স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে ভোট কারচুপির
অভিযোগ উঠেছে। এ মর্মে মঙ্গলবার ওই ওয়ার্ডের পরাজিত পাঁচ জন মেম্বর সদস্য পদের
প্রার্থীগন পূনরায় ভোট গ্রহনের দাবীতে কালীগঞ্জ নির্বাচন কমিশন বরাবর পৃথক
পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার নির্বাচনের ভোট গ্রহনের
পরদিন সোমবার ওই ওয়ার্ডের মোল্লাডাঙ্গা সরকারী প্রাইমারী স্কুল ভোট কেন্দ্র থেকে
ব্যালটের ৮ টি মুড়ি বই পুলিশ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের পাশর্^বর্তী কেন্দ্র
৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর সদস্য পদের এক প্রার্থীও অনুরুপভাবে ফলাফল কারচুপির অভিযোগ
এনেছেন।
ওই ওয়ার্ডের মেম্বর সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দিতাকারী মিলন হোসেন, নাছির
উদ্দিন,রাজিব আহম্মেদ, সোহাগ হুসাইন ও মাঝহারুল হান্নান লিটন নামে ৫ পরাজিত
প্রার্থী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ওই কেন্দ্রের অসাধু প্রিজাইডিং
অফিসার আবু সাইদ ভোটে কারচুপি করেছেন।
তিনি অপর মেম্বর সদস্য ফুটবল
প্রতিকের আবু জাফর আলীর নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে ব্যালট কারচুপির
মাধ্যমে তাকে বিজয়ী করান। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ভোটের পরদিন ওই
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুপুর ২ টার সময় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আবু
সাইদের রুমের ড্রয়ার খুললে ৮ টি কাটা ব্যালটের মুড়ি বই দেখতে পায়।
এ সময় তিনি বিষয়টি জনপ্রতিনিধি সহ সকলকে অবহিত করলে মেম্বর সদস্য প্রার্থীগন সেখানে
হাজির হন। এর কিছু সময় পরই সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার আবু সাইদ
মটরসাইকেল নিয়ে কেন্দ্রে আসলে উৎসুক জনতা তাকে ঘেরাও করেন। এবং পরিস্থিতি
উতপ্ত হওয়াতে গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেয়। এরপর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মুড়ি
বই জব্দ ও প্রিজাইডিং অফিসারকে থানাতে নিয়ে আসেন। প্রার্থীদের অভিযোগ, ওই
প্রিজাইডিং অফিসার গোপনে ওই বই ব্যালটে আবু জাফরের ফুটবল প্রতিকে সীল
মেরে তাকে বিজয়ী করিয়েছেন। তারা এমন অনিয়মের সুষ্ট বিচার সহ পূনরায় ভোট
গ্রহনের দাবী জানান।
এদিকে অনুরুপভাবে ওই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর সদস্য
প্রার্থী কোরবান আলী তার কেন্দ্রে ভোটের ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পূণরায়
গননার দাবী করেছেন। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কালীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকের
সিনিয়র অফিসার আবু সাইদ জানান, ভোট শেষে তড়িঘড়ি করে ভোটের মালামাল বুঝ
করতে গিয়ে ৮ টি মুড়ি বই ভুল করে সেখানে রয়ে গিয়েছিল।
তবে, ঘুষ নিয়ে ভোটে অনিয়ম বা কারচুপির বিষয়টি সত্য নই। উক্ত ইউনিয়নের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং
অফিসার উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কৌশিক আহম্মেদ জানান, কয়েকজন প্রার্থী
অভিযোগপত্র নিয়ে তার কাছে এসেছিল। তাদের অভিযোগে দাবীর বিষয়টি আমাদের
সমাধান করার একতিয়ার নেই।
এমন বিষয়টি সমাধান করার মালিক একমাত্র ট্রাইবুনাল।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, ভোট গ্রহন শেষে
প্রিজাইডিং অফিসারের ভুলে মুড়ি বই গুলি সেখানে রয়ে গেছিল। পরে মুড়িবইগুলি
উদ্ধার হয়েছে। তবে, এর বাইরে কিছুই নয় বলে তিনি যোগ করেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, মুড়ি বই উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনি সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে বইগুলি জব্দ করে থানাতে এনেছেন। এ বিষয়ে ওইদিন থানাতে একটি জিডি করা হয়েছে।