ফেনী সংবাদদাতাঃ
ফেনীর ফুলগাজীতে মাদ্রসার শিক্ষকের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই সন্তানের জননীর (২৮) বিরুদ্ধে। পরক্রীয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় স্বামী কামাল সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করা হয়েছে । এ মামলায় স্বামী কামাল উদ্দিন ১৯ দিন কারাভোগ করে বর্তমানে জামিনে আছেন।
এ দিকে গত ৫ জুলাই কামালের পক্ষ হয়ে এডভোকেট এম, শাহজাহান সাজু একশ টাকার একটি ও পঞ্চাশ টাকার একটি ষ্ট্যাম্প তালাকের হলফনামা নামা পাঠিয়েছেন। ষ্ট্যাম্প নং কণ – ০৪৯৬৮৭৮ এবং কজ -৩২৮৬৭৮৭। হলফনামায় সূত্রে জানাযায় , বিবাহের সময় পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, মূল্যবান কাপড় চোপট সহ বিবাহের সরঞ্জামাদি দিয়া কোন প্রকার যৌতুক ছাড়াই কামাল বিবাহ করেন। বিবাহের পর থেকে ব্যবসায়ীক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কামাল। এতে জুলেখা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অবাধ্য হয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। একাদিক বার সামাজিক ভাবে সমাধান করার চেষ্টা করলেও জুলেখাকে ব্যপরোয়া ও অবাধ্য চলা ফেরা থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় নি।গত ২৮ জুন জুলেখা তার পরকীয়া প্রেমিক রাজিবের সাথে তার বেড রুমে অনৈতিক কাজে ধরা পড়লে দুই জনকে বাড়ির লোকজনে পুলিশে দেন। গত ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৩ দিন থানাতে আটক ছিলো। এতে কামালের মান সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ায় এবং দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব নয় বিধায় স্বাক্ষীদের সম্মুখে তালাক প্রদান করিলেন।
নিকাহনামা সূত্রে জানাযায়, ৩ লক্ষ টাকা দেন মোহরের মধ্যে ৫০, ০০০ হাজার টাকা আদায়।
উভয় পক্ষের চুক্তিপত্র থেকে জানাযায়, গত ১৯ জুলাই উভয় পক্ষের মধ্যে চুক্তিপত্র হয়। চুক্তি পত্র লিখা হয় একশ টাকার একটি ও পঞ্চাশ টাকার একটি ষ্ট্যাম্পে। যার নং কপ -০৫৩৩০৭৫ ও কজ- ৩২৭৮৬৪৯। উভয পক্ষের চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিবিধ কারনে দুই জনের মধ্যে দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টি হয় এবং বনিবনা না হওয়ায় সুখী দাম্পত্য জীবন যাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই গত ৫ জুলাই জুলেখাকে তালাকের হলফনামা প্রদান করে বিবাহ বিচ্ছেদে করেন। উভয় পক্ষ সস্মতি প্রকাশ করেন এবং ১৯ জুলাই থেকে ৯০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর আইনানুগভাবে তালাকের হলফনামা কার্যকর হবে। উভয় পক্ষ কোন আপত্তি করতে পারবেনা এবং আপোষ তালাক হওয়ার কারনে দেন মোহন, ভরণ পোষণ সহ বিভিন্ন বিষয়ে মীমাংসা হয়। উভয়ের মধ্যে বৈবাহিক সর্ম্পক চিরতরে ছিন্ন হইয়া গেল। সব খরচ মিলিয়ে ২, ৫০, ০০০ হাজার টাকা জুলেখাকে দিয়েছে কামাল।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যাক্ষদোর্শী কামালের বৃদ্ধ মা নূর জাহান বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে সব সময় মোবাইলে সারাক্ষণ কথা বলতেন। নিষেদ করলেও শুনতো না। মাঝে – মাঝে আমাকেও মারদর করতো। আমি আমার পুত্রবধু জুলেখার কাছে জিম্মি ছিলাম। সব সময় আমাকে ঘরে একা রেখা বাপের বাড়িতে চলে যেত। কখনো -কখনো বাপের বাড়ির নাম বলে অন্য জায়গায়ও চলে যেত।
২৯ জুন সন্ধ্যায় আপনার ঘরে কি ঘটেছে ? জানতে চাইলে বৃদ্ধ নূর জাহান বেগম বলেন, ঐদিন আমার ছেলে কামাল কুমিল্লাতে ছিলো। জুলেখা ও সকাল থেকে বাড়িতে ছিলো না। বিকালের দিকে জুলেখা বাড়িতে এসেছে। সন্ধ্যার পর -পরেই জুলেখা বিদ্যুতের মেন সুইজ বন্ধ করে দিয়ে আমাকে বলেছে বিদ্যুৎ নেই। এর আগেও জুলেখা মাঝে -মাঝে বিদ্যুতের মেন সুইজ বন্ধ করে দিয়ে আমাকে বলতো বিদ্যুৎ নেই। আমিও মনে করতাম আসলেই বিদ্যুৎ নেই। কিন্তু ঐ (২৯ জুন) থেকে বুঝতে পারলাম বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়টি মিথ্যা। জুলেখা নিজের ইচ্ছায় বিদ্যুতের মেন সুইজ বন্ধ রেখে ঘরের মধ্যে অনৈনিক কাজ করতো। সন্ধ্যা হওয়ার সাথে -সাথে ঘরের মেন সুইজ বন্ধ করে দিয়ে পিছনের দরজাটা খুলে দিত। ঐ দরজা দিয়েই অন্য পুরুষ ঘরে ঢুকতো। ঐদিন অনুমানিক রাত ৮ টার দিকে (২৯ জুন) হঠাৎ ৩/৪ জন লোক ঘরের সামনের দরজা দিয়ে জুলেখাকে ডাকছে দরজা খুলতে। জুলেখা দরজা খুলতে অনহিয়া প্রকাশ কললে বাহির থেকে লোকজন দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে জুলেখার রুমের খাটের তলা থেকে রাজিবকে জোর পূর্বক আটক করে। তখনো ঘরে বিদ্যুৎ ছিলো না। কিন্তু পরে লোকজনে মেন সুইজ চেক করে দেখে বন্ধ। তাই ঘরে বিদ্যুৎ নেই। এর পর পুলিশ এসে জুলেখা ও রাজিবকে নিয়ে যান।
৩ দিন থানায় আটক রেখে দুই জনকেই পুলিশ চেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু ঘটনার এক মাস পর আমার ছেলে কামাল, আমার মেয়ে রেবেকা সুলতানা বকুল আমার বাসুরের স্ত্রী জাহারা বেগম এলাকার মেম্বার সফিকুর রহমান সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা বানোয়াড় মামলা নিয়েছেন পুলিশ।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যাক্ষদোশী জাহান বেগম বলেন, জুলেখা ও রাজিবের অনৈনিক কমকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে মিথ্যা মামলায় জডিয়ে।
জুলেখা বলেন, শ্বশুর বাড়ির লোকেরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছেন। রাজিবের সাথে আমার কোন সর্ম্পক ছিলো না। আমার স্বামী কামাল নিজেই বাসুড়া মাদ্রসার শিক্ষক রাজিবকে বাড়িতে আসতে বলেছে আমার ছেলেকে প্রাইভেট পড়াতে। আমি স্বামির সংসার করতে চাই। সামাজিক ভাবে সমাধানের মাধ্যমে সংসার করার ব্যবস্থা করলে মামলা তুলে নিবো।
কামাল বলেন, জুলেখার চরিত্রহীন নারী। তার সাথে পূনরায় সংসার করা যাবে না। এর আগেও একই মাদ্রসার শিক্ষক তাজুল ইসলাম সাথে জুলেখার সর্ম্পক ছিলো। তখনও ধরা পড়েছে। এখন পুনরায় ধরাপড়ে নিজের অপকর্ম ডাকতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বলেন, অাদালতে মামলা চলমান তাই এ বিষয়ে কথা বলা ঠিক হবেনা।
জুলেখার পিতার বাড়ি ফুলগাজী উপজেলার মধ্যম বাসুড়া। কামালের বাড়ি ও একই এলাকায়।