ফেনী আদালতের ঐতিহাসিক রায় : মিথ্যা মামলায় খালাস পেলেন কাজী মিজান

 

মোঃ শফিউল আজম ভান্ডারীঃ

২১মার্চ মঙ্গলবার ফেনী নারী-শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মোঃ আসাদুজ্জমান খান এক ঐতিহাসিক রায়ে বিশিষ্ট লেখক গবেষক,  সম্পাদক-প্রকাশক ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাতা জাতীয় মানবাধিকার নেতা কাজী মিজানুর রহমান মিস্টার কে বেকসুর খালাস [স্বসম্মানেঅভ্যহতি] দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে – কুখ্যাত ১/১১’র জরুরী অবস্থা চলাকালে সেনাক্যাম্প ভিত্তিক গড়ে উঠা ভদ্রলোকের মুখোশধারী দালাল চক্রের মুখোশ উম্মোচনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখায় তারা কাজী মিজানের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ফেনী মডেল থানায় হয়রানিমূলক পাতানো মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

 

ফেনী থানার তৎকালীন দূর্ণীতি পরায়ন অযোগ্য ওসি কামরুল জেনেশুনেই ফেনীর ইতিহাস কলংকিত করে এ পাতানো মামলাটি টাকার বিনিময়ে রেকর্ড করে এবং মানবাধিকার নেতা কাজী মিজানকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করে।তখন এ ঘটনায় ফেনীর সুশীল সমাজ সহ সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চক্রান্তকারীরা কাজী মিজানকে কারারুদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা বিভিন্ন মিডিয়ায় মিথ্যা ও একতরফা ব্যাপক সংবাদ প্রচার করে কাজী মিজানের চরিত্র হননের মত ঘৃনিত কাজ জোরে-শোরে শুরু করে। দুনিয়ার চিরন্তন নিয়মে মিথ্যা কখনো স্থায়ীত্বব লাভ করেনা এবং মিথ্যার পতন অবশ্যম্ভাবী।  ২১ মার্চ ফেনীর আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে সেই ঐতিহাসিক সত্য আবারো প্রতিষ্ঠিত হলো।

 

জানা গেছে ৩০ অক্টোবর-০৭ তারিখে ফেনী সরকারী কমার্স কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী দাগনভূঞাঁ উপজেলার  সেকান্তরপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক মিন্টুর মেয়ে সাহিদা আক্তার সোনিয়া রহস্যজনক নিখোজ হয়। পিতা মাতা তাদের নিখোজ মেয়েকে উদ্ধারে হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির তৎকালীন জেলা সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান মিস্টারের কাছে সহায়তা চাইলে তিনি পেশাগত কারনে উদার মনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি কলেজ অধ্যক্ষের কাছে মেয়ের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং স্থানীয় পত্র পত্রিকায় নিখোজ সংবাদ প্রচার করেন। ১৪ ডিসেম্বর ০৭   মেয়ে ফিরে আসে। ফিরে আসার তিন দিন পরে ১৬ ডিসেম্বর অপার রহস্যের জম্ম দিয়ে অজ্ঞাত কারনে মেয়েটিকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। ঐদিন মেয়ের পিতা মোজাম্মেল হক মিন্টু বাদী হয়ে মুখোশধারী দালালচক্রের প্রকাশ্য সহায়তায় ফেনী মডেল থানায় মিথ্যা পাতানো এজাহার দাখিল করে।

 

১৮ ডিসেম্বর অযোগ্য ওসি কামরুল কাজী মিজানকে চাঁ খাওয়ার কথা বলে থানায় ঢেকে নিয়ে ষডযন্ত্রমূলক ভাবে আটক করে একই দিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। প্রভাবশালি চক্রান্তকারীরা বাঘবন্দী খেলায় প্রাথমিকভাবে সফল হয়, এবং কাজী মিজান যাতে আইনি সহায়তা না পান সে খেলায় মেতে উঠে। রহস্যজনক কারনে বেশ কয়েকজন আইনজিবী কাজী মিজানের পক্ষে ওকালতনামা জমা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

 

কোন উপায়ন্তর না দেখে তিনি কারাগার থেকে আইনি সহায়তা চেয়ে ফেনী বারের বিজ্ঞ আইনজিবী এ.কে.এম ফয়েজুল হক মিলকির কাছে চিঠি পাঠান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে জনাব মিলকি সাহেব কাজী মিজানের পক্ষে আদালতে সর্বাত্মক আইনী লড্ইয়ে অবতীর্ণ হন। তার অক্লান্ত পরিশ্রম আর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিজ্ঞ আদালত কাজী মিজানের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন। সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বীরদর্পে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন কাজী মিজানুর রহমান মিস্টার।

 

শুরু হয় মামলার চুড়ান্ত বিচারিক প্রক্রিয়া। স্বাক্ষীদের জেরা,  আত্মপক্ষ সমর্থন ও দপায় দপায় যুক্তিতর্ক চলতে থাকে। এড. মিলকির প্রানবন্ত আইনি লডাই আইনজিবী সহ আদালত সংশ্লিষ্ট সকলের নজর কেড়েছিলো। দীর্ঘ শুনানীর পরে অবশেষে ২১ মার্চ ১৮ তাররিখে ফেনী নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ আসাদুজ্জমান খান দীর্ঘ একযুগের প্রতীক্ষীত ঐতিহাসিক রায় ঘোষনা করেন এবং তৃনমূলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা কাজী মিজানুর রহমান মিস্টারকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

 

ফেনীর সচেতন মহল মনে করেন ফেনীর আদালতের এ  ঐতিহাসিক রায়ের মধ্য দিয়ে চক্রান্তকারীদের মুখে ছাই লেগেছে এবং সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে বিজ্ঞ আদালতের এ রায় বিশ্বব্যাপি মানবাধিকার কর্মিদের জন্য অপুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আর ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন রায় প্রদানকারী বিজ্ঞ বিচারকমোঃআসাদুজ্জমান খাঁন।

 

রায় ঘোষনার পরপরই সোনাগাজী প্রেসক্লাব,  আইনজীবি, সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যাবসায়ী, মানবাধিকার কর্মি সহ বিভিন্ন পেশাজিবী মহলের পক্ষ থেকে কাজী মিজান কে উঞ্চ অভিনন্দন জানান। দেশ বিদেশের মানবাধিকার কর্মিরাও উচ্ছাস প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে কাজী মিজান বলেন জরুরী অবস্থার সুযোগ নিয়ে যড়যন্রকারীরা ফেণী থানা পুলিশের সাথে যোগ সাজশে সম্পুর্ন উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং নাটকিয়ভাবে আমাকে এই মামলায় জড়িয়েছে।তারা নিজেদেরকে আইনের উর্ধে বলে মনে করেছিলেন।শড়যন্র আর মিথ্যা যত নিখুত হোকনা কেন, সত্যের একটা আলাদা ক্ষমতা আছে। সত্য এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য আমি যে কোন বিপদ মাথায় নিতে সম্মত আছি।আমি যখন সমাজের হতাশাগ্রস্থ বিপন্ন মানুষের জন্ন কাজ করি তখনই এক শ্রেনীর পরশ্রীকাতর ব্যাক্তি বা গোষ্টি বার বার আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সুদৃষ্টি দেওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *