সৈয়দ মনির অাহমদ >> মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও র্যাব প্রধান কর্তৃক মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনার পর সারাদেশে শতাধিক মাদক সম্রাট নিহত হয়েছে, উদ্ধার হয়েছে হাজার কোটি টাকা মুল্যের মাদক দ্রব্য। কিন্তু ফেনীর অতিগুরুত্বপুর্ন সোনাগাজী উপজেলায় এ চিত্র একটু ভিন্ন।
সোনাগাজীতে অন্তত ৪০জন বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, শতাধিক বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা মাদক সেবন ও ব্যাবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ অাছে। ওইসব জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতার পৃষ্টপোষকতায় উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশলে মাদক ব্যাবসা চলছে। সোনাগাজীতে গুরুত্বপূর্ন লোকগুলো মাদক কারবারে জড়িত থাকায় পুলিশ প্রশাসন মাদক নিয়ন্ত্রনে বারবার ব্যার্থ হয়েছে। নেতাদের মধ্যে কয়েকজন তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতার বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ব্যার্থ হয়েছে প্রশাসন।আবার কোথাও কোথাও সফল হয়েছে, উদ্ধার হয়েছে মাদক।
চলমান অভিযানের অাগেও, সোনাগাজীতে প্রায় প্রতিদিন মাদকসহ মাদক কারবারি আটক হতো। বিশেষ অভিযানে সারাদেশে সফলতা অাসলেও সোনাগাজীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যার্থ।
স্থানীয়ভাবে কথিত অাছে, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশ যোগসাজশে মাদক ব্যাবসা চলতো। থানায় মাসোয়ারা দিলেই মাদক স্ফট বৈধ। এখন এমনটা দেখা যায়না। তবে ওইসব কথিত বৈধ বিক্রেতারা বার বার রক্ষা পাওয়ায় জনমনে প্রশ্ন থেকেই যাবে। সম্প্রতি থানার ১শ গজের মধ্য জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন বাড়ী থেকে তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা মাদক সহ হাতেনাতে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক আটক হওয়ার পর সেই পুরনো চিত্রই মনে করিয়ে দিচ্ছে। তাহলে কি এখনো জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, মাদক বিক্রেতা ও প্রশাসনের যোগসাজশ থাকতে পারে?
সোনাগাজীর মাদক সংক্রান্ত আরো একটি প্রতিবেদন :
সোনাগাজীতে মাদক নিয়ন্ত্রন হচ্ছেনা কেন ?
ভারতের সীমান্তবর্তী ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ন অংশে ফেনীর অবস্থান। তাই ফেনীতে অবাধে প্রবেশ করে সকল ধরনের মাদক। অর্থনৈতিকভাবেও এ জেলার মানুষ স্বাবলম্বী। জেলার অতিগুরুত্বপুর্ন উপজেলা সোনাগাজী। লালপুল, মুহুরী প্রজেক্ট, ফাজিলের ঘাট রোড ও কালিদহ-নবাবপুর সড়ক দিয়ে সোনাগাজীতে মাদক প্রবেশ করে। উপজেলার প্রায় সবকটি ছোট বড় হাট বাজারে এবং শতাধিক পয়েন্টে ভ্রাম্যমানভাবে মাদক বিক্রি হয়।
এসব বিক্রয় কেন্দ্র এবং বিক্রেতাদের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ভালোভাবে চিনে জানে। অনেকেই বার বার গ্রেপ্তার হয়ে অাদালতের মাধ্যমে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো সেই পেশায় ফিরে যায়। তবে যাদের হাত ধরে ওইসব পয়েন্ট দিয়ে সোনাগাজীতে মাদক প্রবেশ করে বিক্রয় পয়েন্ট গুলোতে পৌছে যায় তারাই সবসময় ধরাছোঁয়ার বাহিরে। উপজেলায় ১০-১২ জন মাদকের ডিলার মোবাইল ফোন ব্যাবহার করে ওই কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। জানামতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তালিকাভুক্ত কয়েকজন মাদক সম্রাট সোনাগাজীতে রয়েছে। মাঝে মধ্যে দেখা যায় অনেক জনপ্রতিনিধি মাদক বিক্রেতাকে পুলিশে সোপর্দ করেন। স্থানীয়দের মতে ভাগবাটোয়ারা সঠিক না হলে এমন ঘটনা ঘটে।অাবার নিজস্ব বিক্রেতাকে সুযোগ করে দিতেও এহেন ঘটনা ঘটতে পারে। কিছু হোয়াইট ক্রিমিনাল, ভালো পোশাকে লালপুল, ডাকবাংলা, সোনাগাজী জিরোপয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অামদানীকৃত মাদক বন্টন করে থাকে। আর এসব কাজে ব্যাবহার হচ্ছে যাত্রীবাহী অথবা মালবাহী যানবাহন। এসব কারনেই সোনাগাজীতে সহজে মাদক নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয়।
লেখক –
সৈয়দ মনির অাহমদ
সভাপতি- সোনাগাজী প্রেসক্লাব।
সম্পাদক- banglardarpan.com