অনিয়মে ডুবে আছে ১০ টাকার চাল! দ্বায়ী কারা?

মো: মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন:
সম্প্রতি গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে  জানা গেছে, রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাজারে দোতলা আবাসিক হোটেল, গাড়ি ও বাড়ির মালিক জনৈক ব্যক্তির নামে পর্যন্ত ১০ টাকা কেজি দামের চাল কেনার কার্ড ইস্যু হয়েছে!!
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি হিসেবে চাল দেয়ার সরকারি কর্মসূচি শুরুতে অনেক আশাসঞ্চার করেছিল। তবে নানামুখী অনিয়ম আর দুর্নীতির কবলে পড়ে পুরো প্রক্রিয়াই ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত নির্ধারিত মূল্যমানের চাল নিয়ে ধনীরা বাণিজ্য করছে। বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশিতে চাল বিক্রি হচ্ছে দেদার, যা থেকে লাভ গুনছে ধনীরা। শুরু থেকে ডিলার নিয়োগে অনিয়ম, সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়নে ব্যক্তি যোগাযোগ ও স্বজনপ্রীতির পাশাপাশি সীমাহীন দুর্নীতি পুরো প্রক্রিয়াকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। সম্প্রতি গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দেখা যাচ্ছে, ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে খুলনায় সহ অনেক জেলায় ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বস্তুত ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ুধা হবে নিরুদ্দেশ’— স্লোগান নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যে কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তার এমন করুণ পরিণতি কখনো কাম্য ছিল না। প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নে যথাযথ নিয়ম অনুসৃত হলে এ ধরনের দুরবস্থা দেখা দিত না। বিশেষ করে নীতিমালা উপো করে রাজশাহী, খুলনা ও ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডিলার নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি জনমনে হতাশার জন্ম দিয়েছে। এেেত্র অধিকাংশ কথিত ডিলারের যেমন বাজারে দোকান নেই, তেমনি কর্মসূচির চাল তারা পাচার করছেন বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের কাছে। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরা পড়ে জেলহাজতে গেছেন অনেক কথিত ডিলার। দেশের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে এ বিতরণের চাল পাচারকালে ট্রাক পর্যন্ত আটক করা হয়েছে। এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে সুবিধাভোগীর তালিকায় নাম তুলতে দুস্থদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০ থেকে ১২০ টাকা আদায় করা হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সেখানকার সরকারি গুদাম সিলগালা করার সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। বিষয়গুলো নজিরবিহীন ও দুঃখজনক। পরিস্থিতির গুরুত্ব আমলে নিয়ে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত, প্রতিবন্ধী শিশুর পরিবার ও বয়স্ক নারীদের এেেত্র অগ্রাধিকার দিতে হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত উপযুক্ত নীতিমালা মানতে সব ডিলারকে বাধ্য করতে হবে। এেেত্র অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে দরিদ্রদের বঞ্চিত করা হলে অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা ও উপযুক্ত শাস্তির উদ্যোগ নিতে হবে। কার্ড ও ডিলার নিয়োগে অনিয়মের মাধ্যমে গরিবের চাল বেচে ধনীদের পোয়াবারো হবে— এটা মেনে নেয়া যায় না।

  লেখকঃসাংবাদিক মো:  ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিদিন, সময়ের কন্ঠস্বর, চ্যানেল এস
০১৮২০৫২৪৬৫৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *