রোহিঙ্গা সংকট: প্রধানমন্ত্রীকে ‘দয়ালু মা’ বললেন ৩নোবেল জয়ী

 

ডেস্ক রিপোর্ট :

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো জাতিগত নিধনকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন তিন নারী নোবেল বিজয়ী। এ নৃশংসতার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে তারা সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এ মানবিক সংকটে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দয়ালু মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন নোবেল বিজয়ী নারী। তারা হলেন- শিরিন এবাদি, মাইরিয়াদ ম্যাগুইয়ার ও তাওয়াক্কুল কারমান। এসময় তারা এসব কথা বলেন।বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ইহসানুল করিম বলেন: নোবেল বিজয়ীরা বলেন, জাতিগত নিধনযজ্ঞ মিয়ানমার সরকারের একটি পদ্ধতিগত নীতি। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়া দরকার। রাখাইনে গণহত্যা চালানোর জন্য মিয়ানমারকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং সারা বিশ্বকে এ গণহত্যার বিপক্ষে দাঁড়াতে হবে।

‘‘তারা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাদের কাছে থেকে শোনা কাহিনী বর্ণনা করেন। বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার বর্ণনা শুনে অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। এটি একটি গণহত্যা। বিশ্ব কিছুতেই এ নিয়ে নীরব থাকতে পারে না।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণকে তারা ধন্যবাদ জানান।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দয়ালু মা অভিহিত করে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের এখন বেশি করে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।

তিন নোবেল বিজয়ী বলেন, তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার আগে মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন একশ’ নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। পালিয়ে আসা অধিকাংশ শিশুই পিতা হারিয়েছে। তাদের হত্যা করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া উচিত উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘সংবাদপত্রে যতটুকু এসেছে পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’’

ইহসানুল করিম আরও বলেন: ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৭ সাল থেকে কিভাবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসতে শুরু করে তা বর্ণনা করেন। বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৮ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। আমরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি।

প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফর করেছেন। এ সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে প্রধানমন্ত্রী তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ ও পরিবেশ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।’’

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড.গওহর রিজভী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *