ছাত্রলীগ নেত্রী এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | বাংলারদর্পন 

নিজস্ব প্রতিবেদক,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ২৬ ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী। তিনি  বলেন, ইফফাতের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। হল প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে কোনো প্রমাণ পায়নি। ফলে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগে ইফফাতকে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় তিন ছাত্রীকে কক্ষে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ছিল ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে। গভীর রাতে ছাত্রীরা তাঁকে কক্ষে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।

রাত ১২টা থেকে ভোর সোয়া ৪টা পর্যন্ত ওই নেত্রীকে বহিষ্কারের দাবিতে হলের ভেতরে ছাত্রীরা ও বাইরে কয়েক হাজার ছাত্র বিক্ষোভ করেন। সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীদের অভিযোগ ছিল, ইফফাত প্রায়ই ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন চালান। তবে এত দিন ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি। প্রশাসন তাঁদের আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না করায় তাঁরা হলের নেত্রীদের মাধ্যমে ওঠেন এবং তাঁদের কথামতো চলতে বাধ্য হন। সবশেষ গত রোববারের আন্দোলনে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ছাত্রীরা রাতে হল থেকে বের হয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। ওই দিন ও পরের দিন সোমবার আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় মঙ্গলবার রাতে বেশ কয়েকজনকে কক্ষে ডেকে চড়-থাপ্পড় দেন ইফফাত।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ছাত্রীদের চিৎকার শুনে সেখানে যান উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোর্শেদা খানম। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মোর্শেদা কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারেন। এতে তাঁর পা কেটে যায়। খবর পেয়ে অন্য ছাত্রীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ইফফাতকে মারধর করে তাঁকে আটকে রাখেন।

পরে বিক্ষোভের মুখে প্রথমে হল থেকে, পরে ছাত্রলীগ থেকে এবং সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইফফাতকে বহিষ্কার করা হয়। ছাত্রলীগ দুদিনের মাথায় বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়। পরে ২৪ নেতা-কর্মীকে পাল্টা বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।

বিশ্ববিদ্যালয়ও ওই ঘটনায় ২৬ ছাত্রীকে শনাক্ত করেছে বলে শৃঙ্খলা পরিষদের সভার একটি সূত্র  জানিয়েছে।  প্রক্টর গোলাম  বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এটি সভায় আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়টিও তদন্ত কমিটি দেখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *