উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাম্মদ সাবিনা ইয়াছমিন
অনলাইন প্রতিবেদক:
আপা’ বলে সম্বোধন করায় ক্ষেপে গেলেন তিনি । বললেন, এটা অফিসিয়াল ভাষা নয়, আপা না ডেকে মা ডাকেন। কুমিল্লার বুড়িচংয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাম্মদ সাবিনা ইয়াছমিন বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন ভরাসার বাজারের জামাল উদ্দিন (৪৫) নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ।
সোমবার (৪ অক্টোবর) ওই ইউএনও’র কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। পরদিন (মঙ্গলবার) ফেসবুকে এ নিয়ে পোস্ট দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। যদিও মঙ্গলবার রাত থেকে জামাল উদ্দিনের টাইমলাইনে সেই স্ট্যাটাসটি আর দেখা যাচ্ছে না। তবে এর স্ক্রিনশট এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা গ্রুপে ও প্রোফাইলে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ভাইরাল ওই পোস্টে ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন লিখেছিলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের সাধারণ জনগণ ‘স্যার’ বলতে হবে এটা কি বাধ্যতামূলক? এ বিষয়ে সরকারের কোনো আইন আছে কি? ফ্যাক্ট: বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ‘আপা’ বলার কারণে খুব রাগান্বিত হয়েছেন। এটা নাকি অফিস অ্যাড্রেস না। আপা না বলে ‘মা’ ডাকতাম। আমি লজ্জিত। দেশটা কি মগের মুল্লুক?’
ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিনের সঙ্গে এমন আচরণের কথা স্বীকার করেছেন ইউএনও সাবিনা ইয়াছমিন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘তিনি বয়স্ক লোক। আমাকে ‘আপু’ ডাকায় তাকে বলেছি, ‘আপনি আমার বাবার বয়সী, ‘মা’ ডাকেন’। বয়স্ক লোকে ‘মা’ ডাকবে এটা স্বাভাবিক। আপু ডাকলে বুঝতে হবে তার চরিত্রে সমস্যা আছে। যার এক পা কবরে চলে গেছে, সে আমাকে আপু ডাকলে অবশ্যই আমার আপত্তি আছে।’
বিষয়টি নিয়ে বুড়িচংসহ দেশব্যাপী আলোচিত হলে নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মির হোসেন মিঠুকে ইউএনও কার্যালয় থেকে জামাল উদ্দিনের কাছে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই জামাল উদ্দিনের পোস্টটি দেখা যাচ্ছে না। তবে পোস্টটি ডিলিট না করে অনলি মি করে রেখেছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জামাল উদ্দিন।
এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘সোমবার দুপুরে আমার এক আত্মীয়ের জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য ইউএনও কার্যালয়ে যাই। স্যার সম্বোধন করে ওনার সঙ্গে আমার কথা শুরু হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে অপ্রত্যাশিতভাবে আমার মুখ থেকে আপা শব্দটি বের হয়। এ সময় তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ‘এটা তো অফিসিয়াল ভাষা না। তাহলে আপা না ডেকে মা ডাকেন’।
বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত। ঘটনার সময় কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। পরে মনক্ষণ্যু হয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই। এ নিয়ে হইচই বেধে যাওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাকে পোস্টটি ডিলিট করে দিতে বলা হয়। তাদের কথা রেখেছি। ডিলিট না করে অবশ্য হাইড করে রেখেছি।’
রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনা সত্য। স্যার না বলায় ইউএনও ক্ষেপে যান।’