কুমিল্লায় স্ত্রীর লাশ দেখতে এসে স্বামীর মৃত্যু ! – বাংলারদর্পন

আব্দুর রহিম বাবলু :
স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে আসার জন্য রওয়ানা দেন স্বামী। স্ত্রীর মরদেহ দেখার আগেই বাড়ির পাশে এসেই স্বামী জ্ঞান হারানোর পর মারা গেছেন। মঙ্গলবার ভোর রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বারের বামনিশাইর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ৭ মাস আগে প্রেম করে তারা বিয়ে করে। তারা দুই জন পারিবারিক সূত্রে চাচাতো ভাই বোন সম্পর্ক।

মারা যাওয়া দুই জন হলেন দেবিদ্বার উপজেলার ৭ নম্বর এলাহাবাদ ইউনিয়নের বামনিশাইর গ্রামের সাবেক এমএনএ আবদুল আজিজ খানের বাড়ির মোখলেছুর রহমানের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৮) ও তাঁর স্ত্রী একই বাড়ির হাবিবুর রহমানের মেয়ে রিফা আক্তার (২৪)।

জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্য রাতে রিফা আক্তার নিজ বাড়ির পুকুরের শানের ঘাটলায় বসে মোবাইল ফোনে ঢাকায় চাকুরীরত স্বামী আনোয়ারের সঙ্গে কথা বলা অবস্থায় জটিল মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যান। বাড়ির লোকজন দেখে পুকুর হতে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
স্ত্রীর এ মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে স্বামী আনোয়ার হোসেন রাতেই ঢাকার রামপুরা থেকেদেবিদ্বারের বামনিশাইরের নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত তিনটায় তিনি বাড়ির কাছাকাছি এসে পৌঁছান। এ সময় তিনি জোরে (রিফা) স্ত্রীর নাম ধরে চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে পথচারীরা তার লাশ দেখে বাড়িতে খবর দেন। স্ত্রী ও স্বামীর এ মৃত্যুর সংবাদ শুনে মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসী বামনিশাইর গ্রামের আজিজ খানের বাড়িতে ভিড় জমায়।

এ ঘটনা নিয়ে এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যে কানাঘুষা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় মঙ্গলবার সকালে দেবিদ্বার থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ দুটো ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
আনোয়ারের বড় বোন শিউলী বেগম জানান, তাঁর ভাই ঢাকার রামপুরার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে তাঁর ভাই বাড়িতে আসার পথে বাড়ির পাশের সড়কেই লোকজনের শোর চিৎকার শুনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পড়ে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সিদ্ধান্তেই স্বামী- স্ত্রীর লাশ দুটো ময়নাতদন্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *