ওমর ফারুক :
চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা অাছাদগঞ্জ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ ইদ্রিছকে বিদায় দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও মসুল্লিদের মধ্যে টান টান উত্তেনা জেনা বিরাজ করছে।আজ আছরের নামাজের সময় এক পক্ষ অপর পক্ষকে আক্রমণ ও মারধর করার জন্য কয়েকশ লোক ভাড়া করে নিয়ে এসেছে এধরণের গুজব ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। অবশ্য ইতিপুর্বে কোতোয়ালী থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।ফলশ্রুতিতে আছরের নামাজের সময় মসজিদের আশেপাশে বেশকিছু পুলিশ সদস্যকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় আছাদগঞ্জ জামে মসজিদটি আমানতুন নুর ওয়াকফা ওয়াকফা এষ্টেট দ্বারা পরিচালিত একটি মসজিদ। মসজিদের আশেপাশের কয়েকটি দোকান মসজিদের আয়ের প্রধান উৎস। এএই ওয়াকফা এষ্টেট ও মসজিদের বর্তমান মোতোয়াল্লী আনিছ কাদেরী।দীর্ঘ দিন তিনি মোতোয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করলেও মসজিদ পরিচালনা নিয়ে কোন বিতর্ক সৃষ্টি না হওয়ায় তিনি তেমন মাথা ঘামাতেন না।সাম্প্রতিক মসজিদের পুর্বের কমিটিতে কিছুটা সংযোজন ও পরিবর্তন এনে জনৈক জাকির হোসেনকে সভাপতি ও সেকান্দারকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি নতুন কমিটি করা হয়।এই কমিটি ইমাম সাহেবকে ১৫ মিনিট দেরী করে মাগরিবের নামাজ পড়ানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু কোরআন হাদীসের আলোকে সিদ্ধান্তটি সঠিক না হওয়ায় ইমাম সাহেব এর বিপক্ষে মত দেন।তিনি ৫ মিনিট দেরীতে নামাজ পড়ার মত দেন। এ নিয়ে ইমাম সাহেব ও কমিটির মধ্যে মত বিরোধ দেখা দিলে কমিটি ২ মাস পুর্বে ইমাম সাহেবকে বিদায় দেওয়ার কথা জানিয়ে দেয়। সেই অনুযায়ী গতকাল শনিবার নির্ধারিত তারিখে নতুন কমিটি ইমাম সাহেবের যাবতীয় পাওনাদি বুঝিয়ে দিয়ে ইমাম সাহেবকে বিদায় দিয়ে দেয়।কিন্তু অধিকাংশ মসুল্লী এভাবে ইমাম সাহেবকে বিদায় দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয় এবং তাদের সাথে বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দের বাক বিতন্ডা হয়।এরই প্রেক্ষিতে নতুন কমিটি কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।এদিকে অনেক মসুল্লী বিষয়টি সুরাহা করার জন্য মোতোয়াল্লীকে ফোন করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। মেতোয়াল্লী এলাকায় এসে জানতে পারেন নতুন কমিটির লোকজন প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার জন্য কয়েকশ বহিরাগত লোক এনে মসজিদের আশে পাশে জড়ো করছে।তাই তিনি বিকেল ৪টায় এলাকার কয়েকজন লোক নিয়ে কোতোয়ালী থানায় গিয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন।পরে আছরের নামাজের সময় দাঙ্গার আশংকায় কোতোয়ালী থানার প্রায় ১৫ জন পুলিশ মসজিদের আশেপাশে অবস্থান নেই।
মসজিদের বর্তমান মোতোয়াল্লী আনিছ কাদেরীর নিকট এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠন বা পরিবরতন হলে অবশ্যই মোতোয়ালীর অনুমোদন প্রয়োজন,কিন্তু এই কমিটি নিজেরা কমিটি গঠন করে নিজেদের মত করে মসজিদ পরিচালনা করছে, তারা আমার কোন অনুমোদন নেয় নাই।এবং ইমাম সাহেবকে বিদায় দেওয়ার ব্যাপারে আমাকে কিছু বলে নাই।আমি এলাকার মসুল্লীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি।এই কমিটি বৈধ কমিটি নয়।আমি চাই সকল মসুল্লীদের মতামতের ভিত্তিতে সবার নিকট একটি গ্রহণ যোগ্য কমিটি গঠন করা হউক।ইমাম সাহেব দীর্ঘ ২০/২২ বছর পর্যনত অত্র মসজিদে ইমামতি করে আসছেন।আজ পর্ষম্ত এমন কোন দোষত্রুটি তার মধ্যে পরিলক্ষিত হয় নাই যে তাকে বিদায় দিতে হবে।কারও ব্যক্তিগত আক্রোশের জন্য দশ জনের মতের বিরুদ্ধে কাজ করলে তার পরিণতি কখনও ভাল হবে না।মসুল্লীরা ইমামের বিদায়ের কারণ জানতে চাই।তা তাদেরকে জানানো উচিত।আমি মোতোয়াল্লী হিসাবে আমাকে মসজিদের আা্য় ব্যয়ের কোন হিসাব দিচ্ছনা।এসব অনিয়ম দুর করতে হবে।সকলের সমন্বিত মতামতের ভিত্তিতে নিয়ম কানুন মেনে মসজিদ পরিচালনা করতে হবে।তবে আছরের নামাজের পর বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলতে চাইলে তাদেরকে পাওয়া যায় নাই যদিও তারা জামাতে উপস্থিত ছিল।
কোতোয়ালী থানা ও সি মোঃ জসিমের নিকট জানতে চাইলে তিনি এক পক্ষের অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান এবং আছরের নামাজের সময় পুলিশ পাঠানোর বিষয়টিও স্বীকার করেন।