যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে ভূঁয়সী প্রশংসায় ভাসল বাংলাদেশ | বাংলারদর্পন 

 

ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের দি টেরেস প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ এমপিরা বাংলাদেশকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন, তারা বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভূমিকার কথা বলেন এবং দেশের বর্তমান সরকারের ভূঁয়সী প্রশংসা করেন। বিট্রিশ এমপিরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে অর্ধ শতাধিক ব্রিটিশ এমপি উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতার ৪৭তম বার্ষিকীর এই আয়োজনে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন বক্তারা। সম্প্রতি বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাঁরা বাংলাদেশের উন্নয়নের পক্ষে ব্রিটিশ এমপিদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহবান জানান। আয়োজনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হোস্ট জিম ফিজপেট্রিক এমপি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা নিয়ে দুটি প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণও প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া দেশাত্ববোধক গানের সাথে নৃত্য পরিবেশিত হয়। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ এমপিদের হাতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচার ইংরেজি সংস্করনসহ বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন পরিসংখ্যান সম্বলিত তথ্য ব্রিটিশ এমপিদের হাতে তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় ও পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ ৭৫’র ১৫ই আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং সকল শহীদানদের স্মরণে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে ও বাংলাদেশের সিলেটে বোমা ও সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড এমপি বলেন, বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র। বাঙালির মানবিকতা আজ বিশ্বব্যাপি সমাদৃত। রোহিঙ্গাদের মানবিক দুর্যোগে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তর সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডনে আসার কথা উল্লেখ করেন। সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের ভূমিকাও স্মরণ করেন। বাংলাদেশের বন্ধু হিসাবে পরিচত এন মেইন এমপি বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন মাত্র ৪৭ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা সত্যই অনুকরণীয়।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের মানবিক ভুমিকারও প্রসংশা করেন স্টিভেন স্টিংস এম পি। বাংলাদেশের হাইকমিশনার কাওনাইন বলেন, যে কোন দেশে জাতীয় দিবস উদযাপন অবশ্যই গৌরবের। দেশ এখন জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে। এই অগ্রযাত্রায় ব্রিটেনের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। লিস ম্যাকানিজ এমপি বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তার প্রশংসা করে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেটা আবার প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের মানুষ।

এমপিসহ ২২জন পার্লামেন্টের এমপি বক্তব্য রাখেন। ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামীলীগ, যুক্তরাজ্য যুবলীগ, মহিলা যুবলীগ, যুক্তরাজ্য কৃষকলীগ, যুক্তরাজ্য তাতীলীগ, যুক্তরাজ্য শ্রমিকলীগ, যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও জাস্টিস ফর বাংলাাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকে নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন শহর থেকে আগত আওয়ামীলীগ সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়া ও বিভিন্ন কাউন্সিলের মেয়র, কাউন্সিলারবৃন্দ এবং কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা উপস্হিত ছিলেন।

বৃটিশ এমপিদের সামনে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের এই মহতি আয়োজনের জন্য আগত অতিথিরা দলটির প্রশংসা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *