তাহিরপুর সীমান্তের চোরাকারবারীরা বেপরোয়া: মালামালসহ গ্রেফতার ২

মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জ :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড়, চাঁনপুর, টেকেরঘাট, বালিয়াঘাট, চারাগাঁও ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের চোরাকারবারীরা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তারা তাদের দুই গডফাদারকে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে ওপেন কয়লা,পাথর, কাঠ, গাছ, চিনি, চাল, ভারতীয় রুপী, বিড়ি, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, অস্ত্র ও গরু পাচাঁর করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- আজ শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৮টায় বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে অভিযান চালিয়ে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার বটতলা গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে চোরাকারবারী শরীফ মিয়া (৩৮) কে ৩লক্ষ ভারতীয় রুপি, ১টি
মোটর সাইকেল, ১টি মোবাইল ও ২টি সিমকার্ডসহ গ্রেফতার করেছে বিজিবি।

অন্যদিকে লাউড়গড় সীমান্তে অভিযান চালিয়ে জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়গড় গ্রামের রেফাত আলীর ছেলে চোরাকারবারী আলী রাজ (২০) কে প্রায় ১৯হাজার টাকা মূল্যের ১৩বোতল মদসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরআগে টেকেরঘাট ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা এলাকা অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত চোরাকারবারী ইয়াবা কালাম ও লিটন মিয়াগংদের পাচাঁরকৃত ২লক্ষাধিক টাকা মূল্যের অবৈধ ৬৯ বোতল মদসহ ৩শ কেজি চোরাই কয়লা উদ্ধার করে। এছাড়া লাউড়গড় ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাকারবারী রফিকুল ইসলাম, জম্মত আলী, আলমগীর ও আবু বক্করগংদের পাচাঁরকৃত প্রায় ২লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৬টি গরু আটক করা হয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে টেকেরঘাট কোম্পানীর বিজিবি হাবিলদার ওলী উল্লাহ বাদী হয়ে, উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লালঘাট গ্রামের চিহ্নিত

চোরাকারবারী ইয়াবা ও মদ ব্যবসায়ী আবুল কালাম, তার সহযোগী একই
ইউনিয়নের লাকমা গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী লিটন মিয়া ও পাশর্^বর্তী বাদাঘাট
ইউনিয়নের লাউড়গড় গ্রামের শাজাহান কবিরকে আসামী করে থানায় ১টি মামলা
দায়ের করেছেন।

কিন্তু চোরাকারবারীদের নিয়ন্ত্রণকারী গডফাদার আব্দুর রাজ্জাক ও
হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া বরাবরের মতো রয়েগেছে ধরাছোয়ার বাহিরে। অথচ
এই দুই গডফাদার সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত চোরাচালান ও
চাঁদাবাজি করে ইতিমধ্যে হয়েগেছে কোটিপতি। চোরাকারবারীরা রাজস্ব
ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল
পাচাঁরের পর বিকাশের মাধ্যমে চাঁদার টাকা দুই গডফাদারকে দেয় বলে
এলাকাবাসী জানান।

এছাড়াও প্রতিদিনের মতো আজ শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার বালিয়াঘাট ও
চারাগাঁও সীমান্তের লাকমা, লালঘাট, বাঁশতলা, জঙ্গলবাড়ি ও এলসি পয়েন্ট এলাকা
দিয়ে পৃথক ভাবে চোরাকারবারী ইয়াবা কালাম, রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব,
লেংড়া জামাল, খোকন মিয়া, মানিক মিয়া, শহিদুল্লা, বাবুল মিয়া, একদিল
মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, আনোয়ার মিয়াগং ভারত থেকে কয়লা, কাঠ, মদ ও চাল পাচাঁর
করে ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে নদীপথে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার
মনতলা এলাকার আজিজ মিয়া ও সাজু মিয়ার ডিপুতে নিয়ে যায়। কিন্তু
এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি জানা গেছে।

এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক তসলিম এহসান
সাংবাদিকদের বলেন- পৃথক অভিযান চালিয়ে ভারতীয় রুপী, মদ, মোটর সাইকেল ও
অন্যান্য মালামালসহ আটককৃত ২ চোরাকারবারীকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সীমান্ত চোরাচালানের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *