নিউজ ডেস্ক ;
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার হিসেবে এবং বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টিকে সমান সুযোগ সুবিধা দেবার উদ্দেশ্যে সরকারি চাকুরীতে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। গত কয়েক মাস ধরে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনে নামে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে । তাছাড়া বিভিন্ন মহল থেকে এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।
সরকারী চাকুরীতে দৃশ্যমান কোটা নিয়ে আন্দোলন চললেও বেসরকারী চাকুরীতে অদৃশ্যমান কোটা প্রথা নিয়ে কাউকে কোনো উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়না। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে সরকারী চাকুরীর থেকে অনেক বেশী ‘কোটা’ বিরাজমান রয়েছে বেসরকারী চাকুরী ক্ষেত্রে। বেশির ভাগ কোম্পানীর ক্ষেত্রেই দেখা যায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির উপরের লেভেলের কর্মকর্তাদের বিশেষ সুপারিশ ছাড়া মেধা থাকা সত্বেও চাকুরী হয়না। এমনকি বিভিন্ন বেসরকারী কোম্পানি চাকুরীর বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেনা। নিজেদের পরিচিতদের মধ্যে থেকেই নিয়োগ দিয়ে দেয়। বেসরকারী চাকুরীতে অদৃশ্যমান কোটার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এমডি কোটা, জিএম কোটা, সুন্দরী কোটা, মামা কোটা, খালু কোটা, চাচা কোটা, বড় ভাই কোটা ইত্যাদি। অথচ বেসরকারি চাকুরীতে বিদ্যমান এসব অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে দেখা যায়না।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা নিজেদের আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ হিসেবে দাবি করলেও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। এছাড়া আন্দোলন আর শান্তি- দুটি বিষয় সব সময়ই বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রধান দুই কাটা ছিল সারাদেশ সহ ঢাকা শহরে সৃষ্টি সীমাহীন জনদুর্ভোগ এবং আন্দোলনের শেষ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসায় সন্ত্রাসী হামলা, ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা। বিশেষ করে উপাচার্যের বাসায় হামলার ঘটনায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতি সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দার ঝড় উঠে। যদিও আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এই হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করা হয়। এই হামলায় বহিরাগতদের দায়ী করে আসছিলো আন্দোলনকারীরা। বহিরাগতরা তাদের আন্দোলনের অংশ হয়ে উপাচার্যের বাসায় হামলার ঘটনা প্রতিরোধ করতে না পারার দায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা এড়াতে পারে না বলে অভিমত দেন অনেকে।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে এক সপ্তাহ ব্যাপী আন্দোলন চলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দাবি মেনে নিয়ে সরকারি চাকুরী থেকে কোটা প্রথা বাতিলের ঘোষণা দেন। তখন আন্দোলনকারীরা আন্দোলন বন্ধ ঘোষণা করে ক্লাসে ফিরে গেলেও আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী কয়েকজন এই আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে অর্থ অর্জনের পাঁয়তারা শুরু করেছে।