বিদেশিদের কাছে না গিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে – ওবায়দুল কাদের

 

নিউজ ডেস্ক: বিদেশিদের কাছে নালিশ না করে দেশের মানুষের সমর্থন নেয়ার পরামর্শ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করলেও তারা জনগণের কাছে যাচ্ছে না। বিএনপি চাইলে আন্দোলন করুক। তবে শুধু শুধু এই আন্দোলনে ভালো ফল আসবে না। তাদেরকে অবশ্যই জনগণের কাছে যেতে হবে।

শনিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর-ঢাকা বাইপাস সড়ক মেরামত কাজের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয় এমন নজির নেই বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন করবে কি করবে না সেটা তাদের ব্যাপার। যথাসময়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়া অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনকে সরকার সকল প্রকার সহায়তা করবে। আর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগেরও প্রশ্নই আসে না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনকালীন সরকার যেভাবে ইনকামবেন্সি থাকে, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশে থাকবে। রুটিন ওয়ার্ক থাকবে, মেজর কোনো পলিসি, ডিসিশন এখানে নেওয়ার সুযোগ নেই। শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচন কমিশনকে একটি ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন অনুষ্ঠানে ফেসিলিটেট করবে, সহযোগিতা করবে এবং যেসব মন্ত্রণালয় নির্বাচন সংক্রান্ত, সেই মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন নিয়ন্ত্রণ করবে। সরকার এখানে ইচ্ছে করলেও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কারণ বিষয়টি তখন নির্বাচন কমিশনের আওতায়।’

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কারচুপির বা নির্বাচন বানচালের কোনো রেকর্ড নেই দাবি করে কাদের বলেন, ‘আমি শুধু একটা কথা বলতে চাই, বিএনপি কেন ভয়ে ভুগছে? বিএনপির ট্যাগ রেকর্ড খারাপ। কোনো সময় আওয়ামী লীগ কারচুপি করার, জালিয়াতি করার, কাউকে নির্বাচনে যারা জিতবে, জনগণের রায়কে বানচাল করার কোনো রেকর্ড আওয়ামী লীগের নেই। নির্বাচনের আগেও করিনি, পরেও করিনি। কাজেই বিএনপি এসব অভিযোগের জন্য অভিযোগ করছে, নালিশের জন্য নালিশ করছে। তাঁরা আসলে আন্দোলন করতে গিয়ে জনগণের সাড়া না পেয়ে, এখন তাদের নালিশ ছাড়া আর কোনো ক্যাপিটাল নেই। দেশে নালিশ শেষ, দেশের মানুষের কাছে তাঁরা নালিশ করে না।তাঁরা নালিশ করে বিদেশিদের কাছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবন্দি হওয়া বা কারামুক্তির ব্যাপারে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই মামলাগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মামলা, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের না। আদালতেই এই মামলাগুলো বিচারাধীন ছিল, একটি মামলায় নিম্ন আদালতে রায় হয়েছে। তাতে বেগম জিয়া দণ্ডিত হয়েছেন। এটা সম্পূর্ণভাবে আদালতের বিষয়। এরপর যদি উচ্চ আদালতে তিনি মুক্তি পান, সেখানে আমাদের তো করার কিছু নেই।এবং এসব বিষয়ে আমরা অহেতুক কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ বিষয়টা সরকারের নয়, আদালতের।’

তবে খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকলেও নির্বাচন প্রক্রিয়া চলতে থাকবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘আদালত তাঁকে মুক্তি দিতে পারে, আদালত কি নির্বাচন পরিচালনা করবে? সরকার কি আদালতকে বলবে, বেগম জিয়াকে মুক্তি দাও? এটা কি আদালতকে সরকার বলতে পারে? তাহলে আর বিচার বিভাগের স্বাধীনতার দাবি কেন করছে বিএনপি বারবার? এটা একটা বিষয় গেলো, আর একটা বিষয় হচ্ছে, তাঁরা যে শর্তগুলো আরোপ করেছে; আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচনে যাবে কী যাবে না সেই দায়িত্ব বিএনপির। বিএনপি নির্বাচনে এলে স্বাগত, নির্বাচনে না এলে তাতেও আমাদের কিছু করার নেই। নির্বাচন নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবে। নির্বাচন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না।’

নির্বাচনের তফসীল হওয়ার আগে লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিয়ে কথা বলার প্রশ্ন আসে না বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী। এ সময় তাঁর সঙ্গে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *