মো.নাইম তালুকদার : সুনামগঞ্জ :
ভোর হতে না হতেই কান্তি -কোদাল ও বিভিন্ন সরঞ্জাম আদি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে কচু শাকের মুকির খোঁজে প্রতিনিয়ত ছুটে বেড়ায় স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা । যে সময়টি ছিল তাদের জন্য শিক্ষা গ্রহন করাম সময়, কিন্তু পেটের খিদার তাড়নায় তারা স্কুল যাওয়া বাদ দিয়ে ঝুড়ি শাবাল ও তালা-ভাটি নিয়ে ঘুরছে মাঠে-মাঠে কুচু শাকের মুকির খোজে। কচু শাকের ঝুপ দেখলেই দলবেধে ঝাপিয়ে পরে তারা। কার আগে কে গর্তখূড়ে মুকি সংগ্রহ করবে কত বেশি, এনিয়ে হাওর পাড়ে এক মুকি তুলার এক প্রতিযোগিতা শুরু করে দিয়েছে ১০/১২ জন বালক,ও ২/৩ জন বালিকা।
আবার তারা সন্ধ্যার আগেই মুকির বস্তা বন্ধি করে স্হানীয় পাথারিয়া বাজারে দিকে ছুটে যান সেখানে কেজি হিসাব বিক্রি করে চাল ডাল নিয়ে আপন নীড়ে ফিরে আসেন । জীবন জিবীকার তাগিদে অল্প বয়ষে বিশাল হাওর পাড়ে মুকি তুলেতে ভয়-ভীতি কাছে হার মানছে না তারা। মুকি সংগ্রহ করতে আসা
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মো.সাগর খান(১৩) জানান, আমরার কোন কিছু নাই(নেই) খাওয়ার মতো। আমার আব্বা ও কাজ কাম করতে পারই ( পারেন) না ঠিক মতে,গতবার (গতবছর) পানি তলিয়ে নিয়ে গেছে আমাদের ক্ষেত (জমি), গত কয়েকদিন আগে মাছ ধরাত যাইতাম (ধরতে যেতাম) তা বেইচ্ছা ( বিক্রি করে) আমরা পরিবার চলত, এখন আর মাছ ধরতে পারি না তাই মুখি তুইলা (বেচি) । তাকে স্কুলের পড়া শুনা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে, প্রতি উত্তরে জানায়, আমি অইবার (এবার) কেলাস (ক্লাস) পাইভে (পঞ্চম) শ্রেনীতে উঠছি (উঠেছি) এখন মুখি তুলি তাই আর স্কুলে যাইনা।
দর্গাপাশা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে রিমন আহমেদ (১১) ও দূর্গাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র সিফত মিয়ার ছেলে শাহীনূর রহমান(১২) জানান,আমরা আগে হামুক (শামুক) তুলতাম। পানি কমে যাওয়ার তাই হামুক (শামুক) পাই না। কোন বড় কাজে যাইতে পারিনা। আনা কষ্টে ( বিনা) কষ্টে মুখি তুলি। বাড়ীতে কিছু নেই আমার খাইবার (খাওয়ার)। এব্যাপারে ঠাকুরভোগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ও দর্গাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.নুরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি, মুঠোফোন এ তিনি জানান, শাহীনূর বহু আগে আমাদের স্কুলের অনিমিয়ত ছাত্র ছিল, এখন আর স্কুলে আসে নাই।