বৃষ্টি দেখে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের কৃষকরা হতাশ 

 

মো.নাইম তালুকদার :  সুনামগঞ্জ. 

 

দুই এক দিন ঘ্ণ বৃষ্টি দেখে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের  হাওর পাড়ে মানুষের চোখে জল!  দুঃশ্চিন্তায় আর হতাশায় ভূগছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার হাওর পাড়ের মানুষজন। গেল বছর অকাল বন্যায় বরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় হাওর পাড়ের মানুষজন এবার ধান চাষ করছেন বেশি করে। সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মান করে ধানের কঠোর নিরাপত্তা দিলে ও  হাওর পাড়ের  মানুষজনের মনে অশান্তি বিরাজ করছে।  যে গেল বছর অকাল বন্যায় অনেক হাওর ডোবার আগে অতি বৃষ্টির জমাটবদ্ধ  ডোবরার পানিতে তলিয়ে গিয়েছিলো কৃষকের স্বপ্ন বরো ধান।  অনেক কৃষকের ধারণা যে,অতি বৃষ্টির জমাট পানি তলিয়ে নিতে পারে তাদের সোলালী ফসল। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ছোটবড় গুরুত্বপূর্ণ হাওরে মন্দের ভালো বাঁধ নির্মান করলে ও হাওরের  পানি নেমে যাওয়ার কোন রাস্তা রাখা হয়নি। এনিয়ে কৃষকদের মনে আতংক বিরাজ করছে। অনেকের ভাবনা অতি বৃষ্টি যদি হয় ডোবরার পানি তলিয়ে নিতে পারে তাদের স্বপ্ন। 

 

দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ৮ ইউনিয়নের ছোট বড় প্রায় সব ক’টি হাওরে বাঁধ নির্মান করা হয়েছে। ‘ডোবরা’ পানি নিষ্কাশনের জন্য কোন রাস্তা রাখা হয়নি।  বৃষ্টি পড়লে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি কি হবে? কোন পথে বের হবে এনিয়ে ভাবছেন হাওর পাড়ের কৃষকগোষ্ঠী। এবং এটিই এখন ফসলের প্রাণঘাতীর বড়  আশঙ্কা দেখছেন তারা।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, কৃষিবান্ধব এ সরকার পানি সেঁচের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। যদি পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা বা ‘ডোবরার’ সৃষ্টি হয়ে ধান পানিতে তলিয়ে যায় তাহলে সরকারী ভাবে যত সম্ভব সেচ মেশিন বসানো হবে। এ নিয়ে সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের মাঝে  আলোচনা ও  হচ্ছে। তবে কতটা সক্রিয়ভাবে এগুচ্ছে এসব আলোচনা তা জানা যায়নি।

 

পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামের সাধারণ কৃষক, আলমগীর মিয়া  বলেন, বাঁধ ডুবে এখন হাওর তলিয়ে যাবে এনিয়ে এখন আর ভাবছি না। ভাবছি, হাওর তলাবে এবার ডোবরার পানিতে। এখন যদি সরকার এর কোনো ব্যবস্থা না গ্রহণ করেন তাহলে সোনার ফসল এবারো ঘরে উঠবে না। 

পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের ডিগারকান্দি গ্রামের খাচিভাঙ্গা হাওরের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘খাচিভাঙ্গা আর চুড়াভাঙ্গা মিলিয়ে ডিগারকান্দি, নাজিমপুর, ঘোড়াডুম্বুর, জালিয়া, হরিনগর ও আক্তাপাড়া গ্রামের প্রায় বিশ হাজার কৃষকের জমি আছে এ হাওরে। বাঁধ হয়েছে। আমরা তাতে খুশি। এখন নতুন চিন্তা হচ্ছে বৃষ্টি এলে ডোবরা বা জলাবদ্ধতায় হাওর তলাতে পারে। তাই সেচের আগাম প্রস্তুতি রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে  খুব প্রয়োজন মনে করি।  

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদের সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

এব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম বলেন , শেখ হাসিনা  সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। সরকার হাওর পাড়ের কৃষদের জীবনমান উন্নয়নের চিন্তায় সব সময় ব্যস্ত থাকেন। হাওর পাড়ের কৃষকদের  জন্য সুনামগঞ্জের হাওরে হাওরে বাঁধ নির্মান করেছেন। কৃষকদের  ঘরে ধান তুলার জন্য যা কিছু প্রয়োজন হয় শেখ হাসিনা সরকার তার ব্যবস্হা করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *