নিজ্স্ব প্রতিবেদকঃ নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়া নিজের রাজনৈতিক অধিকার জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি একটি রাজনৈতিক দলের সভানেত্রী। আমি ভোট চাইতেই পারি। একটা দলের সভাপতি হিসেবে এটা আমার অধিকার।’
আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন ।
সম্প্রতি ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সরকারি সফরের পাশাপাশি নিজ দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট চান শেখ হাসিনা। বিষয়টির সমালোচনা করে বিএনপিসহ অনেকেই অভিযোগ করে, সরকারি খরচে নিজ দলের নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই সমালোচনার জবাবেই এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সবাইকে নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে। অবশ্যই আমাদের সকলকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকায় ভোট চাইতে হবে। সকলকে বলতে হবে এবং বোঝাতে হবে। একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই এদেশের মানুষ উন্নতি পায়।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়েই দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছে, আর দেশের উন্নতির ছোঁয়াটাও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই পেয়েছে। কাজেই এই কথাটা সকলকে বলতে হবে, যে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আর দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ চাই।’
বিএনপি জোটের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় আসে ভোগবিলাস করতে, অর্থসম্পদ বানাতে আর মানুষ খুন করতে। ওই বিএনপি-জামায়াত জোট মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে। মানুষের ক্ষতি করতে পারে। মানুষকে অত্যাচার করাই তাদের কাজ। আর আমাদের কাজ হচ্ছে, আমরা দেশকে শান্তিপূর্ণ করে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মানুষকে সেবা করাই আমাদের কর্তব্য। এই সেবা করার সুযোগটাই আমরা চাই।
ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের ফলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে আমরা অনেক কাজ করতে পারি। যার মাধ্যমে আমরা নিজেরাই অর্থ উপার্জনের পথ করে নিতে পারি। কিন্তু এদিকে কেউ কখনো দৃষ্টি দেয় নি। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মাঝে সেতুবন্ধন করার দয়িত্বটা বাংলাদেশ নিতে পারে। সেখান থেকেই আমদের বিরাট অর্থনেতিক অর্জন হতে পারে। কিন্তু এগুলো কখনো কেউ সেভাবে বোঝেও নাই, ভাবেও নাই।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে নিয়ে যাবো। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছি। একদিন আমরা উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবো।’
বৈঠকের শুরুতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় দলের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।
কার্যনির্বাহী এই সভায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে—মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরউল্লাহ, আ্যডভোকেট সাহারা খাতুন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।