কক্সবাজারে ৫লক্ষ ইয়াবাসহ গ্রেফতার ৮ – বাংলারদর্পন

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো ; বর্তমানে আমাদের দেশের যুব সমাজের অধঃপতনের অন্যতম প্রধান কারণ মাদকাসক্তি। দেশের যুবসমাজের একটি বড় অংশ আশংকাজনকভাবে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদকের টাকা জোগাড়ের জন্য মাদকাসক্ত যুব সমাজ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষার জন্য র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশব্যাপী বিভিন্ন মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারন কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এ বৎসর ০১ জানুয়ারি ২০১৭ হতে অদ্য ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ৩০৫ টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মোট ৪৮ টি ম্যাগাজিন এবং ৩,৪৫৬ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি/কার্তুজ উদ্ধারের পাশাপাশি ৭৪ লক্ষ ২১ হাজার ৮৯৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এর পাশাপাশি ২৭ হাজার ৪০৯ বোতল ফেন্সিডিল, ২,২৫৩ বোতল বিদেশী মদ ও বিয়ার, ০৫ লক্ষ ১২ হাজার ১৭৫ লিটার দেশীয় তৈরী মদ, ৭১৮ কেজি ২৮০ গ্রাম গাঁজা, ৩৬০ গ্রাম হেরোইন এবং ৪০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করেছে।

 

দীর্ঘদিনের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও গোয়েন্দা অনুসন্ধানের ফলশ্রুতিতে র‌্যাব-৭, জানতে পারে যে, মায়ানমার এবং এ দেশীয় চোরাচালানীদের বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্র মাছের ব্যবসার আড়ালে ইয়াবার চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম সমুদ্রে টহল জোরদার করে টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম রুটে অভিযান চালিয়ে ইয়াবার বেশ কয়েকটি বড় বড় চালান আটক করে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৭, টেকনাফ ক্যাম্প গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, একটি মাদক সিন্ডিকেট ফিশিং ট্রলারের অন্তরালে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে মায়ানমার হতে কক্সবাজারের দিকে যাত্রা করেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখে ০৬৪৫ ঘটিকার সময় লেঃ কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদ, অধিনায়ক, র‌্যাব-৭ এর নেতৃত্বে একটি চৌকষ আভিযানিক দল কক্সবাজারের কলাতলী গভীর সমদ্রে একটি মাছ ধরার ট্রলারকে ধাওয়া করে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত ট্রলাটি তল্লাশী করে ট্রলারের মাছ রাখার প্রকোষ্ঠের ভিতর সুকৌশলে লুকানো ০৫ লক্ষ পিস ইয়াবাসহ নি¤œবর্ণিত ০৮ জন আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা মায়ানমার হতে ০৫ লক্ষ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের নামীয় পরিচয় নি¤œরুপ ঃ

 

১।  মোঃ কালু মাঝি (৪৫), পিতা- মৃত নুর মোহাম্মদ, গ্রাম- সরেঙ্গা, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

২। মোঃ রফিক (৫২), পিতা- মৃত আব্দুল জলিল, গ্রাম- খুলুশকুর, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

৩। মোঃ রফিক (৪৫), পিতা- মৃত ছালেহ আহমদ, গ্রাম- গহিরা, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

৪। মোঃ হাসান (৩০), পিতা- মৃত খবির আহমেদ, গ্রাম- দক্ষিণ সরেঙ্গা, সুন্নাপাড়া, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

৫। হাসমত আলী (৩৫), পিতা- মজ্জল আহম্মদ, গ্রাম- গহিরা, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

৬। নুরুল আলম (৩৭), পিতা- মৃত সোলেমান, গ্রাম- গহিরা, দোবাসীর হাট, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

৭। মোঃ নাসির (৪৫), পিতা- মৃত ইউসুফ আলী, গ্রাম- গদ্দ গহিরা, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

৮। মজিবুল ইসলাম (৪০), পিতা- মৃত আব্দুল মান্নান, গ্রাম- গহিরা, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম।

 

গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত ইয়াবার মালিক মোঃ ইউসুফ (৪৫), গ্রাম- মুরালী, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম। ইতিপূর্বে তারা ইয়াবার বেশ কয়েকটি চালান খালাস করেছে বলে স্বীকার করে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের আনুমানিক মূল্য ২৫ কোটি টাকা। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *