সোনাগাজী প্রতিনিধি: সোনাগাজী উপজেলার কেরামতিয়া বাজারের ব্যাবসায়ী নুর হোসেন সবুজ (২৫) কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছিল স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা জুয়েল ও তার সহযোগীরা । জানা যায়, ১৭ এপ্রিল ২০১৬ রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকার সময় কেরামতিয়া বাজারস্থ তিন রাস্তার মোড়ে নিহত সবুজের চায়ের দোকানে হত্যা করে। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল সবুজের পিতা সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম জুয়েলকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০ এপ্রিল খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে ওই বাজারে সর্বস্তরের মানুষ মানববন্দন রচনা করে এবং ফেনী পুলিশ সুপার বরাবারে স্বারকলিপি প্রদান করে। আলোচিত এই হত্যা মামলায় আসামীদের গ্রেফতার করতে প্রশাসনের উচ্চ মহল থেকে নির্দেশনা থাকলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে ব্যার্থ হওয়ায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুলকে পরিবর্তন করলেও এখন পর্যন্ত আসামীদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়নি বলে নিহত সবুজের পরিবারের অভিযোগ ।
এদিকে দীর্ঘ তদন্তের পর আদর্শ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দিন গত ৭ ডিসেম্বর ১৬ মামলার চার্জশিট আদালতে প্রেরণ করেন। চার্জশিট অনুয়ায়ী উল্লেখিত ৯ আসামীর মধ্যে এজাহার নামীয় আসামী সাইফুল ইসলামকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে কোন সাক্ষপ্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অত্র মামলার আসামী থেকে অব্যাহতির জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রার্থনা করেন। অন্যদিকে অজ্ঞাতনামায় ৭-৮জন আসামীর মধ্যে কাউকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত না করায় হতাশায় ভুগছেন নিহতের পরিবার।
মামলার বাদী সাহাব উদ্দিন জানান, দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও অপশক্তির কারণে প্রশাসন আসামীদেরকে আইনের আওতায় নিচ্ছেন না এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, সবুজ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী এলাকার চিহ্নিত সস্ত্রাসী আইয়ুব আলী। কিন্তু তারা প্রভাবশালী হওয়ার কারনে বিভিন্ন মহলের চাপে আমরা তাদেরকে এজাহারভুক্ত আসামী করতে পারিনি। ইতিমধ্যে আইয়ুব আলী মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে ও আমার পুত্র বধু (সবুজের স্ত্রী), সবুজের শিশু সন্তান ইমরান, আমার ছোট ছেলে আরিপ কে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সবুজের স্ত্রী রজিনা আক্তার বলেন, আমি ঘর থেকে বাহির হইলে পথে-ঘাটে আমাকে ইভটিজিং করে এবং হুমকি দেয়। পুলিশ জানায়, এজাহার নামীয় ৮নং আসামী সোহাগ ও ৩নং আসামী নুর আলম মেম্বারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য চট্টগ্রাম , নোয়াখালী , কুমিল্লা জেলার কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছি। কয়েকজন আসামী দেশ ত্যাগ ও বাকীরা এলাকায় না থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।