দিল্লিতে গণধর্ষনের শিকার মার্কিন তরুণী || মেয়েরা একা এসো না !

বাংলার দর্পন ডটকম :

২৫ বছরের মার্কিন শিক্ষিকার খুব শখ ছিল ভারতে আসার। ভারতকে ভাল ভাবে ঘুরে দেখার। সেই শখ পূরণ করতে গিয়ে তাঁকে যে বিভীষিকা তাড়া করে বেড়াবে, তা তিনি কল্পনাই করতে পারেননি। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাঁর। যে আশা নিয়ে ভারতে আসা, সেই আশাই ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে কয়েক জন মানুষের লালসায়। তরুণীর অভিযোগ, ট্র্যাভেল এজেন্সি ও হোটেলের কয়েক জন কর্মী মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করে। তিনি ফের ভারতে ফিরে এসেছেন সুবিচারের আশায়। ২০১৬-র এপ্রিলের ঘটনা। মাঝে কেটে গিয়েছে ন’মাস।

ভারতে আসার আগে বার বার তরুণীকে তাঁর বাবা-মা, এমনকী তাঁর পরিচিতরাও সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, একা সফরে যাওয়াটা ঠিক হবে না। তাই সেই ঝুঁকিও নেননি। একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। সাল ২০১৫। এপ্রিলে ভারতে আসেন ওই মার্কিন তরুণী। আগরা ও জয়পুর-সহ বেশ কিছু জায়গা দেখার কথা ছিল। ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে সেই মতো চুক্তিও হয়েছিল। কনট প্লেসের একটি হোটেলে ওঠেন তিনি। তরুণীর অভিযোগ, ৮ ও ৯ এপ্রিল ওই হোটেলে ছিলেন। সেই সময় ট্র্যাভেল এজেন্সির দুই কর্মী এবং হোটেলের দুই কর্মী পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে তাঁকে দু’দিন ধরে ধর্ষণ করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, যখন ঘোর কাটত, উঠে দেখতেন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দাগ পড়ে রয়েছে। কী ভাবে এই দাগ এল তা বুঝে উঠতে পারেননি বলে দাবি করেন তরুণী। পরে যখন সম্বিত্ ফেরে তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তিনি ফিরে গিয়েছিলেন আমেরিকায়। তবে তিনি যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন এ বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগও দায়ের করেননি। পরে নিজের দেশে বসেই একটি এনজিও-র সহযোগিতায় গোটা বিষয়টি জানিয়ে দিল্লি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

 

তরুণীর অভিযোগ, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ঠিকই, কিন্তু কতটা সঠিক ব্যবস্থা নেবে সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। পাশাপাশি, তিনি এটাও বলেন, “আশা করি পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে যাতে অপরাধীরা শাস্তি পায়। যারা এই জঘন্য অপরাধ করছে, আর যারা সেই অপরাধীদের মদত জোগাচ্ছে তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত। তা হলে আমার মতো আরও অনেককেই এই ঘটনার শিকার হতে হবে না ভবিষ্যতে।” তিনি আরও বলেন, “আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন ভারতে ঘুরতে যাওয়ার কথা, বলব যথেষ্ট সতর্ক হয়েই সেখানে ঘুরতে যান। আর একা কখনওই যাবেন না।” তবে দেশ হিসাবে ভারতের প্রতি তাঁর যে ভালবাসা এতটুকুও কমেনি, সেটাও জানিয়েছেন তরুণী।

ঘটনার ৯ মাস পর দিল্লি পুলিশের তলবে তরুণী আবার ভারতে এসেছেন। তাঁর জবানবন্দি দিতে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে।

 

সুত্র- অানন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *