সাহিদা সাম্য লীনা >
আমি এখনো পর্যন্ত মেলায় যাইনি।এইসব মেলাগুলো আমার পছন্দ না। তাই কেউ বললেও এড়িয়ে যাই। বলছিলাম শিল্প ও বাণিজ্য মেলার কথা। প্রতি বছর ফেনী ওয়াপদা মাঠে হয় এই দীর্ঘ সময়ের মেলা। একবার লেখার খাতিরে বিনামূল্যে ঢুকতে পারি। যদিও এমন সাধ ছিলনা। পাশে পরিচিত লোক বললো আপনি টিকিট নয়।এমনিতেই ঢুকার অধিকার রাখেন। কথা না বাড়িয়ে ঢুকি। সাথে আমার পুরো পরিবারের কিছু টীম। কেনাকাটাও করি অল্প স্বল্প। কিন্তু ভালো লাগেনি। চড়া দাম। তবে মানে যে ভেজাল তা দেখেই বুঝি। কাপড়, কসমেটিক্স ও ঘর গেরস্থালীর তৈজসপত্র সব কিছু নিম্নমানের বস্তু দিয়ে উৎপাদন। মেয়েদের শাড়ি ও থ্রিপিছ এর বিশাল বাউন্ডারী ঘেরা দোকান। জামা হাত দিয়ে ধরলেই আঁশ আঁশ মনে হয়।পাতলা। একটু টানলেই ছিঁড়ে যাবে দশা। সস্তামানের বিশেষভাবে তৈরি।কথিত আছে বাংলাদেশ ও সীমান্তের কোথাও এসব কাপড় একবারেই বিশেষ গোষ্ঠীর ও ব্যবসায়ীদের জন্য তৈরি হয়।এতদ অঞ্চলে সেসব কাপড় বিক্রী হয়না খুব একটা। আর সেইসব মাল বিক্রীর জন্য এরা সারাবছর অপেক্ষা করে এই সব মেলাগুলোর জন্য। কেননা প্রচুর লাভ এতে। বহিরাগতদের সাথে আলোচনায় জানা যায় তারা কেউ রংপুর, বাগেরহাট, ভোলা যশোর ,নড়াইল ,বরিশাল এর বিভিন্ন অঁজ পাড়া ও অঞ্চল হতে আগত। এরা মূলত ফেরীওয়ালা। কিন্তু বর্তমানে জমজমাট বাণিজ্য মেলার প্রসারে এদের কাটতি বেড়ে গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানের ব্যবসায়ীদের ব্যবসাকে করছে দ্বিগুন ক্ষতি। যেমন ফেনী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার নাম করে প্রতিবারের মতো এবারো চলছে
মেলা। বেশ কদিন যাবত মেলার বিরুদ্ধে ফেনীর সচেতন মহল ও ব্যবসায়ীরা। ফেনীর বিভিন্ন মার্কেট ঝিম মেরে বসে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের চরম বিপর্যয়ের সন্মুক্ষীণ হতে হয়। শহীদ বিপনী বিতান সারা বছর ক্রেতা সমাগমে ব্যস্ত থাকে। প্রতিটা দোকানের কোন না কোন ফ্লোর। এক স্থানীয় ব্যবসায়ী খুব রাগের সহিত জানালেন -মাইওলারা অঙ্গা মেলাত্তে ডলাডলি করের।হিয়েনে রং নাছের। হেগেন হালাই ইয়েনে আইবনি।অর্থাৎ মহিলারা এখন মেলাতে ঢলাঢলি করছে।ওখানে রং নাচের। ওগুলা ফেলে এখানে আসবে না কি।
পুরো একটা মাস চরম সংকটের মধ্যে দিয়ে পার করছে জেলার ব্যবসায়ীরা।তার উপর মেলায় একটা কিনলে দশটার ফ্রির মতো ভাওতাবাজির কারণেও শহরবাসী ও আশেপাশের গ্রাম থেকে ছেলেবুড়ো সকলে পরিবার নিয়ে ছুটে আসে মেলায় কিনতে ও অনেকে অবকাশ যাপনে। প্রচন্ড ভিড় বিশেষ করে ছুটির দিন ও সন্ধ্যা নামার পর। কথা উঠেছে দুই আয়োজকের বিরুদ্ধে।যাদের যোগসাজশে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নিজেদের বগল দাবায়। ফেনী আয়কর অফিসও এখানে প্রাপ্য। কিন্তু তাও তো দূরে থাক। নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণে মেলার একটা আয়োজক স্থানের লিপি থাকে ফেনী চেম্বার অব কমার্সের। জানা যায় তারা তাতেও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অর্থ লুটের পাঁয়তারাতে মহাউৎসবে লেগে আছে। এ যেন লুটের রাজ্য। কেউ দেখার নেই। ফেনীর সচেতন বাসী জেগে উঠেছে। অচিরেই ফেনীর মতো এমন আধুনিকায়ন শহরে অযাচিত নিম্ন বস্তুর চোখ ধাঁধানো জলশা থেকে মুক্তির যথাযথ পদক্ষেপের ঘোষণার অপেক্ষায়।