স্ত্রীকে মারধর করে ফুটপাত দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নেবার সময় জনতা কতৃক আটক পুলিশ স্বামী!

বাংলার দর্পন ডটকম :

 

স্ত্রীর নাম নীলিমা সুলতানা। তাদের বাড়ি নরসিংদীর বেলাবো থানায়। স্ত্রীকে পেটানোর অভিযোগে পুলিশের এক কনস্টেবলকে থানায় সোপর্দ করেছেন কয়েকজন পথচারী। ওই কনস্টেবল বিকেল পাঁচটার দিকে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের বিপরীত পাশে তাঁর স্ত্রীকে মারধর করে ফুটপাত দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই এখন কলাবাগান থানার হেফাজতে রয়েছেন।

ওই কনস্টেবলের নাম রুহুল আমিন। টুরিস্ট পুলিশে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে কলাবাগান থানার পুলিশ। তাঁর স্ত্রীর নাম নীলিমা সুলতানা। তাদের বাড়ি নরসিংদীর বেলাবো থানায়। স্ত্রীকে ওই কনস্টেবলের পেটানোর একটি ভিডিও ও কিছু স্থিরচিত্র বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে ফেসবুকে দেন বেনজির আহমেদ রায়হান নামে এক ব্যক্তি।

সেখানে দেখা যায়, রুহুল আমিন তার স্ত্রী নীলিমা সুলতানাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আর নীলিমা চিৎকার করছেন। যে ব্যক্তিটি ভিডিওটি করেছেন তিনি তাদের থামালে নীলিমা তাঁর পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখাতে থাকেন আর তাঁকে বাঁচানোর আকুতি জানাতে থাকেন।

বেনজির আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অফিস শেষ করে বিকেল পাঁচটার দিকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে তিনি বাসায় যাচ্ছিলেন। তখন সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে ঘটনাটি দেখেন। খেয়াল করে দেখলেন কেউ এগিয়ে যাচ্ছে না। ততক্ষণে রিকশা কিছু দূর এগিয়ে যায়। তিনি রিকশাটি ঘুরিয়ে আবার আসেন। ওই লোককে থামতে বলেন এবং ভিডিও করা শুরু করেন।

বেনজির বলেন, কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি তার পা জড়িয়ে ধরে। তাকে বাঁচাতে বলে। পুলিশে খবর দিতে বলে। তার এগিয়ে আসা দেখে ততক্ষণে আরও কয়েকজন এগিয়ে আসে। তারাও কথা বলে। ইন্টারনেট ঘেঁটে তিনি কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিলে ১৫-২০ মিনিট পর থানা থেকে কয়েকজন পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।

নীলিমার বড় ভাই আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ঈদের আগেরদিন তাঁর বোনের শ্বশুর-শাশুড়ি এবং জামাই মিলে তাকে বেধড়ক মারধর করে। এরপর তাঁরা বোনকে নিয়ে আসার জন্য ওই বাড়িতে গেলে তাকে আসতে দেয়নি। বেলাবো থানা থেকে পুলিশ নিয়ে গেলেও কোন কাজ হয়নি।

আনোয়ার জানান, সাত বোনের মধ্যে নীলিমাই সবার ছোট। ‘বোনটার কপালটাই খারাপ ছিল’—বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন আনোয়ার। তিনি জানান, কলাবাগান থানা থেকে যোগাযোগ করার পর বাড়ি থেকে দুজনকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।

কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর চন্দ্র সূত্রধর বলেন, রুহুল দাবি করেছেন তিনি নীলিমাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে এসেছিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী চিৎকার চেঁচামেচি করলে লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেন। তবে মেয়েটির শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে। তাদের পারিবারিক অনেক সমস্যা রয়েছে বলেও জানা গেছে। তবে এসবের কিছুই কলাবাগান থানায় না হওয়ায় তাদের নরসিংদীর বেলাবো থানায় হস্তান্তর করা হবে।

পথচারি জানান, কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি তার পা জড়িয়ে ধরে। তাকে বাঁচাতে বলে। পুলিশে খবর দিতে বলে। তার এগিয়ে আসা দেখে ততক্ষণে আরও কয়েকজন এগিয়ে আসে। তারাও কথা বলে। মেয়েটির হাত ধরে তখনো টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছিলেন পুলিশ স্বামী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *