এবার অনলাইন মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নিউজ ডেস্কঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশ থেকে মাদক নির্মূলে দেশজুড়ে মাদকের বিরুদ্ধে চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান। এখন পর্যন্ত এই অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্ধুক যুদ্ধে এবং নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে ৮০ জন অবৈধ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এছাড়া এপর্যন্ত তিন হাজারের অধিক মাদক সেবী এবং মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বরাত দিয়ে জানা গেছে।

এবার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে অনলাইন জগতে অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের ফলে বর্তমান সময়ে ই-কমার্স খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ই-কমার্সের এই যুগে খাবার দাবার সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করা যাচ্ছে ঘরে বসেই। এই ই-কমার্সের ধারণা মাথায় নিয়ে অনলাইনে রমরমা মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে অনেক অবৈধ মাদক ব্যবসায়ী। বহুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেইজ খুলে প্রকাশ্যে মাদক দ্রব্যের অবৈধ রমরমা ব্যবসা করছে। বিকাশ, রকেট কিংবা ইউক্যাশে পেমেন্ট দিলে ঘরে বসেই ইয়াবা, ফেনসিডিল, বিয়ার, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পেয়ে যাচ্ছেন আগ্রহীরা। পেমেন্ট দিয়ে আবার অনেকে প্রতারিতও হচ্ছেন। তবে নানা কারণে সেসব প্রতারণার কথা পুলিশের গোচরে আনছেন না সংশ্লিষ্টরা।

ভাসমান এসব মাদক ব্যবসায়ী অনলাইন ও মুঠোফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে চাহিদা মতো মাদকদ্রব্য পৌঁছে দিচ্ছে ক্রেতার দ্বারপ্রান্তে। অনলাইন মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের এই বাণিজ্য চাঙ্গা রাখতে প্রতিনিয়তই খুঁজে বের করছে অভিনব সব পন্থা। বর্তমানে রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে অনলাইনের মাধ্যমেই চলছে বেশিরভাগ মাদকদ্রব্য সরবারাহের বাণিজ্য। অনলাইনে কেনাবেচা হওয়া মাদকদ্রব্য গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, হিরোইন , কোকেন , ইয়াবা, আফিম , গাজা, বিয়ার সহ বিভিন্ন ধরণের মদ ইত্যাদি।

অনলাইনের এই মাদক ব্যবসাকে সাইবার ক্রাইম আখ্যা দিয়ে অপরাধ বিশ্লেষজ্ঞরা বলেন, সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের যথেষ্ট ধারণা না থাকায় এ অপরাধ দ্রুত বাড়ছে। এ অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে সাইবার ক্রিমিনালদের জানা থাকলে তারাও এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সাহস পেত না। এদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বরাত দিয়ে জানা গেছে অবৈধ মাদক ব্যবসাকে সাইবার ক্রাইমের আওতায় এনে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে তারা।

তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছে করে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সমপ্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার মাধ্যমে মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়া হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কোন ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন এবং অনধিক এককোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

এদিকে মাদক নির্মূলে সরকারের এই কার্যকরী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বেশ প্রশংসা করেছে অনেকে। অনেকের মতে এই অভিযানের ফলে অনলাইন মাধ্যমে মাদক বিক্রি ছাড়াও অন্যান্য সাইবার অপরাধও ক্রমশ হ্রাস পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *