চট্টগ্রামে বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ ২ মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো : বর্তমানে আমাদের দেশের যুব সমাজের অধঃপতনের অন্যতম প্রধান কারণ মাদকাসক্তি। দেশের যুবসমাজের একটি বড় অংশ আশংকাজনকভাবে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ফেন্সিডিলসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদকের টাকা জোগাড়ের জন্য মাদকাসক্ত যুব সমাজ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষার জন্য র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশব্যাপী বিভিন্ন মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারন কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এ বৎসর ০১ জানুয়ারি ২০১৭ হতে অদ্য ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ৩১৯ টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মোট ৪৮ টি ম্যাগাজিন এবং ৩,৪৭৭ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি/কার্তুজ উদ্ধারের পাশাপাশি ৭৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৭৫২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এর পাশাপাশি ৩০ হাজার ৫৫৭ বোতল ফেন্সিডিল, ২,২৫৩ বোতল বিদেশী মদ ও বিয়ার, ০৫ লক্ষ ১২ হাজার ১৭৫ লিটার দেশীয় তৈরী মদ, ৭১৮ কেজি ২৮০ গ্রাম গাঁজা, ৩৬০ গ্রাম হেরোইন এবং ৪০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করেছে।

 

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, ফেনী ক্যাম্প গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি মাইক্রোবাস যোগে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য নিয়ে চট্টগ্রাম হতে ঢাকার দিকে যাচ্ছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখ ১৭১০ ঘটিকার সময় স্কোয়াড্রন লীডার শাফায়াত জামিল ফাহিম, পিপিএম এর নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড মডেল থানাধীন বড় দারোগারহাটস্থ ওজন স্কেলের সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর একটি বিশেষ চেকপোষ্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশী করতে থাকে। এ সময় চট্টগ্রাম হতে ঢাকাগামী ০১টি মাইক্রোবাসের গতিবিধি সন্দেহজনক হলে র‌্যাব সদস্যরা মাইক্রোবাসটিকে থামানোর সংকেত দিলে ড্রাইভার গাড়িটি না থামিয়ে র‌্যাবের চেকপোস্ট অতিক্রম করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা উক্ত গাড়ির পিছু নেয়। এক পর্যায়ে রাস্তায় যানজট থাকার কারণে উক্ত মাইক্রোবাসটির ড্রাইভার গাড়িটিকে রাস্তার পাশে থামিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে আসামী ১। মোঃ কামাল আহম্মেদ (৪৩), পিতা-মৃত বাদশা খলিফা, গ্রাম-মির্জারচর মুন্সিকান্দী, থানা-শিবচর, জেলা-মাদারীপুর এবং ২। মোঃ সুজন মিয়া (২৬), পিতা-শাহজাহান মাতবর, গ্রাম-ভাউরকান্দী, থানা-শিবচর, জেলা-মাদারীপুরদ্বয়কে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আসামীদের দেহ তল্লাশী করে ১,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় ও আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেখানো মতে মাইক্রোবাসের (ঢাকা- মেট্রো-চ-১৫-৯৬২৪) ভিতরে সীটের নীচে সুকৌশলে লুকানো অবস্থায় শপিং ব্যাগের মধ্যে ৩৭,৮০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং উক্ত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। উল্লেখ্য, আটককৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সুকৌশলে গাড়ি চালানোর অন্তরালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করে আসছে। উদ্ধারকৃত সর্বমোট ৩৮,৮০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটের আনুমানিক মূল্য ০১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা।

 

গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মালামাল সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ১৯(১) টেবিল এর ৩(খ)/২১/২৫ ধারা মোতাবেক চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *