নিজস্ব প্রতিবেদক : কোন মিস্ত্রি নাও বানাইলো কেমন দেখা যায়, ঝিলমিল ঝিল মিল করে বঙ্গবন্ধুর নাও,। বঙ্গবন্ধুর নৌকার মাঝি হতে পারেন নি, স্বাধীন বাংলার প্রথম পরাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদের পুত্র ডন। তিনি সুনামগঞ্জ তিন আসনে আওয়ামীলীগের নৌকার মাঝি হিসিবে সব দুয়ারে দুয়ারে পরিচিত। এলাকার আবাল বৃদ্ব বনিতা থেকে নিয়ে বিগত ১৪ টি বছর আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে সবাই দেখতে পাচ্ছে বঙ্গবন্দুর নৌকায়, এবার প্রকৃত মাঝি বিহীন নৌকা যে কোন সময় ডুবতে পারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুরের যে কোন হাওরে৷
বৃহত্তর দুই উপজেলার তৃণমূলের নেতাদের প্রাণের দাবী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে নেত্রী যদি সুনামগঞ্জ -৩- আসনে প্রকৃত নৌকার মাঝি দিতে ভুল করেন? নৌকার ভরাডুবির জন্য তৃণমূলের নেতাকর্মী দায়ী নয়৷ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলে নির্বাচন করবেনই আজিজুস সামাদ আজাদ ডন। শেষ পর্যন্ত তরী ভেড়াতে পারেন ঐক্যফ্রন্টেও। হবিগঞ্জের রেজা কিবরিয়ার পথ ধরতে পারেন তিনি। এমন গুঞ্জনে সরব এখন সুনামগঞ্জ ও সিলেটের ভোটের মাঠ। কোন বলয় থেকে নির্বাচন করবেন এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ঠ কিছু জানাননি ডন। জানান- ‘সময়ই বলে দেবে। তবে- সামনে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।’
এদিকে- আগামী দুই দিনের মধ্যে সিদ্বান্ত নেবেন ডন। অগ্রজ নজরুল ইসলাম ইতিমধ্যে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছে। নজরুলের কাছ থেকেও আমন্ত্রন আছে ডনের। ফলে রেজা কিবরিয়ার মতো ডন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হলে সিলেটের রাজনীতিতে অবাক করার কিছুই নেই।
সুনামগঞ্জ-৩ আসন (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসন থেকে এবার নৌকার মার্কার মনোনয়ন চেয়েছিলেন আজিজুস সামাদ আজাদ ডন। তিনি আওয়ামী লীগের কাছেও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছেন তিনি আর মনোনয়ন পাচ্ছেন না। আজিজুস সামাদ ডন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাস্ট্রমন্ত্রী জননেতা আলহাজ্জ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের বড় ছেলে।
৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের হাল ধরেন আবদুস সামাদ আজাদ। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন আবদুস সামাদ আজাদ। ২০০৫ সালে মারা যান বর্ষিয়াণ জননেতা আবদুস সামাদ আজাদ। বাবার মৃত্যুর পর আজিজুস সামাদ আজাদ ডন উপনির্বাচন করতে চাইলেও দলীয় অনুমতি না পাওয়ায় নির্বাচন করেন নি তিনি। ২০০৮ সালের এ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক যুগ্নসচিব আবদুল মান্নানকে।
আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। ২০১৪ সালেও এমএ মান্নানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা করা হয় এমএ মান্নানকে। মন্ত্রী হওয়ার পর নেতাকর্মীদের কাছ থেকে দুরত্ব হওয়ার কারনে এলাকায় গ্রহনযোগ্যতায় ভাটা পড়ে। বিএনপি-জামায়াত বেষ্টিত হওয়ার কারনে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ সরে যায়।
এদিকে, মাঠ গোছাতে থাকেন আজিজুস সামাদ ডন। দলীয় হাইকমান্ড থেকে আশ্বস্থ করা হয় এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু এবারো মনোনয়ন বঞ্চিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতা কর্মীরা। অনেকেই বলেন, সকল জাতীয় নেতার সন্তানদের পদ পদবী দিলেও সামাদ আজাদের পরিবারকে বার বার অবজ্ঞা করা হচ্ছে। ১৪ বছর ধরে এলাকায় মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছেন আাজিজুস সামাদ ডন।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য সৈয়দ সাবির মিয়া বলেন, ‘সব জরিপে আজিজুস সামাদ ডন এগিয়ে থাকলেও মনোনয়ন না দেয়া কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। গ্রামের পর গ্রাম হেঁেটে ডন সামাদ সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন জনবিচ্ছিন্ন কেউ এসে ফল ভোগ করুক আমরা চাই না।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাজী আব্দুল্লা বলেন, ‘আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে নিয়ে আমরা মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে গিয়েছি। নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। দল মনোনয়ন না দিলেও নির্বাচন আমাদের করতে হবে। আজিজুস সামাদ ডন মনোনয়ন না পাওয়ায় অনেকেই আজ আওয়ামী লীগ থেকে মুখ সরিয়ে নেবে।’
জগন্নাথপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবাব মিয়া বলেন, ‘স্বতন্ত্র হোক আর ঐক্যফ্রন্ট হোক নির্বাচন ছাড়া আমাদের আর কোনো গতি নেই।’ দক্ষিণ সুনামঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের মার্কা ‘ডন’ । আজিজুস সামাদ ডনকে ভোট দেয়ার জন্য মানুষ মুখিয়ে আছে। নির্বাচন ভিন্ন অন্য কোনো পথ খোলা নেই।’
এ ব্যাপারে আজিজুস সামাদ ডন বলেন, ‘মনোনয়ন ডিক্লারেশনের পর থেকে মানুষের চাপ বাড়ছে। সবার চাপে ইলেকশন করতে হতে পারে।’