সৈয়দ মনির অাহমদ >>> ২০০১ সালের ১ অক্টোবর কারচুপির নির্বাচনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ অাওয়ামীলীগকে নাস্তানাবুদ করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছিল স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি জামায়াত ও বিএনপি।
সন্ধায় কথিত লতিফুর রহমান মার্কা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনা হলে দেশ ব্যাপী অা’লীগ তথা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তিকে চিরতরে বিলীন করার মিশন শুরু হয়। অা’লীগের দলীয় হিসেব মতে সারাদেশে ৫০ হাজার নেতাকর্মী খুন, লক্ষাধিক পঙ্গু, গুম, অপহরনের শিকার হয়। ফেনীর সোনাগাজীতে ৫৪ জন নেতাকর্মী খুন হয়। পঙ্গু ও অপহরনের শিকার হয় সহস্রাধিক নেতাকর্মী।
২০০২ সালের ১৬ জানুয়ারী অপহৃত হন সোনাগাজীর অামিরাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের তৎকালীন প্রচার সম্পাদক, বর্তমানে ৪নং ওয়ার্ড অা’লীগের সহ সাধারন সম্পাদক শেখ নুর অালম। তিনি আহম্মদ গ্রামের ওসমান অালী হাজী বাড়ির মৃত অাবদুল মান্নান মুনাফের ছেলে।
তিনি জানান, সেদিন বিকাল ৫টায় দাবীকৃত চাঁদা অাংশিক দেয়ায় ইউনিয়ন যুবদলের তৎকালিন সভাপতি মঈন উদ্দিন ও নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে ১২/১৫ জন সশস্ত্র যুবদল ক্যাডার নিজ বাড়ীর সামনে থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় এবং বাড়ীতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুট করে। দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপন দেয়ার পরও উপর্যপুরি কুপিয়ে এবং বন্ধুক দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। রাত অানুমানিক ১২ টায় মৃত ভেবে পাশের গ্রামে জঙ্গলে ফেলে যায়।
সেখান থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যায়। তৎকালিন অামিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ও অা’লীগ নেতা মফিজুর রহমান বিষয়টি সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করলে তিনি চিকিৎসার দায়ীত্ব নেন।কিন্তু যোগাযোগ রক্ষা না হওয়ায় চিকিৎসার খরচ পাননি। পৈত্রিক ২৮ শতক জমি বিক্রি করে ৬মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ্য হন। সুস্থ্য হলেও পঙ্গুত্বের কারনে তিনি অধ্যবধি বেকার হিসেবে দিনাতিপাত করছেন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে প্রানের দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলেও দলের কোন নেতা, জনপ্রতিনিধি কর্তৃক বা সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা তিনি পাননি। বৃদ্ধা মা, কলেজ পড়ুয়া ২ মেয়ে ও স্কুল পড়ুয়া ১ ছেলে সহ ৭ জনের পরিবার, খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। ৮ শতক ভিটাবাড়ী, জরাজীর্ণ ঘর ছাড়া কিছুই নেই। ঘটনার সময় কোন অভিযোগ পর্যন্ত দিতে পারেননি এবং ২০০৯ সালে সরকারি নির্দেশের পরও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ে মামলা দিতে পারেননি।
বিভিন্ন সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাদের পিছে পিছে ধরনা দিয়েও কোন অার্থিক সুবিধা পাননি এক সময়ের শ্লোগানবয় বঙ্গবন্ধুর নিবেদিত সৈনিক নুর অালম।
অামিরাবাদ ইউনিয়ন অা’লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান ভুঞা জানান, ফেনীতে গত ৮ বছরে নুর অালমের মত ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের কোন মুল্যায়ন করা হয়নি । ব্যাক্তিগত বলয় মজবুত করতে সুবিধাভুগী ও অনুপ্রবেশকারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
পরিবারের দুরাবস্থা থেকে উত্তরণ এবং চিহ্নিত ওইসব সন্ত্রাসীদের অাইনের আওতায় অানতে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছে অা’লীগ নেতা শেখ নুর অালম।