নাহিদ এনাম >>
আমার কাজিন/বন্ধু ঘোর আওয়ামীলীগ সমর্থক যাকে আমরা বলি পাগলা সমর্থক সে তখন সৌদিআরব থেকেছে প্রায় ১০ বছর।৫ মে হেফাজত ঘটনার তিন/চারদিন পরে সে মাত্র তার মাসিক বেতনটা নিয়ে ঘরে এসেছে,কিছুক্ষণের ভেতর বাংলাদেশী পরিচিত একজন দ্বিনদার ভাই সাথে আরো দুজন নিয়ে বাসায় আসে।তারা এসে জানায় ‘হেফাজতের কয়েক হাজার দ্বিনই গরিব মাদ্রাসার ছেলেদের মেরে ফেলেছে সরকার এবং বহু বহু লোক আহত আর নিখোঁজ।নিহতদের পরিবারকে সাহায্য এবং আহদের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা লাগছে তাই আমরা ছাড়া আর কেউ নেই তাদের।আল্লাহ্ আমাদের বিদেশ এনে আয় করার পথ করে দিয়েছে এখন সময় এসেছে আল্লাহ্র এই রহমতের প্রতিদান দেয়ার’ এই ধরণের আরো আরো ধর্মীয় মর্মস্পর্শী কথা শোনানোর এক পর্যায়ে আমার সেই বন্ধুটি চোখের পানি ফেলে কিছুক্ষণ আগে নিয়ে আসে মাসিক বেতনের পুরো ৫৫ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেয় নিজের ইচ্ছেতে!
ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ যে বাংলাদেশিরা প্রবাশে যাচ্ছে আয় করতে তাদেরকে সুপরিকল্পিতভাবে টার্গেট করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেশবিরোধী চক্র।প্রথমে এদেরকে ধর্মীয় স্পর্শকাতর টপিক এনে ধর্মভিরু থেকে ধর্মান্ধ করা হয়,তারপর কিছু কিছু ইস্যু তুলে আওয়ামী সরকার বিরোধী মনোভাব তৈরি করা হয় এবং সবশেষে হেফাজতের মতো ভয়ংকর ইস্যু দেখিয়ে টাকার ধান্দা করা হয়। হেফাজতের এই ৫ মের ঘটনা মূলত এদের পূর্বপরিকল্পিত একটি প্রক্রিয়া।এভাবে দেশ এবং বিদেশ থেকে বিরাট এমাউন্টের টাকা উঠানোর জন্য তারা প্রথমে প্রতিটি মাদ্রাসার হুজুরদের পেছনে টাকা লগ্নি করেছিল সেই মাদ্রাসার সকল ছাত্রদের ঢাকায় আনার প্রক্রিয়াটা নিশ্চিত করে,কারন তারা জানে এত বিরাট সংখ্যক লোকজন ঢাকায় আনলে এদিক ওদিক দুদিক থেকে ফল আসবে! এক হলো এদের দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে অথবা সরকারের যদি পতন না হয় তাহলে নিশ্চয়ই সরকার এদের উপর আক্রমণের পথ বেছে নেবে,আর সেই আক্রমণের ইস্যু দেখিয়ে দেশ বিদেসশে অপপ্রচার চালিয়ে টাকা উঠানো যাবে! অবশেষে দ্বিতীয় পন্থাটা তারা কাজে লাগাতে পেরেছে। জানা যায় হেফাজত ইস্যুতে ৫ মের ঘটনার পরে এক মাসের ভেতর দেশ বিদেশের সাধারণ মানুষ এবং সংগঠন থেকে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলেছে তারা অনেকজন মিলে! যে টাকার ছিটেফোঁটা কিছু দিয়ে পরবর্তিতে নাটের গুরু শফি মিয়াকে হেলিকপ্টারে চড়িয়েছে এবং ফলমূল খাইয়েছে,আর বাকিটা জমা আছে।
একদম ঠিক একই প্রক্রিয়া চলেছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে! দেশে এবং বিদেশে ছড়িয়ে ছিটয়ে থাকা এই ধর্মব্যবসায়ীরাই মূলত পাকিস্তানী গোয়েন্দা অফিসারদের ব্যবহার করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসাকে দিয়ে বার্মিজ সেনা এবং পুলিশের উপর অতর্কিত আক্রমণ পরিচালনা করে রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করেছিল।এর পেছনে দুইটা পরিষ্কার উদ্দেশ্য ছিল,প্রথমত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে সরকারকে নাস্তানাবুদ করা এবং দ্বিতীয়ত এবং মূল কারন এই রোহিঙ্গাদের দেখিয়ে সারা বিশ্ব থেকে টাকার ধান্দা করা। এবং অবশেষে হয়েছেও তাই। রোহিঙ্গাদের দেখিয়ে সারা বিশ্ব থেকে এরা অন্তত লক্ষ কোটি টাকা আদায় করেছে এই পর্যন্ত,যার ছিটেফোঁটা কিছু এনজিওর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য খরচ করেছে এবং বাকিটা জমা আছে!
এই যে হেফাজত এবং রোহিঙ্গা প্রেক্ষাপটে আদায় করা এবং জমা থাকা টাকা ব্যয় করা হবে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে! সরকার এবং আওয়ামীলীগ কি প্রস্তুতি নিয়েছে এগুলিকে প্রতিরোধ করতে ?
লেখক – কলামিস্ট ও সমাজসেবক।