জহুর উল হক, পর্তুগাল : আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি ?
২১শে ফেব্রুয়ারি, অমর একুশে, মহান শহীদ দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রথম ইতিহাস । বাঙালির ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় শোকের দিন। বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৫২ সালের এদিন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন দামাল ছেলেরা। তাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা পেয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষার স্বীকৃতি।
১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ২১শে ফেব্রুয়ারিকে এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে একযোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে দিবসটি । বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থায়ী শাহীদ মিনার নির্মিত হয়, এরই ধারাবাহিকতায় পর্তুগালে দুইটি স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে একটি রাজধানী লিসবন অন্যটি পোর্তু শহরে । ২০১৫ সালে পর্তুগালে প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপিত হয় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে । দ্বিতীয় স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপিত হয় ২০১৬ সালে পোর্তু শহরে ।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় পর্তুগালেও যথাযোগ্য মর্যাদায়, বাংলাদেশ দুতাবাস ও জুনতা ফ্রেগুজিয়া আঘোইস যৌথভাবে লিসবন মিউনিসিপ্যালিটি এবং পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সহযোগীতায় পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে শহীদ দিবস পালিত হয়।
সকাল ১০টায় পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ দূতাবাস এর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ৷ বাংলাদেশ দুতাবাস এর পরিবারবর্গ, জুনতা ফ্রেগুজিয়া আঘোইস, জুনতা ফ্রেগুজিয়া সান্তা মারিয়া মায়র, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গসংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ৷ ১০.৫০ মিনিটে মান্যবর রাষ্ট্রদূত এবং পর্তুগীজ আতিথিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন ৷ শাহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়| অনুষ্ঠান শেষে জল খাবার এর আয়োজন করা হয় ৷
একুশের রাত ৮টায় বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তু, পর্তুগিজ ইস্পাকো টি অ্যাসোসিয়েশন ও পর্তুগিজ সরকারের সহযোগিতায় যৌথভাবে এবারের একুশের অনুষ্ঠান আয়োজন করে পোর্তু শহরে । এ সময় শাহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত । এ ছাড়াও কমিউনিটি অব পোর্তো নেতৃবৃন্দ, পর্তুগালের ইমিগ্রেশন হাইকমিশনার পেদ্রো কালাদো, পর্তুগিজ স্যোসালিষ্ট পার্টির নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ড. ম্যানুয়েল পিজারো, এন্তোনিও ফনসেকাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গসংগঠন ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।