বিএনপির ৮ নেতার অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন  | বাংলারদর্পন 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির আট নেতার অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। এই আট অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ দিনে প্রায় ২৫কোটি টাকা উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, নাশকতা করা অথবা জঙ্গিদের অর্থায়নের জন্য এসব লেনদেন হয়েছে। গোয়েন্দারা টাকার উৎস এবং এই টাকা কোথায় গেছে তা নিয়ে তদন্ত করছে। তদন্তের স্বার্থে এসব নেতাকে গ্রেপ্তারও করা হতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। যে ৮ জন নেতার অ্যাকাউন্ট থেকে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে তাঁরা হলেন: ১. আবদুল আউয়াল মিন্টু ২. তাবিথ আউয়াল ৩. মোর্শেদ খান ৪. ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ৫. মির্জা আব্বাস ৬. আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ৭. নজরুল ইসলাম খান এবং ৮. হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আউয়াল মিন্টুর এইচএসবিসির অ্যাকাউন্ট থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি নগদ তিনটি চেকের মাধ্যমে মোট এক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। তিনটিই ক্যাশ চেক। ৩৫ লাখ এবং ২৫ লাখ টাকার দুটি চেক ঢাকায় নগদায়ন করা হলেও, তৃতীয় চেকটি উত্তোলন করা হয়েছে চট্রগ্রাম থেকে। ১৫ ফেব্রুয়ারি মিন্টুর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে নগদে দুটি চেকের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। এর একটি চেক নগদায়ন করা হয় কুমিল্লা থেকে। ২০ ফেব্রুয়ারি আবদুল আউয়াল মিন্টু ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে ৭৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। এর মধ্যে ২০ লাখ টাকার একটি চেক নগদায়ন করা হয়ে খুলনা থেকে। ২৫ ফেব্রুয়ারি আবদুল আউয়াল মিন্টুর এইচএসবিসি অ্যাকাউন্ট থেকে আবার দুটি চেকের মাধ্যমে এক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ৫০ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি তাবিথের ন্যাশনাল ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করা হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি একই ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হয় ৭০ লাখ টাকা। দুটি চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করা এই টাকার মধ্যে ২৫ লাখ উত্তোলন করা হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে।

বিএনপি নেতা মোর্শেদ খানের আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চারটি চেকের মাধ্যমে এক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয় নগদে। এর মধ্যে ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন হয়েছে নারায়ণগঞ্জ থেকে। মোর্শেদ খানের ছেলে ফয়সাল খানের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি তোলা হয় ৭৫ লাখ টাকা। এই অর্থ চারটি চেকের মাধ্যমে উত্তোলন হয়। বর্তমানে ফয়সাল দেশের বাইরে থাকার পরও কীভাবে এত বিপুল টাকা নগদায়ন করা হলো, সে এক প্রশ্ন। এছাড়া ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ডাচ বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ মার্চ থেকে ১২ মার্চের মধ্যে ১২ টি চেকের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের চেকগুলোর মধ্যে ৬ টি চেক উত্তোলন করা হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে।

মির্জা আব্বাসের ঢাকা ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ৫০ লাখ এবং ৪ মার্চ আরও ৫০ লাখ টাকা নগদায়ন করা হয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান ও হাবিব-উন-নবী সোহেলের অ্যাকাউন্ট থেকে গত দুই সপ্তাহে ৫৩ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

হঠাৎ করেই বিএনপির নেতাদের এত অর্থের প্রয়োজন অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *