫ টি প্রকল্পের মধ্যে ৩ টি, শনির হাওরে ৮ টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি, মহালিয়া হাওরে ৫টি ও জোয়াল ভাঙ্গা হাওরে ১টি সহ ৪৪টি প্রকল্পের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। অনেক পিআইসি সভাপতিরা বলেন, আমরা কয়েকদিন হয় টাকা পেয়েছি, প্রকল্প বরাদ্ধ ও অর্থ ছাড় পেতে অনেক বেগ পেয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি ও কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়নের সচিব নিহার রঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে গতবছর প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় অতি সংগোপনে তিনি পিাাইসিদের সাথে নীতিমালা বর্হিভূত লেনদেনের অভিযোগ থাকলেও এবারও সেই নিহার রঞ্জন দাসকে জামালগঞ্জ পাঠানো হয়েছে তিনি বলেন, জামালগঞ্জ উপজেলার ছোট বড় ছয়টি হওরের ফসল রক্ষা বাধ নির্মানে বাপাউবো কতৃক কাবিটা ৫২টি প্রকল্পের পিআইসির সভাপতি কে নির্ধারিত বরাদ্ধের ২০% অর্থ ১৫ দিন আগেই ছাড় দেয়া হয়েছে, কোন কোন পিআইসির সভাপতির প্রকল্প হস্তান্তর করে যাচ্ছেন, এ কারনে এখনো রদবদল হচ্ছে। আমরা তাগাদা দিচ্ছি অচিরেই কাজ শুরু হবে। অনেকে এস্কেবেটর আনতে বিলম্ব হচ্ছে। চলতি অর্থ বছরে জামালগঞ্জ উপজেলায় পাকনার হাত্তর, হালির হাত্তর, মিনি পাকনা, জামালগঞ্জ অংশের অংশিক শনির হাত্তর, মহালিয়া হাত্তর ও জোয়াল ভাঙ্গাঁ হাত্তরে মোট ৬ টি ছোট বড় হাত্তরের ৫২ টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ হয়েছে ৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা । বিগত অর্থ বছরে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ১০০ টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্ধ ছিল ১৭ কোটি টাকার। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে (চলতি বছরে) হালির হাত্তরে ২৫ টি, জোয়াল ভাঙ্গাঁয় ১টি, মহালিয়ায় ৫টি , শনির হাত্তরে ৮টি, মিনি পাকনা ১ টি, পাকনার হাত্তরে ১২ টি, পি আই সি গঠন করা হয়েছে। মোট ৫২টি পি আই সির মধ্যে প্রায় ৪০ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো চলছে পি আই সির রদবদল।
উপজেলার ২৭ হাজার কৃষক জমি রোপনের কাজ শেষ করলেও বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল হারানোর দুশ্চিন্তায় ভুগছে। কৃষকরা আশংকা করছেন মহা সংকটের। বাঁধ নির্মান কাজ বিলম্ব হওয়ায় হাওর বাচাও সুনামগঞ্জ বাচাও আন্দোলনের সহ সভাপতি ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, ইউসুফ আল আজাদ বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে বাধের মাটির কাজ সম্পন্ন করে ২৮ ফেব্রæয়ারীর মধ্যে আনুষাঙ্গিক কাজ সম্পূর্ন না করলে জনগনকে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে চিহিৃত পি আই সি র বিরুদ্দে দুদকে মামলা করব। কৃষকদের জীবন নিয়ে ছিনি মিনি খেলতে দেবনা।
এ ব্যাপারে হওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মানে বাপাউবো কর্তৃক কাবিটা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শামীম আল ইমরান বলেন, আমরা প্রথম দফার অর্থ ছাড় দিয়েছি, কাজ শুরু হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে সকল প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ও নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করতে পারব, কেউ অবহেলা করলে ছাড় দেবনা। ##