কিশোরগঞ্জে মৌসুমী ও সাকিলার বিদ্যা নীড়ে জ্ঞানের আলো দেখছে শতাধিক পথশিশু

 

এইচ এম সাইফুল্লাহ্, কিশোরগঞ্জ থেকেঃ পথশিশু ! দেখতেই কেমন ঘৃনা লাগে। সারাদিন আবর্জনা মাখা জামা নিয়ে ভদ্র লোকদের কাছে কাছে হাত পেতে ধমক খাওয়া যাদের প্রতিদিনের রুটিন। নুংরা জামা কাপড় দেখে সবাই তাড়িয়ে দেয় পথ শিশুদের। কিন্তু সেই পথ শিশুদের হাতে কলম তুলে দিলেন কিশোরগঞ্জের দুই অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী। নিয়েছেন নুংরা শিশুদের বুকে টেনে। আদর, সময়, শ্রম দিয়ে শহরের পথ শিশুদের হাতে কলম,খাতা, বই তুলে দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সুবিধা বঞ্চিত পথশিশুদের জ্ঞানের আলোতে প্রবেশ করতে। এতে তারা সাফল্যও পেয়েছেন।

ইতিমধ্য কিশোরগঞ্জ শহরের প্রায় শতাধিক পথশিশু তাদের সেবা পাচ্ছে। তাদের প্রতিষ্টানের নাম রেখেছেন বিদ্যানীড়। কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারী কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী তাড়াইল উপজেলার মৌসুমী ও বাজিতপুরের সাকিলা দুজন মিলেই প্রতিষ্টিত করেন বিদ্যানীড়।

তাদের সাথে কথা বলেলে মৌসুমি জানান, যে শহরে পথশিশুদের দেখে আমাদের খুব খারাপ লাগতো। নিজের হাতে নগত টাকা নেই যে তাদের কে টাকা দিয়ে সুন্দর জীবন দেব। তাই নিজেদের পড়াশোনার পাশাপশি তাদের কে শহরের পথশিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আমি আর সাকিলা মিলে বিদ্যানীড় প্রতিষ্টিত করি। পরে শুরু করি একটা মেয়ে দিয়ে বৈকালিক স্কুল “বিদ্যানীড়” কার্যক্রম। তারপর অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আজ আমরা তিলে তিলে গড়ে তুলা তিনটি শাখায় প্রায় ১২০ জন ছাত্র ছাত্রী সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি কয়েক জন ছাত্র ছাত্রী যাদের পড়ার খরচও আমরা যথাসাধ্য বহন করার চেষ্টা করছি।

ইতিমধ্যে বিদ্যানীড়ের তিনটি শাখাও খুলেছেন বলে মৌসুমী জানান, শাখাগুলো হল ১) হারুয়া সজিব বেকারি গলি, ২) হারুয়া নিরালা গলি ও ৩) কানিকাটা রেল লাইন সংলগ্ন বড় বাড়ির সামনে।

তিনি আরো জানান, আমাদের এসব কাজে কর্মে আগ্রহী হয়ে এখন তাদের পাশে এসে দাঁরিয়েছে আরও কিছু কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী।এদের মধ্য হেনা,সোয়েব,মৃদুল,আনিকা,প্রিয়া উল্লেখযোগ্য।

তারা পথশিশুদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে বাচ্চাদের খাতা, কলম, বইয়ের পাশাপাশি কিছুদিন পরপর পরিক্ষা নিয়ে যারা ভাল রেজাল্ট করে তাদের হাতে দেওয়া হয় কিছু পুরস্কার। তাদের আগ্রহী করার জন্য নিয়মিত দেওয়া হয় কিছু চকলেট বা কিছু খাবার। আর এসবের জন্য তাদের সার্বিক ও আর্থিক সহায়তা করেন, তন্ময় শেখ রাজন নামের একজন প্রবাসী।

এলাকাবাসীর সহযোগীতায় বিদ্যা নীড় দুইটা শাখায় দুটি ঘর পেয়েছে। আর একটি শাখায় ক্লাস নেওয়া হয় বাহিরে। যেগুলো পেয়েছে সে ঘর দুটিও ছোট হওয়াতে পড়াতে একটু সমস্যা হয়। তারা চয় এলাকাবাসী বা সমাজের বৃত্তবান মানুষ যদি বিদ্যা নীড়ের পাশে থাকে তাহলে তারা কিশোরগঞ্জের প্রতিটি এলাকায় একটা করে স্কুল দিতে পারব বলে মৌসুমী, সাকিলার বিশ্বাস। এছাড়া এটা কে গ্রাম ভিত্তিক নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে বলে পরিচালক মৌসুমী জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *