লাঙ্গলকোট প্রতিনিধি : স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাকারী ও মুসলিম লীগের কর্মীখ্যাত কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের ঢালুয়া গ্রামের সামসুল হক কালেরবিবর্তনে এখন মাদক সাম্রাজ্যের ডন হিসেবে পরিচিত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আওয়ামীলীগের নেতা,সাবেক সংসদ সদস্য ও বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন ভূইয়ার ঘোর বিরোধীতা করেছিলেন সামসুল হক। সামসুল হক ৪ ভাই ৩ বোনের সবার বড়। একসময় মুসলিমলীগ করা সামসুল হক এখন বিএনপি করলেও ক্ষনে ক্ষনে রুপ পরিবর্তন করেন। গলা ফাটিয়ে আওয়ামীলীগের মিছিল মিটিংয়েও যান তিনি। নেতাদের নামে স্লোগান ও বক্তৃতা দেন। কিন্তু মনে আর রাতের রাজ্য লিডার সাজেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে মাদক ব্যবসা ও কুমিল্লা জেলা দক্ষিনের মাদকের ডন হিসেবে ও পরিচিত তিনি। তাকে এক নামে অত্রাঞ্চলের মানুষ চিনে ও জানে। তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রাম সরফাতলী গ্রামের আজিজ মিয়ার মেয়ে ও মোবারকের বোন পাখিকে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে ৪ ছেলে ২ ছেলে জন্মগ্রহণ করেন। ছেলে হোরন ওরফে খোরশেদ, হরান,কালু, ছইয়া ও বাবার পথ অনুসরণ করে মাদকের ব্যবসা ও সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন। ইতিমধ্যে তার ছেলে সবগুলোই জেল খেটেছেন। তাদের ৪ জনের স্ত্রী ও থানা হাজত থেকে জেলাহাজতে গিয়েছেন। জেলখাটা গর্বিত এই পরিবারটিকে কখনো দমনের চিন্তা করেননি কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারের পক্ষ হতে। মাদক স¤্রাট সামসুল হকের স্ত্রী পাখিও মাদকের ব্যবসায় জড়িত। তাকে ইতিমধ্যে নাঙ্গলকোট থানার পুলিশ এসে তার গোপন জায়গায় মাদকের ডিব্বা পেয়েছেন। সামসুল হক ঢালুয়া বাজার রাত ১০ টা থেকে সকাল ভোর ৬ টা পর্যন্ত ডিউটি করে। এই দীর্ঘ ৮ ঘন্টা নাইট্ ডিউ্িট করতে গিয়ে মাদক ও নারী সাপ্লাই দিয়ে আসছেন। এতে করে অসামাজিক কাজের মানুষগুলো রাতের কাজ খারাপ কাজ সারতে চলে আসেন ঢালুয়াতে। এই ক্ষেত্রে ঢালুয়ার বদনাম রয়েছে। যা রাজাকার আল শামস ও মুসলিমলীগ খ্যাত সামসুল হকের বাড়ি নাকি পশ্চিম পাকিস্তানে আছে। তবে সে মাদক ব্যবসা করে বেশ কিছু দিন আগে ৬ লাখ টাকা দিয়ে একটি জায়গা ক্রয় করেছেন। গ্রামের সুন্দরী মেয়ে ও বধূরা ওরাতের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যক্তি। রাত ১০ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত ঢালুয়ার উপর দিয়ে কোন গাড়ি গেলে সামসুল হককে ট্যাক্স ও দিতে হয়। ট্যাক্স বা কম-বেশ টাকা না দিলে গাড়ি যেতে দিতো না। আর গাড়িতে অচেনা বা দূর থেকে আসা সুন্দরী মহিলা থাকলে তো কথাই নেই। সামসুল হকের আস্তানায় নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে উপস্থিত থাকা মাদক ও খারাপ কাজের মানুষের কাজে ব্যবহার করা হতো। বারবার জেলখাটা একটি পরিবারের প্রায় ১৫ জন লোকের গবির্ত মাদকস¤্রাট সামসুল হকের বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। নাম ওয়াস্তে নামাজ পড়–য়া সামসুল হকের মাথার টুপির ভিতরে থাকে ইয়াবা। জানা গেছে, সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে সরকার যখন হাডলাইনে। তখনো সামসুল হক এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন হরদমে।তবে তিনি ঢাকাসহ সারাদেশের ৩২টি জেলার সীমান্তে থাকা ভারত থেকে আসা মাদক সরাসরি নাঙ্গলকোটের ঢালূয়াতে সামসুল হকের বাসায় আসায় কম দামে পাওয়া যায়। সামসুল হক ছাড়া ও আলাউদ্দিন, কামাল মেম্বার, মনির, জিল্লুর ,ঝন্টু ,মিলন, জালাল ও নিয়ন্ত্রন করে। অবশ্য মনির এখন জেলে রয়েছেন। মাহফুজুর রহমান মেম্বার ও জড়িত আছেন। সামসুল হকের ২ ভাই ও মাদক সা¤্রাজ্য পরিচালনা করেন । তারা হলেন সকু, রফিক। সকু অবশ্য নিউজটি করার ২ দিন আগেও জেল খেটে এসেছেন। তার নামে রয়েছে ৬টি ওয়ারেন্ট। ১২টি মামলা।আবুল কাশেম ও এই ব্যবসায় জড়িত। সে এখন ঢাকাতে থাকেন। কবির পিতা মন্তু মিয়া, মাসুম মেম্বার, চা দোকানদার ফারুক,ফারুকের সাথে প্রবাসী স্ত্রীর সাথে পরকীয়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সকন মিয়া পিতা শেখ আহম্মদ, আনোয়ার হোসেন পিতা মোহছেন আলী, খোরশেদ পিতা জমির আলী, সেলিম পিতা হোসেন মিয়া মাদকের সাথে জড়িত আছেন। সিজিয়ারার ফারুক হোসেন, চালনা গ্রামে স্বপন, স্বপন মার্ডার কেসের আসামী ছিলো। জেলও খাটছে। হারস মিয়ার হত্যা মামলার আসামী মাদক স¤্রাট স্বপন। গ্রামের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ করে এই অনুসন্ধানী নিউজ তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ঘেটে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ( নাঙ্গলকোট থানা লাকসাম ও চৌদ্দগ্রাম থানার আওতায় থাকায়) চৌদ্দগ্রামের কাজী পরিবার ও সামসুল হককে দমন করতে পারে নি। চতুর ও চালাক প্রকৃতির মানুষ হিসেবে ও পরিচিত সএব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাছান ভূইয়া বাছির জানান- সারাদেশের মত ঢালুয়া ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত করতে সবার্ত্মক কাজ করছি।’
নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি:
সাবেক চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান হক জানান-গ্রামে এমন একটু আধটু খায় শুনেছি। কিন্তু কারা খায়,কারা কিনে আমি সঠিক জানি না।
ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব জানান- আমরা মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। যারা ব্যবসার সাথে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযান অব্যাহত আছে। আর যারা মাদক সেবন করছে তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হচ্ছে। ঢালুয়া যে পরিবারটির কথা বলা হচ্ছে সেই পরিবারের লোকজন কে আইনের আইনের আওতায় এনে চালান দিয়েছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমরা অভিযানে যাবো।
এদিকে ৯ মে মঙ্গলবার নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকারা ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের মাদক সেবন করা অবস্থায় ২ জনকে এবং ১০মে বুদবার রায়কোট ইউনিয়নের অলিপুর থেকে ১জনকে আটক করা হয়েছে।