নিউজ ডেস্ক: সিটি নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপির বিরুদ্ধাচরণের প্রেক্ষাপটে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তার শরিক দলগুলোকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে এনিয়ে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একাংশ যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তাদের একটি অংশ জামায়াতকে সঙ্গে রেখে আগামী জাতীয় নির্বাচন করার পক্ষে নয়। তারা বলছে, জামায়াতকে সঙ্গে রাখলে উল্টো দলের ক্ষতি হতে পারে।
বিএনপির তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী এখন বিএনপির গলার কাঁটা। দেশের ভেতরে ও বাইরে এ দলটিকে নিয়ে ব্যাপক চাপে রয়েছে বিএনপি। তাদের দ্বন্দ্ব নতুন করে প্রকাশ্যে এসেছে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে। দলীয় প্রার্থী ঘোষণার আগে গত ২৭ জুন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে জামায়াতের প্রতিনিধিও ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জোটগতভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে সবাই সমর্থন দেবে। জামায়াতের প্রার্থী প্রত্যাহারের অনুরোধও জানানো হয় বৈঠকে।
জানা যায়, ওই বৈঠকে কিছু না বললেও পরবর্তীতে বেঁকে বসে জামায়াত। দলীয় প্রার্থী সিলেট জেলা আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি দলটি। এ নিয়ে সিলেট সিটির ভোটে অস্বস্তিতে পড়েছে বিএনপি। এই প্রার্থীর জাঁতাকলে রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র আরিফুল হক।
এ প্রসঙ্গে জোটের শরিক দল ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি জানান, জাতীয় স্বার্থে জামায়াতের দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করা উচিত ছিল। এটা তারা ভুল করেছে। যেখানে বিএনপিই বিশাল ভোটব্যাংক নিয়ে এই সরকারের আমলে প্রার্থী দিয়ে টিকে থাকতে পারছে না, সেখানে জামায়াতের তো প্রশ্নই আসে না।
এলডিপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, তিন সিটি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীই জোটের প্রার্থী। এর বাইরে প্রার্থী করা হলে জোটের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হবে। যার কারণে ভবিষ্যতে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
সব সমীকরণে হিসেব করে জামায়াতকে ছাড়া আগামী নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এতে করে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত এ দলটির এমন সমালোচনা থেকেও বাঁচবে বিএনপি।