পুত্রের কারণে ভাঙ্গনের মুখে বি. চৌধুরীর স্বপ্ন!

নিউজ ডেস্ক: বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যে আগ্রহী বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ড. একিউএম বদরুদোজ্জা চৌধুরীর স্বপ্ন ধুলিসাৎ হতে চলেছে। কৌশলের ভুলে এবং পুত্র মাহী বি চৌধুরীর জন্য একদিকে যেমন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে বেকায়দায় রয়েছেন তিনি, তেমনি রাজনৈতিক মাঠেও নিঃসঙ্গ হতে চলেছেন। জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের শর্তে বিএনপিকে হারাচ্ছে তিনি। অন্যদিকে বি. চৌধুরীর জামায়াত বিরোধী অবস্থানে বিএনপি আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের তীর ছুঁড়লেও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মতো নাম সর্বস্ব দল নিয়ে সরকারের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নেই বলেই নিশ্চিত করেছেন সরকার দলের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের নেতারা।

তারা বলছেন, সমর্থক ছাড়া কোনো দল নিয়েই রাজনীতির মাঠে লাভ নেই। একই অবস্থা বি. চৌধুরীরও। ফলে শেষ বয়সে রাজনীতির মাঠে নিজের অবস্থান তৈরিতে ব্যর্থ হয়ে একঘরে হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন বি. চৌধুরী। এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও।

এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, জাতীয় ঐক্যে বিএনপিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের শর্তকে বাড়াবাড়ি বলে মনে করছেন অনেকে। এমনকি জামায়াত ছাড়ার প্রশ্নে বিএনপিকে কোনো ছাড় না দেওয়ার ব্যাপারে মাহি বি. চৌধুরীর অবস্থানকেও ‘অতিউৎসাহী’ বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে মাহী বি. চৌধুরী জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় সরকারের লোক হয়ে কাজ করছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। যদিও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বলছেন তাদের কাছে বি. চৌধুরীর বিশেষ কোনো মূল্যায়ন নেই। ফলে উভয় পক্ষকেই হারাতে বসেছেন তিনি।

এদিকে বিএনপি মনে করছে, বি. চৌধুরীর পুত্র মাহী চাইছেন না বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠুক। তাই একেকবার একেক শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন। কখনো দেড়শ’ আসন ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দিচ্ছেন, আবার কখনো ক্ষমতায় গেলে প্রথম দুই বছরের জন্য দেশ পরিচালনায় ঐক্য প্রক্রিয়ার কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন। আর জামায়াত ছেড়ে ঐক্যে আসার শর্ত তো প্রথম থেকেই দিয়ে আসছিলেন। ১৫ সেপ্টেম্বর ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আগের দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো ‘ঘোষণায়’ জামায়াতকে ‘প্রত্যক্ষ স্বাধীনতাবিরোধী’ ও বিএনপিকে ‘পরোক্ষ স্বাধীনতাবিরোধী’ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ শব্দ দুটি যুক্ত করেছেন মাহী বি. চৌধুরী নিজেই। এ নিয়ে পিতা বি. চৌধুরীর সঙ্গে মাহী বি. চৌধুরীর মধ্যে তর্ক-বিতর্কও হয়েছে বলে জানায় বিভিন্ন গণমাধ্যম। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রও নিশ্চিত করেছে জামায়াত ও বিএনপি ইস্যুতে পিতা-পুত্রের দ্বন্দ্বের কথা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মাহী বি. চৌধুরীর কথার বাইরে যেতে পারছেন না বি. চৌধুরী। কারণ ক্ষমতাসীনদের উপরিমহলের সঙ্গে মাহী বি. চৌধুরীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। তা ছাড়া পুত্র মাহী বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব হলেও দলের অভ্যন্তরে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ফলে মাহীর অবাধ্য হতে পারছেন না বি. চৌধুরী।

এদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জাতীয় ঐক্যের কারণেই বিকল্পধারা বা বি. চৌধুরীর মতো ব্যক্তি রাজনীতিতে এখনো পর্যন্ত আলোচনায় রয়েছেন। এ ঐক্য ছাড়া তাদের কোনো অবলম্বনও নেই। মাহী বি. চৌধুরীর অতিউৎসাহী অবস্থান ও আচরণের কারণে বি. চৌধুরী রাজনীতির মাঠে একঘরে বা অস্তিত্বশূন্য অবস্থায় পড়তে পারেন বলেই আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *