চট্টগ্রাম ব্যুরো :
কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ, আওলাদে রাসূল, হযরতুলহাজ্ব শাহ্ছুফি অধ্যক্ষ আল্লামা ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী বলেছেন, নবীর যুগের ১৪৫০ বছর পর এসে প্রিয় রাসুলের প্রেমের রুশনিতে মহান মোর্শেদ হযরত গাউছুল আজম (রাঃ) জগতবাসীকে জাগালেন তাকওয়ার উপলব্ধিতে। কাগতিয়ার নিভৃত পল্লি থেকে যে তরিক্বতের সূচনা হয়েছিল তা আজ গাউছুল আজমের অশ্রুসিক্ত দোয়ার ফলশ্রুতিতে বিশে^র প্রতিটি প্রান্তরে পৌঁছে গেছে। এ যেন বিন্দু থেকে সিন্ধু। তিল তিল শ্রম সাধনায় গড়ে তুলেছেন বিশ^জোড়া তরিক্বতের অদ্বিতীয় পাঠশালা কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ। বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে সমস্ত দিগন্তে নবীর নূরের ঐশী আলোতে দিশেহারা মানুষকে নিয়ে আসলেন খোদা পাবার সামিয়ানায়। ঘুমন্ত অন্তরাত্মায় দিলেন নবী প্রেমের প্রেরণা। গাউছিয়্যতের কন্ঠে ঘোষনা দিলেন হে যুবক! নামাজ পড়, রোজা রাখ, নবী করিম (দঃ) এর উপর দরূদ পড় মাতৃভূমি শান্ত কর। এ ডাক পৌঁছে গেল পৃথিবীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে জনপদে লোকালয়ে তারই ধারাবাহিকতায় জজিরাতুল আরবের মরু প্রান্তরে মোখলেছ তরিক্বতপন্থিদের আনাগোনা।
তিনি গত ৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন উপলক্ষে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সালতানাত অব ওমান এর উদ্যোগে দুবাইস্থ আল মারাবিয়া স্ট্রিট, ডাসকু ক্লাবে আয়োজিত বিশাল এশায়াত মাহফিলে উপস্থিত মুসলিম জনতার উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মারাত্মক আগ্রাসন থেকে মুসলিম যুবক-যুবতিদের চরিত্র, ঈমান ও আক্বিদা রক্ষা করতে হলে গাউছুল আজমের গাউছিয়্যতের প্রযুক্তি গ্রহন করা এখন সময়ের দাবী। তিনি সকলকে গাউছুল আজমের এ কালজয়ী দর্শন নিয়ে গবেষণা করার জন্য বিশেষ আহবান জানান। এছাড়াও তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আমিরাতের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় এই মাহফিল করার সুযোগ করে দেয়ায় দুবাইসহ আমিরাতের সাতটি প্রদেশের শাসকদের ধন্যবাদ প্রদান করেন ও তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মাহফিলে প্রধান অতিথি আসার পূর্বে প্রবাসী বাংলাদেশীসহ ভারত, পাকিস্তান, স্থানীয় আরবী ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানের উপস্থিতিতে মাহফিল প্রাঙ্গন কানায় কানায় র্পূণ হয়ে যায়। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এটিই সর্ববৃহৎ জমায়েত। প্রতি বছর ধর্মীয় এই বৃহৎ জমায়েতের মাধ্যমে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের ইমেজ বৃদ্ধিতে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত আমিরাতের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দরা। এবং প্রবাসীদের অনুরোধে কষ্ট করে বাংলাদেশ থেকে আরব আমিরাতে এসে বিশ্ব মুসলিমকে ধন্য করায় প্রধান অতিথির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রবাসী বক্তারা। সূদুর জজিরাতুল আরবে এসে প্রধান অতিথি হুজুর কেবলা মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব প্রিয় নবীর নূর সম্পর্কে যেভাবে বিশদ আলোচনার মাধ্যমে প্রিয় নবীজিকে নূরের নবী হিসাবে আখ্যায়িত করলেন তা বর্তমান মুসলিম বিশ্বে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মনে করেন উপস্থিত বিভিন্ন দেশের মুসলমানেরা।
কমিটির সাংগঠনিক তদারক পরিষদের আহবায়ক আলহাজ্ব নূর মুহাম্মদ সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এশায়াত মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সংযুক্ত আরব আমিরাত ওলামা পরিষদের আহবায়ক আলহাজ্ব মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা মাহাবুবুল আলম বোগদাদী সহ আরো অনেকে। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কমিটির দুবাই শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মনির উদ্দিন, মাহফিল বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক আলহাজ্ব হারুন এম. আজাদ সহ আমিরাতের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতৃবৃন্দরা।
মাহফিল শেষে প্রধান অতিথি দেশ,জাতি, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি ও উপস্থিত সকলের ইহকালীন কল্যাণ, পরকালীন মুক্তি এবং কাগতিয়ার গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।