শেখ হাসিনার কাঙ্খিত ছাত্রলীগ নেতৃত্বের হাতে উঠুক শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকা

মোঃ নুরউদ্দিন রোকসার >>

 

প্রিয় ছাত্র সমাজ, সম্মানিত পাঠকবৃন্দ- বিনয়ের সাথে আপনাদের মনযোগ আশা করছি, আপনারা ইতিমধ্যেই অবহিত হয়েছেন, আগামি ১১-১২ এপ্রিল সমগ্র বিশ্বের সর্ব বৃহৎ, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন-২০১৮ উৎসব মূখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বেশ কিছু কারনে ছাত্রলীগের এবারের সম্মেলনে আওয়ামী পরিবারের লক্ষমাত্রা দক্ষনেতৃত্ব গঠনে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।

 

বিগত ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতিয়ারে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের ফলে দৃশ্যত বিশ্ব-মানদন্ডে উর্ত্তীন্ন উন্নয়নশীল এক নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়া এবং বিশ্বের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বীকৃতি অর্জন শুধু বাংলাদেশকে নয় বরং এশিয়া মহাদেশকে এক বিরল সম্মানে সম্মানিত করেছে।

 

কেন, কি কারনে বিশ্ব পন্ডিতগণ বাংলাদেশকে এতটা প্রাধান্য দিতে বাধ্য হয়েছে; তা শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেয়া প্রতিটা আন্তর্জাতিক সম্মাননা পুরষ্কারের গায়ে নিধারূণভাবে লিখা রয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ার চোখ সাথে প্রযুক্তির এই মহাকর্ষে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের এই মহাযজ্ঞ বিশ্ববাসীর নজর এড়াতে পারেনি। তাইতো এক একটা বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি সরূপ বিশ্ব আজ বঙ্গবন্ধু কন্যাকে বারংবার সম্মানিত করছে। যেটা দেশ তথা জতির জন্যেও মর্যাদাকর।

 

বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের দূর্ণীতি দূর্শাসনের বায়ানটে বিক্ষত, পিছিয়ে পরা সম্ভাবনার বাংলাদেশের সাথে বর্তমান অগ্রগামি উন্নয়ণশীল বাংলাদেশের তুলনা মূলক পার্থক্য কেন শুধু দেশের ভৌগলিক সীমানা পেরিয়ে বাহিরের দেশগুলোর জনসাধারণ নিরূপণ করবে? বাংলাদেশিরা কেন নয়? এদেশিরা তো শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিটা উন্নয়নকল্পের সুবিধাভোগী। অতচ অধিকাংশ মফস্বল, গ্রাম গঞ্জের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যার নিরলস পরিশ্রমে অর্জিত সুফল সুবিধাভোগী হয়েও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই বলে অনেকে মতান্তর করে থাকেন। কেন তথা কথিত সুশীলদের এই ধারনা। আসলেকি তাই? নাকি দেশবাসী সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রা সমন্ধে অজ্ঞাত।

 

এমনি বাস্তবতাকে সামনে রেখে স্বচ্ছভাবে সরকারের প্রতিটা উন্নয়ণ সাফল্যের বাস্তব দৃশ্যপট দেশবাসীর সামনে পরিবেশনের গুরুদায়িত্ব ছাত্রলীগের মেধাবী প্রতিজন সংগঠককেই নিতে হব। এজন্যে চাই মেধাবী, কর্মঠ ও আদর্শিক নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের উপর দেশরত্ন শেখ হাসিনার আকাঙ্ক্ষার জায়গাটা বরাবরই প্রধান্য পায়। কারন, ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্য সৃষ্টিকারী সম্মানিত অগ্রজরা এ কাজটি করেছে অত্যন্ত সুনিপুণ ভাবে। তাইতো ছাত্রলীগকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসাবে আখ্যা দেয়া হয়েছে।

 

এমন একটা সময়ে ছাত্রলীগের জাতীয় কাউন্সিল মঞ্চের অভিমুখে জাতির দৃষ্টিভঙ্গি; যখন কিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নদেখা সূখী, সমৃদ্ধ, দারিদ্র মুক্ত একটি উন্নত সোনার বাংলা বিনির্মাণে তার যোগ্য উত্তোসূরী দেশের সফল রাষ্টপ্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা সাফল্যের সাথে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

বাংলাদেশের প্রতিটা সেক্টরে আজ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে- মানুষের জীবনমান, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, সড়ক-জনপদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, অবকাঠামো উন্নয়ণসহ প্রতিটা ক্ষেত্রে। উদাহরণের জন্য শিক্ষা সেক্টর নিয়ে যদি আলোচনা করা হয়, তবে নিঃদ্বিধায় বলা চলে- সার্বিক বিবেচনায় অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় শিক্ষা খাতেও অন্যান্য উন্নয়ণ খাতের মতোই বিপ্লব সাধিত হয়েছে।

 

২০১৭-১৮ অর্থবছরে শিক্ষা উন্নয়ন খাতে ৫০ হজার ৪৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা এ যাবতকালের মধ্যে শিক্ষা স্তরে সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ।

 

“শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সার্বিক শিক্ষা উন্নয়ন কার্যক্রমে হাতদিয়েছে সরকার। টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে সরকার পরিকল্পিত নীতি গ্রহণ করেছে। মানবসম্পদ উন্নয়নের বিকল্প নেই। তাইতো শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে সক্ষমতা বাড়াতে ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ইন্টারঅ্যাকটিভ শ্রেণিকক্ষ বাস্তবায়নে কাজ করছে শেখ হাসিনা সরকার।

 

মান সম্মত শিক্ষার সুযোগ থেকে যেন একটি শিশুও বাদ না যায়, একারনে প্রথমিক শিক্ষার্থীদের টানা নবমবারের মতো সারাদেশে বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিয়েছে শেখ হাসিনা। যার অংশ হিসাবে এবছরও প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর মাঝে এই বই বিতরণ করা হয়েছে। শুধু পাঠ্য বই নয়, লেখা-পড়ায় মনযোগী হতে উপবৃত্তি প্রদান, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যসহ নানাবিদ সুবিধা দেয়া হচ্ছে শ্রেণী গুলোতে।

 

২০১৩ সালে  শিক্ষকদের এক বিশাল সমাবেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এক ঘোষণায় ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। এতে বেসরকারি বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লাখ ৩ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষক সরকারি খাতে অন্তর্ভূক্তি পায়। যোগ্য পিতার সুযোগ্য সন্তান! এর আগে, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একসঙ্গে ৩৬ হাজার ১৬৫টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। তখন এক লাখ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষক সরকারি খাতে অন্তর্ভূক্তি লাভ করে।

 

এমনি অগণিত উন্নয়নের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন বাঙ্গালির আশা, আকাঙ্খার একমাত্র ঠিকানা বিশ্ব স্বীকৃত সফল রাষ্ট্রপ্রধান দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তার নিরলস পরিশ্রম এবং পরিকল্পিত নেতৃত্বগুণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে শিরউঁচু করে কথা বলে।

 

তাই আগামি দিনে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক বাহক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কান্ডারীদের উপর অর্পিত দায়িত্বশীলরা স্বীয় গুনে, মেধায়, মননে আদর্শগত বৈশিষ্ট্যের অধিকারি হওয়াটা অধিকতর গুরুত্ববহন করে। কেননা, দেশের উন্নয়ন সাফল্য বিরোধী সকল ষড়যন্ত্রকারিদের রাজপথে প্রতিহত করে দেশের প্রয়োজনে দেশরত্ন হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা হবে।

লেখক –

সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *