নিজস্ব প্রতিবেদক |
এডিস মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়া মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়ী করে ঢাকার দুই মেয়রকে লাল কার্ড দেখালেন নাগরিকেরা। তাঁরা রাজধানীর জলাবদ্ধতা বাড়ার পেছনেও মেয়রদের ব্যর্থতাকেই সামনে আনেন।
গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধন থেকে ‘লেখক-শিল্পী-ছাত্র-শিক্ষক-সাংবাদিক ও নাগরিকবৃন্দ’ ব্যানারে দুই মেয়রকে লাল কার্ড দেখানো হয়। তাঁরা ১০ মিনিট সময় ধরে মেয়রদের উদ্দেশে লাল কার্ড উঁচিয়ে রাখেন।
তবে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা এ-ও বলেন, এই লাল কার্ড মানে দুই মেয়রকে বয়কট করা নয়, বরং তাঁদের কাজের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো। এটি একটি সতর্কবার্তা। তবে, মশা নিধনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নিলে সিটি করপোরেশনের কার্যালয়ে গিয়ে আবারও লাল কার্ড দেখিয়ে আসার ঘোষণা দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, নাগরিকেরা এত বোকা নন যে, তাঁরা মেয়রদের বলবেন বাসায় এসে মশারি টানিয়ে দিতে। তাঁরা ট্যাক্সের টাকা দিয়ে মেয়রদের মশা নিধনের দায়িত্ব দিয়েছেন, সেটা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আপনারা নৌকায় ভরসা রাখতে বলছেন। সত্যিই এখন আমাদের ঢাকার রাস্তায় চলতে নৌকায় ভরসা রাখা ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শরিফুজ্জামান বলেন, সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতার কারণে যে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব, তাতে মানুষের জীবনীশক্তি কমে যাচ্ছে। আবার এই শহরে বৃষ্টি হলে রাজারবাগে নৌকা চলে। এরপরও মেয়ররা লজ্জিত নন। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রকে কথায় কথায় গুলশান-বনানীর উদাহরণ না দেওয়ার আহ্বান জানান।
ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘ঢাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ঢাকার দুই নগর পিতার। কিন্তু তাঁরা তা পালন না করে জনগণকে উপহাস করে বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা তাঁদের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য চাই না। আমরা চাই তাঁরা নগরবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দেবেন। জলাবদ্ধতা দূর করে জীবনযাত্রা সহজ করবেন। এটা করতে ব্যর্থ হলে এরপর জনগণ শুধু লাল কার্ড নয়, আপনাদের বিদায় করতে উদ্যোগী হবেন।’
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বাবু ভূঁইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম, লেখক-প্রকাশক ইফতেখার আহমেদ, ব্লগার আরিফ জেবতিক, বেসরকারি উন্নয়নকর্মী জাকিয়া শিশির, লীনা পারভীন, আকরামুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি খান আসাদুজ্জামান।