বিএনপির মনোনয়ন কিনলেন সেই মেজর আখতার > বাংলারদর্পন 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে রোববার থেকে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করেছে বিএনপি। এরই মধ্যে দলটির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে হঠাৎ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন।

সংস্কারপন্থী হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন বিএনপির মূলধারার রাজনীতির বাইরে ছিলেন। তবে মেজর আখতার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে এই নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে আশার আলো দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পুরোটা সময় আখতারুজ্জামান সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি নির্বাচন করার আগ্রহের কথা দলের হাইকমান্ডকে জানান। একই ইচ্ছার কথা বার্তাবাহকের মাধ্যমে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও জানান।

পরে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল ছাড়াও মেজর আখতারুজ্জামানের বিষয়ে আলোচনা হয়। খালেদা জিয়াও আখতারুজ্জামানের আগ্রহের কথা জেনেছেন বলে বৈঠকে উপস্থিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি আমার আগ্রহের বার্তা ম্যাডাম বরাবর পৌঁছেছি। পরে তিনি বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরও বিষয়টি জানিয়ে আমাকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে বলেছেন। ম্যাডাম এও বলেছেন- আখতার তো আজ কার্যালয়ের নিচেই বসে আছে।’

তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের পছন্দের তালিকায় নিশ্চয়ই আমি আছি। না হলে তিনি আমার নাম নিবেন কেন? তিনি নিজে থেকে আমাকে মনোনয়নপত্র কিনতে বলেছেন। মেজর আখতারুজ্জামান দাবি করেন, বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনতে পারছি, এটাই আমার প্রাথমিক বিজয়।

বিএনপিতে স্পষ্টভাষী বলে পরিচিত এই নেতা জানান, তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ২০০১ সালের আগে। কিন্তু, ওইবছরই দল থেকে নির্বাচন করেছিলেন। আর এ ঘটনার মাধ্যমেই সে বহিষ্কারাদেশ উঠে গিয়েছিল।

মেজর আখতারুজ্জামানের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বৈঠকে তাবিথ আউয়াল ছাড়াও আখতারুজ্জামানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কে মনোনয়ন পাবেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগ্রহীদের পৃথকভাবে সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়ে তা ঠিক করবেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দলের মনোনয়ন বোর্ড সোমবার বসবে। তবে প্রার্থিতার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন খালেদা জিয়াই।’

রোববার সকালে শুরুতেই দলের সহ-প্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। দুপুর পর্যন্ত মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, আসাদুজ্জামান রিপন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতবছরের ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১ ডিসেম্বর থেকে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করে।

এরপর গত ৯ জানুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে উপ-নির্বাচন, সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ডিএসসিসির সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

তফসিল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কেনা ও জমা দেওয়া যাবে আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। আবেদনকারী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি। তা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি।

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচার চালানো যায় না। সে অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *