ফেনীতে চাঁদা না দেয়ায় হাসপাতালে তালা : চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীতে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শুসেন শীলকে প্রধান আসামী করে মামলা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) ফেনীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানাযায়, ফেনী ট্রাংক রোডস্থ বেসরকারি সেনসিভ হাসপাতালটি দীর্ঘ দিন যাবৎ পরিচালনা করে আসছেন জেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন জসিম।
সম্প্রতি শুসেন শীল ও তার সহযোগীরা জসিমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছিল। দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে শুসেনের অনুসারী ২০/২৫জন সশস্ত্র যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মী হাসপাতালে প্রবেশ করে হাসপাতালের চেয়ারম্যান জসিম ও ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুন নাহারকে খুঁজতে থাকে।
তাদেরকে না পেয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স, ডাক্তার ও কর্মচারিদের পিটিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। এসময় নারী নার্সদের কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি করেন। এক পর্যায়ে হাসপাতালের পরিচালক ফজলুল হক মুন্নাকে ভয়ভীতি হুমকি দিয়ে হাসপাতালের প্রধান ফটকের চাবি নিয়ে যায়। হাসপাতালের ক্যাশে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং পাঁচটি ব্যাংকের চেকবইসহ মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এছাড়া হাসপাতালের ক্যাবিনে এবং ওয়ার্ডে থাকা রোগীদের হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করে। রোগিরা নিজ উদ্যোগে এ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে মুর্মূর্ষ অবস্থায় হাসপাতাল ত্যাগ করে। হাসপাতালে কর্তব্যরতদের বের করে দিয়ে হাসপাতালের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় হামলাকারীরা ।
যাওয়ার সময় দাবীকৃত চাঁদা পরিশোধ না করলে হাসপাতালের তালা খোলার চেষ্টা করলে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও পরিচালককে গুলি করে হত্যা করবে এবং হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসাসীগণ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলে যায়। পরদিন ১১ফেব্রæয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের সাইনবোর্ডটিও খুলে নিয়ে যায় যুবলীগ কর্মীরা।
এ ঘটনায় শুসেন শীলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন হাসপাতালটির ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুন নাহার। মামলার অপর আসামীরা হলেন, সোনাগাজী উপজেলার গুণক গ্রামের আবদুর রবের ছেলে আবদুল আউয়াল সবুজ, ফেনী সদর উপজেলার বারাহিপুর গ্রামের এমরান হোসেনের ছেলে আবির হোসেন, মধ্যম ধলিয়া গ্রামের সামছুল করিম প্রকাশ কালা মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম, ইজ্জতপুর গ্রামের মৌলভী আবদুল আজিজের ছেলে আবদুল আউয়াল, সাড়াশিয়া গ্রামের তাজুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে আজাহার ও জালাল আহমেদ বধির ছেলে রাজিব আহমেদ ।
বাদীনী লুৎফুন নাহার জানান, দীর্ঘ দিন যাবৎ সুনামের সাথে সেনসিভ হাসপাতালটি পরিচালনা করে আসছেন।
সম্প্রতি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শুসেন শীল ও তার সহযোগী পৌর আ’লীগ নেতা আবদুল আউয়াল সবুজ ও যুবলীগ নেতা আবির ৫লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা না দেয়ায় হাসপাতালে দফায় দফায় হামলা ভাংচুর করেছে ।
সবশেষ গত ১১ফেব্রুয়ারি রাতে হাসপাতালে তালা লাগিয়েছে তারা। থানায় মামলা না নেয়ায় ১৫ ফেব্রæয়ারি ফেনীর সিনিয়র জুড়িয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে মামলা দায়ের করি। তিনি আরো বলেন হাসপাতালে রক্ষিত প্রায় এক কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম চুরি, ল্যাবে রোগিদের স্যম্পল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জসিম বলেন এর আগে ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট শুসেন ও সবুজ পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছিল। পরবর্তীতের স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয়।
ফেনীর সিনিয়র জুড়িয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ব্যাঞ্চ সহকারি জসিম উদ্দিন জানান, দীর্ঘ শুনানী শেষে মঙ্গলবার রাতে অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) ফেনীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ব্যপারে ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন শীল বলেন , ভাড়া না দেয়ায় ঘর মালিক তাদের ঘর উদ্ধার করেছে । এতে তাকে মামলায় জড়ানো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনৌদিত ।
Related News

নোয়াখালীতে জামায়াতের ৪৫ নেতাকর্মিকে কারাগারে প্রেরণ
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সদরে একটি স্কুল থেকে গ্রেফতারকৃত জামায়াত ইসলামীর ৪৫ নেতাকর্মিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।Read More

কর ফাঁকি দেয়ায় ফেনীর ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা
ফেনী : কর ফাঁকি দেয়ায় ফেনীর ১০টি ব্যাবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট বিভাগ। প্রতিষ্ঠানগুলোRead More