স্মৃতির পাতায় জাতির পিতা ও আজকের বাংলাদেশ

তোফায়েল আহমেদ :

পনেরোই আগস্টের কালরাত্রিতে শাহাদত বরণকারী সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতক খুনিচক্র স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল দেশের অগ্রগতিকে। ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের সকল অর্জনকে। এদিন শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করা হয়নি, মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ও লক্ষ্যকে ভিত্তি করে অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণের নেতৃত্বকে হত্যা করা হয়েছিল। ঘাতকদের লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের কোনো উত্তরাধিকার যেন বেঁচে না থাকে। আর সেজন্যই ঘাতকের দল বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র ১০ বছরের শিশু রাসেলকেও রেহাই দেয়নি। আমাদের পরম সৌভাগ্য যে, পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে থাকায় সেদিন ঘাতকের হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পান। আজ গর্ব করে বলতে পারি, ষড়যন্ত্রকারী খুনিচক্রের সেই আশা সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের স্বপ্ন ছিল প্রিয় মাতৃভূমি স্বাধীন হবে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ হবে সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যমলা সোনার বাংলা। আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করে বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে দৃপ্ত পদক্ষেপে।

বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কত কথা কত স্মৃতি আজ মনের চারপাশে ভিড় করে আসে। মনে পড়ে ১৯৭১-এর রক্তঝরা মার্চের ১৭ তারিখের কথা। সেদিন ছিল বঙ্গবন্ধুর ৫২তম জন্মদিন। ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা শেষে দুপুরে ধানমন্ডির বাসভবনে বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনাকালে একজন সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনার ৫২তম জন্মদিনে আপনার সবচাইতে বড় ও পবিত্র কামনা কী?’ উত্তরে বঞ্চিত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা স্বভাবসিদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’ এরপর সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনকালে তিনি ব্যথাভারাতুর কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি জন্মদিন পালন করি না—আমার জন্মদিনে মোমের বাতি জ্বালি না, কেকও কাটি না। এদেশে মানুষের নিরাপত্তা নাই। আপনারা আমাদের জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যেকোনো মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে। আমি জনগণেরই একজন, আমার জন্মদিনই কী, আর মৃত্যুদিনই কী? আমার জনগণের জন্য আমার জীবন ও মৃত্যু।’ বিশাল হূদয়ের অধিকারী ছিলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় ’৭৫-এর ১৪ আগস্ট। প্রতিদিনের মতো সকালবেলা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে যাই। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে গণভবনে গিয়েছিলাম। দিনের কাজ শেষে দুপুরবেলা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই টেবিলে বসে একসাথে খেয়েছি। বাসা থেকে বঙ্গবন্ধুর খাবার যেত। পরম শ্রদ্ধেয়া বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব—যিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গী। সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে যিনি বঙ্গবন্ধুকে যত্ন করে রাখতেন। নিজহাতে রান্না করে বঙ্গবন্ধুকে খাওয়াতেন। খাবার শেষে বঙ্গবন্ধু বিশ্রাম নিলেন। এরপর গণভবনে নিজ কক্ষে বসলেন। বঙ্গবন্ধু প্রায় প্রতিদিন বিকেলে মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের সঙ্গে দৈনন্দিন রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করতেন। একসঙ্গে চা পান করতেন। এরপর রাত আটটায় স্বীয় বাসভবনে ফিরতেন। বঙ্গবন্ধুকে পৌঁছে দিয়ে আমি বাসায় ফিরতাম। যেতামও একসঙ্গে ফিরতামও একসঙ্গে। গণভবনে যেখানে বঙ্গবন্ধুর অফিস, সেখানে তিনি দুপুর ২টা পর্যন্ত অফিস করতেন। গণভবনের পাশে এখন যেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস সেটি ছিল বঙ্গবন্ধুর অফিস। বঙ্গবন্ধুর অফিস কক্ষের পাশেই আমার দপ্তর। সেদিন বঙ্গবন্ধুর যুগ্মসচিব জনাব মনোয়ারুল ইসলাম এবং ব্যক্তিগত সচিব জনাব ফরাসউদ্দীন এই দুজন পিএইচডি করতে বিদেশ যাবেন এই উপলক্ষে কর্মকর্তাদের নৈশভোজ। নৈশভোজ শেষে তাদেরকে বিদায় করে আমি আবার ৩২ নম্বরে এলাম। পরিবারের সদস্যদের সাথে বঙ্গবন্ধু তখন খাবার টেবিলে। আমাকে কাছে ডেকে বললেন, ‘কাল সকালে আমার বাসায় আসবি। আমার সাথে তোর প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবি।’ আমার আর প্রিয় নেতার সঙ্গে প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া হয়নি।

পরদিন ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের এদেশীয় এজেন্ট সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সদস্য জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানকে পরিবারের সদস্যসহ এরূপ ভয়াবহভাবে হত্যার ঘটনা দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল। ভোর থেকেই দিনটি ছিল বিভীষিকাময়। হত্যাকাণ্ডের পরপরই আমাকে প্রথমে গ্রেফতার করে গৃহবন্দি করা হয়। ধানমন্ডির যে বাসায় আমি থাকতাম—সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত সেই বাসাটি সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বাসায় কাউকে ঢুকতে বা বেরুতে দেওয়া হয়নি। দু’দিন পর ১৭ তারিখ খুনিচক্রের অন্যতম ক্যাপ্টেন মাজেদের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর একদল উচ্ছৃঙ্খল সদস্য আমার বাসভবন তছনছ করে। ঘরের দেয়ালে সংরক্ষিত বঙ্গবন্ধুর ছবিগুলো ভেঙে ফেলে। মায়ের সামনেই হাত-চোখ বেঁধে আমাকে রেডিও স্টেশনে নিয়ে যায়। সেখানে খুনিচক্রের সমর্থনে সম্মতি আদায়ে উপর্যুপরি নির্যাতন চালায়। তখনো জেনারেল শফিউল্লাহ সেনাপ্রধান এবং কর্নেল শাফায়াত জামিল ব্রিগেড কমান্ডার। তাদের হস্তক্ষেপে আমাকে মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর ২৩ তারিখ ইএ চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ আমাকে এবং জনাব জিল্লুর রহমানকে (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি) বঙ্গভবনে নিয়ে যায়। বঙ্গভবনে খুনি মুশতাক তার অবৈধ সরকারকে সমর্থন করার জন্য আমাদের দুজনকে প্রস্তাব দেয়। আমরা খুনি মুশতাকের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করি। সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ জিল্লুর রহমান, আমাকে ও আবদুর রাজ্জাককে (শ্রদ্ধেয় নেতা প্রয়াত আবদুর রাজ্জাক) একই দিনে গ্রেফতার করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কোণে অবস্থিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ৬ দিন বন্দি রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। আমাদের সাথে আর একজন বন্দি ছিলেন। তিনি ‘দি পিপল’ পত্রিকার সম্পাদক প্রখ্যাত সাংবাদিক প্রয়াত জনাব আবিদুর রহমান। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের একটি ছোট্ট ঘরের মধ্যে পাশাপাশি দুটি চৌকির একটিতে ঘুমাতাম আমি ও রাজ্জাক ভাই এবং অপরটিতে জিল্লুর ভাই ও আবিদুর রহমান। একদিন রমজান মাসের তিন তারিখ রোজা রেখে নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। শেষ রাতের দিকে সেনাবাহিনীর একদল লোক কক্ষে প্রবেশ করে উচ্চৈঃস্বরে চিত্কার করে বলতে থাকে, ‘হু ইজ তোফায়েল’ ‘হু ইজ তোফায়েল!’ রাজ্জাক ভাই জেগে উঠে আমাকে ডেকে তোলেন। চোখ মেলে দেখি, আমার বুকের ’পরে স্টেনগান তাক করা। আমি ওজু করতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হয়। কক্ষের সাথেই সংযুক্ত বাথরুম। ওজু করে আসার সাথে সাথেই জিল্লুর ভাই, রাজ্জাক ভাই এবং আবিদুর রহমানের সামনেই আমার চোখ বেঁধে বারান্দায় নিয়ে হাত বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। আমি অনুভব করি আমাকে রেডিও স্টেশনে আনা হয়েছে। এরপর হাত-চোখ বাঁধা অবস্থায়ই চেয়ারের সাথে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরলে অনেকগুলো প্রশ্ন করা হয়। বঙ্গবন্ধু কী করেছেন, তাঁর কোথায় কী আছে এরকম বহু প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর না দেওয়াতে ভীতি প্রদর্শন করে খুনিরা বলে, ‘ইতিমধ্যে আমার এপিএস শফিকুল আলম মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সে আমার বিরুদ্ধে ৬০ পৃষ্ঠার এক বিবৃতি দিয়েছে। সেই বিবৃতিতে আমার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে।’ আমি নিরুত্তর থাকি। শুধু একটি কথাই বলেছিলাম, ‘বঙ্গবন্ধু যা ভালো করেছেন আমি তার সাথে ছিলাম, যদি কোনো ভুল করে থাকেন তার সাথেও ছিলাম। এর বেশি কিছুই আমি বলতে পারব না।’ তখন তারা চরম অসন্তুষ্ট হয়ে পুনরায় আমার ওপর নির্মম নির্যাতন শুরু করে। ভয়াবহ সেই নির্যাতনের ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। এরপর অর্ধমৃত অবস্থায় পুলিশ কন্ট্রোল রুমে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদকারীদের মধ্যে খুনি ডালিমের কণ্ঠস্বর স্পষ্ট চিনতে পেরেছিলাম। আমাকে রুমের মধ্যে একা রেখে তারা মিটিং করছিল—আমাকে নিয়ে কী করবে। অজ্ঞাত একজন আমার মাথায় হাত রেখে শুধু বলছিলেন, ‘আল্লাহ আল্লাহ করেন, আল্লাহ আল্লাহ করেন।’ তার ধারণা হয়েছিল ঘাতকের দল আমাকে মেরে ফেলবে। শেষ পর্যন্ত ঘাতকেরা এসে বলল, ‘আমরা যে প্রশ্নগুলো করেছি তার উত্তর দিতে হবে; উত্তর না দিলে আপনাকে আমরা রাখব না।’ নিরুত্তর থাকায় পুনরায় তারা আমাকে নির্যাতন করতে থাকে এবং একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তখন ঘাতকদল পুলিশ কন্ট্রোল রুমের যে কক্ষে আমরা অবস্থান করছিলাম সেই কক্ষে রাজ্জাক ভাই ও জিল্লুর ভাইয়ের কাছে আমাকে অজ্ঞানাবস্থায় রেখে আসে। জ্ঞান ফিরলে যন্ত্রণায় চিত্কার করতে থাকি। শারীরিক অসহ্য ব্যথা নিয়ে যখন আর্তনাদ করছি তখন জিল্লুর ভাই ও রাজ্জাক ভাই আমার এ-অবস্থা দেখে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন এবং তাঁরা দুজনেই সেবা-শুশ্রূষা করেন। এরপর সিটি এসপি সালাম সাহেব ডাক্তার নিয়ে আসেন। এ অবস্থার মধ্যেই রাতে মেজর শাহরিয়ার আমার কাছ থেকে লিখিত বিবৃতি নিতে আসে। তিনি আমাকে বলেন, ‘যে প্রশ্নগুলো করা হয়েছে তার লিখিত উত্তর দিতে হবে।’ আমি মেজর শাহরিয়ারকে বললাম, ‘আপনারা আমাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন দিতে পারেন; আমি কোনো কিছু লিখতেও পারব না, বলতেও পারব না।’ ওরা যখন দেখল আমার কাছ থেকে কোনো বিবৃতি আদায় করা সম্ভবপর নয়; তখন তারা উপায়ান্তর না দেখে চলে যায়। পরদিন অর্থাত্ ১২ সেপ্টেম্বর আমাকে ও আবিদুর রহমানকে ময়মনসিংহ কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফাঁসির আসামীকে অন্ধকার নির্জন প্রকোষ্ঠে যেভাবে রাখা হয় ময়মনসিংহ কারাগারে আমাকেও সেইভাবে বন্দি করে কনডেম সেলে রাখা হয়। তিন মাস আমি সূর্যের আলো দেখি নাই। আমার সাথে তখন কারাগারে বন্দি ছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি জনাব আবদুল হামিদ, ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানসহ অনেকে। সে দিনগুলির কথা যখন স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে তখন চিন্তা করি কী করে সে-সব দিন অতিক্রম করেছি। এরপর ২০ মাস ময়মনসিংহ কারাগারে অবস্থানের পর ’৭৭-এর ২৬ এপ্রিল আমাকে কুষ্টিয়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

দুঃসহ অবস্থার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে আমরা সাংগঠনিক তত্পরতা বৃদ্ধি করে সকল ভেদাভেদ ভুলে কেবল দলকেই ধ্যান-জ্ঞান করে, দলীয় ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ’৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে আওয়ামী লীগের সংগ্রামী পতাকা তুলে দিয়েছি। তিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হয়ে দলের সংগ্রামী পতাকা গৌরবের সাথে সমুন্নত রেখেছেন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হবার পর আমরা তাঁকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে যেখানেই গিয়েছি সেখানেই সর্বস্তরের গণমানুষের সমর্থন পেয়েছি। ব্যাপক গণসমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করেছে সংবিধান ও সত্যের কাছে আমাদের অঙ্গীকার ও দৃঢ় মনোবল। ’৯৬-এ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেন। প্রথমেই তিনি সংবিধান থেকে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করেন। ’৭৫-এর মর্মন্তুদ ঘটনার পর সামরিক শাসকেরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের শুধু ক্ষমাই করেনি, বিদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসিত করেছে। রাজনৈতিক দল গঠন করে নির্বাচন করার সুযোগ করে দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কিত করেছে। ২০০১-এ খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে একই কাজ করেছে। ২০০৯-এর নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব লাভ করেন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কাজ সমাপ্ত করে খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করেন। খুনিচক্রের যারা এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে, আমরা তাদের দেশে এনে দণ্ডাদেশ কার্যকর করার চেষ্টা করে চলেছি।

লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা, সংসদ সদস্য, বাণিজ্যমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *